ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জামালপুরে বিসিবি সদস্যের সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ২৩:৪৩, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

জামালপুরে বিসিবি সদস্যের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চিঠি ছিনতাইয়ের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য মির্জা জিল্লুর রহমান শিপন। জামালপুর প্রেসক্লাবে শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই চিঠি ছিনতাই মামলার আসামি ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানসহ তিনজনকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অপকর্মের অভিযোগ করেন। জানা গেছে, বিসিবি থেকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের নামে সোমবার আসা বিসিবি’র সদস্য মনোনয়ন বিষয়ের ওই চিঠিটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানসহ জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার তিনজনকে আসামি করে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ আজ শুক্রবার পর্যন্ত ওই চিঠিটিও উদ্ধার করতে পারেনি এবং একজন আসামিকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য মির্জা জিল্লুর রহমান শিপন সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান গত প্রায় চার বছর ধরে জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রমকে স্থবির করে রেখেছেন। ২০১৪ সালের পর থেকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ব্যবস্থাপনায় কোনো খেলা অনুষ্ঠিত হয় না। চার বছরে ক্রীড়া সংস্থার ফান্ড থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, যেখানে কোনো খেলাই হয় না। সেখানে এতো এতো টাকা কোথায় খরচ হলো। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ এই তিনজনের যেকোনো দুই জনের স্বাক্ষরে ক্রীড়া সংস্থার টাকা ব্যাংক থেকে তোলা যায়। এই সুযোগ নিয়ে আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান ক্রীড়া সংস্থা কোনো কাজ না করেই টাকা তোলে খরচ করে যাচ্ছেন। জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অডিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হলেও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়-ব্যয়ের হিসাবের অডিট করার ক্ষমতা তার নেই। অডিট করতে পারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃপক্ষ। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০০৭ সালে জামালপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন ঝাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এরপর আর প্রকাশ্যে গঠতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান বিগত দিনে চারটি নির্বাচন গোপনে অবৈধভাবে সম্পন্ন করেন। ক্রীড়াঙ্গনের ওইসব নির্বাচনের কোনো শিডিউল কাউকে জানানো হয়নি। তিনি জেলার ক্রীড়াঙ্গনকে নষ্ট করছেন। আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও এবারও তিনি গোপনে অবৈধ প্রক্রিয়ায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। এটি ছিল তথাকথিত নির্বাচন। ওই নির্বাচনের কোনো বৈধতা নেই। অপকৌশনের মাধ্যমে তিনি ময়মনসিংহ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থারও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, একই কায়দায় ও অপকৌশলের পথ বেছে নিয়ে আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান বিসিবির সদস্য মনোনয়ন চিঠি ও ফরম ছিনতাই করেছেন। তার বিরুদ্ধে সুন্দারবন কুয়িার সার্ভিসের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার মতো এবার তিনি বিসিবির সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্ত করতে শুরু করেছেন। তিনি মূলত ফুটবলার। বিসিবির সর্বশেষ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিসিবি’র বোর্ডে জেলা প্রতিনিধিদের ক্রিকেট সংগঠক বা ক্রিকেট খেলোয়াড় হতে হবে। এক কথায় অবৈধপন্থায় পদ দখল করে জেলার ক্রীড়া সংস্থা ও ক্রীড়াঙ্গনকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছেন। জামালপুর জেলার বিসিবির চিঠি ছিনতাইয়ের ঘটনাটি বিসিবি কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়েছেন। তারা আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানের কারসাজি বুঝতে পেরেছেন। বিসিবি কর্তৃপক্ষ পুনরায় জেলা প্রশাসকের কাছে ওই চিঠি ও ফরম পাঠাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
×