ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সেনা সদস্যকে ফাঁসাতে স্ত্রী দাবি

প্রকাশিত: ০১:৫৩, ১১ অক্টোবর ২০১৭

সেনা সদস্যকে ফাঁসাতে স্ত্রী দাবি

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ চাকরির পূর্বে ছাত্রজীবনের প্রেমিকাকে বিয়ে না করায় স্ত্রী দাবি করে আদালতে দায়ের করা মামলা খারিজ হওয়ায় এবার ক্ষিপ্ত হয়ে সেনাসদস্যর বিরুদ্ধে বিভিন্নস্থানে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এমনকি ওই সেনাসদস্যর পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভালুকশী ছোট ডুমুরিয়া গ্রামের। সূত্রমতে, চট্টগ্রাম সেনানিবাসে সিভিলিয়ানে কর্মরত সেনাসদস্য আশিষ কুমার দে গোবিন্দর বিরুদ্ধে ডাকযোগে পাঠানো লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সেনানিবাসের জিওসি প্রতারক মুক্তি জয়ধরকে স্বশরীরে হাজির হওয়ার কথা বললেও দীর্ঘদিনেও সে হাজির হয়নি। উল্টো সেনা সদস্যর পরিবারের কাছে বিভিন্ন মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে নানা হয়রানী শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গ্রামের মৃত জীবন দে’র স্ত্রী ও সেনা সদস্যর মা আশা দে বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে জানান, দীর্ঘদিন পূর্বে তার মেয়ে শিবানী দে’কে পাশ্ববর্তী সরবাড়ী গ্রামের মৃত কানাই লাল সরকারের পুত্র সেনা সদস্য দিলীপ সরকারের কাছে বিয়ে দেয়া হয়। বড় বোন শিবানীর শশুরবাড়িতে যাতায়াতের সুবাদে তার পুত্র আশীষ কুমার দে গোবিন্দর সাথে সরবাড়ী গ্রামের মৃত সনাতন জয়ধরের কন্যা মুক্তি জয়ধরের পরিচয়ের সূত্রধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ২০ মার্চ গোবিন্দ সেনা বাহিনীতে যোগদান করে। চাকরি নেয়ার পর প্রেমের সম্পর্ককে স্থায়ী করতে ২০১২ সালে স্ত্রী দাবি করে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে মুক্তি জয়ধর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কোন স্বাক্ষী কিংবা প্রমান পেশ করতে না পারায় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মুক্তির দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দেন। এরপর মুক্তি জয়ধর ঢাকায় গিয়ে গামেন্টেসে চাকরি নেয়। আশা দে আরও জানান, চলতি বছরের ৫ ফ্রেব্রুয়ারী সামাজিকভাবে উপজেলার পতিহার গ্রামের ছন্টু রঞ্জন সরকারের কন্যা বৃষ্টি সরকারকে গোবিন্দ বিয়ে করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুক্তি জয়ধর স্ত্রী দাবি করে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের জিওসি সহ আগৈলঝাড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার ওইসব কর্মকর্তারা মুক্তি জয়ধরকে নোটিশ প্রদান করলেও সে (মুক্তি) নির্ধারিত তারিখে হাজির হয়নি। গামেন্টেসে চাকরি করার সুবাধে মুক্তি অন্তঃস্বত্তা হওয়ার পর গত ৮ অক্টোবর স্থানীয় একটি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মুক্তি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েই ওই সন্তান গোবিন্দর বলে প্রচার করে। বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হলেও চরম বেকায়দায় পরেন সেনাসদস্য গোবিন্দ ও তার পরিবার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের দ্বায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, মুক্তি জয়ধর নামের এক নারী ডাকযোগে একটি লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন। ওই অভিযোগের নিচে ব্যবহৃত মুক্তির মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে স্বশরীরে সেনানিবাসে আসতে বলাসত্বেও সে আর আসেননি। এ ব্যাপারে সেনাসদস্য আশীষ কুমার দে গোবিন্দ মোবাইল ফোনে জানান, মুক্তি জয়ধরের গর্ভের সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করলেই সন্তান কার তার মূলরহস্য বেরিয়ে যাবে। তিনি প্রতারক মুক্তি জয়ধর ও তার নেপথ্যের অর্থদাবি করা মদদদা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×