ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছোট দেশ হয়েও সবচেয়ে বড় আসরে আইসল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১১ অক্টোবর ২০১৭

ছোট দেশ হয়েও সবচেয়ে বড় আসরে আইসল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা নিশ্চিত করেছে আইসল্যান্ড। গত বছর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে চমক দেখানো দেশটি এবার ইউরোপীয় অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ‘আই’ গ্রুপের সেরা হয়ে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকেট কেটেছে। সোমবার রাতে বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে কসোভোকে ২-০ গোলে হারিয়েছে আইসল্যান্ড। এর ফলে ইতিহাসের সবচেয়ে ছোট দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে খেলার অবিস্মরণীয় রেকর্ড গড়েছে দেশটি। এর আগে গৌরবময় এই রেকর্ডের দখল ছিল ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর। ইউরোপ থেকে বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলা নিশ্চিত করেছে সার্বিয়াও। ‘ডি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে এ কৃতিত্ব দেখিয়েছে তারা। পরশু রাতে ঘরের মাঠে জর্জিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়েছে সার্বিয়া। এদিকে বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচেও জয় পেয়েছে স্পেন। অবশ্য ‘জি’ গ্রুপের ম্যাচে জয় পেতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে ২০১০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নদের। ইসরাইলকে মাত্র ১-০ গোলে হারিয়েছে সার্জিও রামোসের দল। এই গ্রুপে শেষ ম্যাচে জিতেও সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে না ইতালির। আলবেনিয়ার মাঠে ইতালির জয়ও ১-০ গোলে। গ্রুপের রানার্সআপ হওয়ায় প্লে-অফ খেলতে হবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। বিশ্বকাপের রঙিন মঞ্চে খেলা হচ্ছে না গ্যারেথ বেলের। কেননা তার দেশ ওয়েলস ‘ডি’ গ্রুপে দ্বিতীয়ও হতে পারেনি। শেষ ম্যাচেও তারা রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরেছে ১-০ গোলে। ঘাতক ইনজুরির কারণে গ্যালারিতে বসে নিজ দেশের জীর্ণ অবস্থা দেখেছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা বেল। ২০১৬ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ডকে বিদায় করে দেয়া আইসল্যান্ডের লোকসংখ্যা মাত্র ৩ লাখ ৩৫ হাজার। একমাত্র দেশ হিসেবে ১ মিলিয়নের (১০ লাখ) কম লোকসংখ্যার দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্বে জায়গা করে নেয়ার রেকর্ড গড়েছে তারা। কসোভোর বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ৪০ মিনিটে জিলফি সিগুর্ডসনের গোলে এগিয়ে যায় আইসল্যান্ড। বিরতির পর ৬৮ মিনিটে ইয়োহান গুডমুনসনের গোলে জয় ও বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে দেশটি। ১০ ম্যাচের সাতটিতে জিতে ২২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে আইসল্যান্ড। একইদিন ইউক্রেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচে শেষ গোটা আইসল্যান্ডই যেন পরিণত হয় উৎসবের মঞ্চে। সেটি হওয়াটাই স্বাভাবিক। নারী-পুরুষ মিলিয়ে মোটে ২০ হাজার পেশাদার ফুটবলার আছে আইসল্যান্ডে। অথচ সাড়ে তিন লাখ মানুষের দেশটিতে প্রতি ৫০০ জনে একজন উয়েফা মনোনীত কোচ খুঁজে পাওয়া যায়। কোচ এবং ঘরোয়া ফুটবলের কাঠামোর বদৌলতে ফুটবল-চমক ছোট্ট এই দেশটির। এর আগে ১২ বার চেষ্টা করেও বিশ্বকাপে খেলা হয়নি। বড় কোন আসরে ইউরোপের এই ক্ষুদ্রতম দ্বীপ দেশটির এটি দ্বিতীয় সেরা সাফল্য। এর আগে ২০১৬ সালের ইউরো টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ইংল্যান্ডের মতো ফুটবল পরাশক্তিকে হারিয়ে সবাইকে বিস্মিত করেছিল। আইসল্যান্ডের কোচ হেইমির হালগ্রিমসন বলেন, ইউরো ২০১৬ সালের ঘটনা বিশ্বকাপে আমাদের যে দারুণভাবে অনুপ্রেরণা যোগাবে সেটি জানতাম। এখন আমরা সেই কঠিন লড়াইয়ে উন্নীত হয়েছি। আপনারা জানেন, গ্রুপপর্বে ক্রোয়েশিয়া, তুরস্ক, উইক্রেন ও ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমাদের কেমন লড়াই করতে হয়েছে। এই সফলতা আমাদের জন্য সমাপ্তি নয় বরং দীর্ঘ পথ চলার শুরু হবে এখান থেকেই। কার্ডিফ সিটি স্টেডিয়ামে ওয়েলস-রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটির প্রথমার্ধ গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয়। বিরতির পর ৫৭ মিনিটে জেমস ম্যাকক্লিনের গোলে মূল্যবান তিন পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে জায়গা করে নেয় আয়ারল্যান্ড। আয়ারল্যান্ড-ওয়েলস ম্যাচে জয় পাওয়া দল কমপক্ষে প্লে-অফে জায়গা করে নেবে, হেরে যাওয়া দল বাদ পড়বে এই সমীকরণ নিয়েই মাঠে নেমেছিল দল দুটি। অবশ্য ওয়েলস ড্র করলে এবং সার্বিয়া শেষ ম্যাচে হেরে গেলেও প্লে-অফের সুযোগ থাকতো ওয়েলসের। তবে হেরে গিয়ে বিশ্বকাপের স্বপ্ন চূর্ণ হয় বেলের দেশের। গ্রুপের অপর ম্যাচে জর্জিয়াকে হারিয়ে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করে সার্বিয়া। ২১ পয়েন্ট নিয়ে সার্বিয়ানরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়।
×