ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকাল তিন শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ০২:০৯, ১০ অক্টোবর ২০১৭

ঠাকুরগাঁওয়ে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকাল তিন শিক্ষার্থী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পনেরো দিনে তিন স্কুল ছাত্রী সাহসী হয়ে নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাঁরা হলো দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তসলিমা, হালিমা ও মাছখুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সানজু আক্তার। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের কার্তিক পাড়া গ্রামের সমশের আলী তার নাবালিকা মেয়ে ও মাছখুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সানজু আক্তারকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে সানজু মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হেল্প লাইন ১০৯ মোবাইল করে নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকিয়ে দেয়। সানজু আক্তার জানায়, সে তার স্কুলে এক কর্মশালায় বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে জেনেছে। তাই সে এখনই বিয়ে না করে লেখাপড়া শেষে নিজে সাবলম্বী হতে চায়। বিয়েতে সম্মতি না থাকায় সে হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন দেয়। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় থেকে সমাজসেবা অফিসকে ফোন দেয়। সমাজসেবা অফিসার উপজেলা নিবার্হী অফিসার আ: মান্নানকে বিষয়টি জানালে তিনি পাড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান আহসান হাবীব বুলবুলকে জানান। সমাজ সেবা অফিসার ও পাড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান আহসান হাবীব বুলবুল, ইউপি সদস্য সানজরু বাড়ীতে হাজির হয়ে সানজুর বাবা মাকে বাল্য বিয়ের কুফল জানিয়ে বিয়ে বন্ধ করে। এসময় তাঁরা সানজুর বাবার কাছে বাল্য বিয়ে দিবেনা মর্মে অঙ্গিকার নামা নেয়। এছাড়া ১৮ সেপ্টেম্বর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও বিদ্যালী পাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের কন্যা ও দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তসলিমা আক্তার (১৪ ) এবং ২২ সেপ্টেম্বর ঐ স্কুলের নবম শ্রেণির আরেক ছাত্রী জিয়াখোর গ্রামের হারুন অর রশীদের মেয়ে হালিমা আকাতর হানি (১৪) দু’জনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আ: মান্নানের সহযোগিতায় নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকিয়েছে। তাদের অভিভাবক আর বাল্য বিবাহ দিবেনা মর্মে ইউএনও’র কাছে অঙ্গিকারনামা জমা দিয়েছে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ষ্টুডেন্টস ডাটাবেজ প্রকল্পের অধিনে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের বাল্য বিয়ে নিজে ঠেকানো শুরু করেছে। সচেতনতার অভাবে ইতোপূর্বে ওই উপজেলায় প্রতি বছর শতাধিক বাল্য বিবাহ হতো। এদের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণি হতে নবম শ্রেণির ছাত্রীর সংখ্যাই ছিল বেশী। লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঝড়ে পড়তো শিক্ষার্থী। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নিবার্হী অফিসার আ: মান্নান জনান, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে যে ভাবে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে তাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই উপজেলাকে বাল্য বিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
×