স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধান বিচারপতি ও রোহিঙ্গা ইস্যূ নিয়ে অযথা বিতর্ক সৃষ্টি না করার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি নিজে অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। মানুষ যে কোনো মুহূর্তে অসুস্থ হতে পারে। তিনি এখন বিদেশে যেতে চান। এ নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়েছে। তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবেন নিজের ইচ্ছায়।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ ন্যাশনাল অ্যাডভোকেসি মিটিং অন নিউট্রিশন’ শির্ষক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফের সহায়তায় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় পুষ্টি বিষয়ক এই কর্মশালার আয়োজন করে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্তি মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের, ইউনিসেফসহ দাতা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপ্রতি নিজে ডাক্তার দেখাচ্ছেন, চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরপরও ওরা (বিএনপি) বলে প্রধান বিচারপতি গৃহবন্দি। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী যদি তাকে দেখতে যাই, তাহলে রাজনীতি শুরু হয়ে যাবে। এ জন্য ভয়ে তাকে দেখতে যাচ্ছি না। তিনি একজন প্রধান বিচারপতি, তাকে কেন গৃহবন্দি করা হবে। একজন প্রধান বিচারপতিকে কি গৃহবন্দি করে রাখা সম্ভাব ?
রোহিঙ্গা বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা এখন কঠিন সমস্যা মোকাবেলা করছি। আমাদের অতিরিক্ত একটি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। যার মধ্যে লাখ লাখ শিশু আছে। গতকাল প্রায় ৬ লাখ ভ্যাকসিন পাঠিয়েছি। মিয়ানমার তাদের নিজেদের মানুষকে হত্যা করছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক তারা নিজের সন্তনকে হত্যা করছে। নিজের মা-বোনকে হত্যা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মায়ের মমতা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু কতোদিন আমরা তাদের আগলে রাখবো। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, রাখাইন রাজ্য মিয়ানমারের মধ্যে। সেখানে কোনো স্বাস্থ্য ক্লিনিক নেই। সভ্য দুনিয়ায় এমন কোনো স্থান এখনো আছে! তারা আমাদের এখানে এসেছেন গুলি খেয়ে। শেখ হাসিনা সাহসের সঙ্গে এটা মোকাবেলা করছেন। প্রধানমন্ত্রী মায়ের মমতা নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বে এই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার চিত্র তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন , স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছে।
গুরুতর আঘাত পাওয়া প্রায় আড়াই হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে কক্সবাজারের বিভিন্ন হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এসব রোগীর প্রায় সবাই গুলি বা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত শত শত রোহিঙ্গা শিশুকে বিভিন্ন রোগের টিকা দেয়া হয়েছে। টেকনাফ ও বান্দরবানের যেসব এলাকায় শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছে, সেসব এলাকায় বাড়তি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। অনেকগুলো নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে।
গর্ভবতী নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ৪০টির বেশি বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বাস্থ্য কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরগুলোয় রোগ প্রতিরোধ, পুষ্টি ও সেবার পাশাপাশি পরিবার পরিকল্পনাসেবা দেয়া হচ্ছে।