স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা সেতুর সুপার স্ট্রাকচারবাহী ‘তিয়ান ই হাউ’ ভাসমান ক্রেন জাহাজ গন্তব্যে পৌঁছেছে। এটি যথা সময়ে পৌঁছার পর এখানে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। মঙ্গলবার স্প্যানটি ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারের পাশে রাখা ছিল। এর আগে সোমবার দুপুরে এটি পৌঁছে।
ওয়ার্কশপ থেকে চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় জাহাজটি প্রায় ৩ হাজার ২শ’ টন ওজনের ৭বি নম্বর স্প্যানটি (সুপার স্ট্রাকচার) নিয়ে সেতুর ২৩ নম্বর পিলারের (খুঁটি) কাছাকাছি নোঙ্গর করেছিল। পরে সোমবার সকালে রওনা হয়ে আরও প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারের কাছে পৌঁছে যায় দুপুরে। ৩০ সেপ্টেম্বর স্প্যানটি পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে স্থাপন করার কথা রয়েছে। প্রথমে অস্থায়ী বেয়ারিংয়ে এটি বসানো হবে পরে স্থায়ী বেয়ারিংয়ে স্থাপন করা হবে।
রবিবার সকালে মাওয়ার কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের ওয়ার্কশপ থেকে প্রায় ৩৬শ’ টন ক্ষমতার ভাসমান ক্রেনের ‘তিয়ান ই হাউ’ জাহাজটি রওনা হয়। ধূসর রংয়ের ১৫০ মিটার দীর্ঘ সেতুর এই স্প্যান টেনে নেয়ার সময় কৌতূহলী মানুষের ভিড় পড়ে যায়। দূর থেকেই এই দৃশ্য অবলোকন করে আনন্দে উদ্বেল পদ্মা তীরের মানুষ।
সোমবার সকালে স্প্যানবাহী জাহাজটি ফেরি চ্যানেল ক্রস করার সময় সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এই চ্যানেলে ফেরিসহ সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রকল্পের প্রায় ৪৭ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুতে মোট ৪২টি পিলার থাকবে। এর মধ্যে ৪০টি পিলার নির্মাণ করা হবে নদীতে। দুটি নদীর তীরে। নদীতে নির্মাণ করা প্রতিটি পিলারে ছয়টি করে পাইলিং করা হয়েছে, যার দৈর্ঘ্য গড়ে প্রায় ১২৭ মিটার পর্যন্ত। একটি পিলার থেকে আরেকটির দূরত্ব ১৫০ মিটার। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে দুটি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগামী বছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রকৌশলীরা জানান, নদীতে মূল সেতুর এখন ৫৫টি পাইল সম্পন্ন হয়ে গেছে। এছাড়াও বটম অবস্থায় রয়েছে আরও ২২টি পাইল। এছাড়া জাজিরা প্রান্তে সংযোগ সেতুর ১৭৮টি পাইল বসেছে। এখানে আর মাত্র ১৫টি পাইল বাকি সংযোগ সেতুর (ভয়াডাক্ট) জন্য। আর মাওয়ায় এ পর্যন্ত সংযোগ সেতুর পাঁচটি পাইল বসেছে।