ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রীদের উপর পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনায় মুখ পুড়েছে বিজেপির

প্রকাশিত: ২৩:৪৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ছাত্রীদের উপর পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনায়  মুখ পুড়েছে বিজেপির

অনলাইন ডেস্ক ॥ দেশের নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। জেএনইউ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে হারের পরে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএইচইউ) ছাত্রীদের উপর পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনায় আরও মুখ পুড়েছে বিজেপির। এই পরিস্থিতিতেই আসরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের লোকসভা কেন্দ্রে এমন স্পর্শকাতর ঘটনা ঘটে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ মোদী কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে। আর তার পরেই পুলিশি বাড়াবাড়ি নিয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ করল উত্তরপ্রদেশ সরকার। সরানো হল তিন জন অ্যাডিশনাল সিটি ম্যাজিস্ট্রেট ও দু’টি থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে। বিজেপি সূত্রের খবর, তিনি বারাণসীতে থাকাকালীন কী ভাবে বিএইচইউ-এ ইভটিজিংয়ের ঘটনা এমন মোড় নিল, তা নিয়ে যোগীর কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন মোদী। কারণ ছাত্রীদের মারধর করার ঘটনায় মোদীকেই নিশানা করছেন বিরোধীরা। দিল্লিতে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকের পরে নিতিন গডকড়ী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহ দু’জনেই আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলেছেন। তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষী সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লাঠি চালানোর ঘটনায় প্রতিবাদী পড়ুয়াদের ‘প্ররোচনা’কেই সামনে নিয়ে আসছিল। কিন্তু এখন চাপের মুখে মোদীর মনোভাব বুঝেই দল উল্টো সুরে গাইতে শুরু করেছে। প্রশাসনিক পদক্ষেপেও তার ছাপ পড়ছে। উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল রাম নাইক জানিয়েছেন, পড়ুয়ারা কী কারণে বিক্ষোভের রাস্তায় গেল, তা খতিয়ে দেখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশ কী ধরনের আচরণ করেছে, কমিটি তা-ও খতিয়ে দেখবে। ঘটনাচক্রে আজই এক রাজনৈতিক দলের ডাকে ‘সাম্প্রদায়িকতা ও শিক্ষা’ নিয়ে বারাণসীতে বক্তৃতা করার কথা ছিল মানবাধিকার কর্মী তিস্তা শেতলওয়াড়ের। কিন্তু অভিযোগ, বিমানবন্দরে নামা মাত্র তাঁকে আটক করে পুলিশ। প্রায় ১০ ঘণ্টা পরে ছাড়া পান শেতলওয়াড়। বিএইচইউ-এ প্রায় এক হাজার পড়ুয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পুলিশ। এমনকী, লাঠি চালানোর ঘটনায় অ়জ্ঞাতপরিচয় পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধেও এফআইআর হয়েছে। তবে পরিস্থিতি যে আর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আটকে নেই, গোটা দেশের রাজনীতিতেই তা প্রভাব ফেলছে— রাহুল গাঁধী থেকে বিভিন্ন বিরোধী নেতার প্রতিক্রিয়ায় তা ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস আজ দাবি তুলেছে, উপাচার্যকে বরখাস্ত করতে হবে। আর হাইকোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে লাঠি চালানোর ঘটনার তদন্ত করতে হবে। কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি ‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় মোদীর নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিএইচইউ-এর ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব-ও। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রীরা এক দিকে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন, আবার পুলিশের লাঠিও খেতে হচ্ছে তাঁদের।’’ আর পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে লাঠি চালানোর বিরুদ্ধে আজ দিল্লিতে পথে নেমেছে সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপিও। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×