ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শান্তির বারতায় উদ্দীপ্ত রেজাউল করিমের ক্যানভাস

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

শান্তির বারতায় উদ্দীপ্ত রেজাউল করিমের ক্যানভাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্রমশই হিংস্র হচ্ছে পৃথিবী। চারপাশে দৃশ্যমান মানুষেরই সৃষ্ট চূড়ান্ত নিষ্ঠুরতা। ধর্ম ও বর্ণ বিভেদের খেলায় ঝরছে শুধুই রক্ত। সেই অমানবিকতার বিরুদ্ধে মানবতার জয়গান গেয়েছেন চিত্রশিল্পী রেজাউল করিম। রং ও রেখার সম্মিলিত ক্যানভাসে ছড়িয়েছেন শান্তির বারতা। সেসব ছবির নিয়ে রবিবার থেকে শুরু হলো এই শিল্পীর চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে চলমান এ প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘পিস অব হার্ট’। বাস্তবতা থেকে পরাবাস্তবতা কিংবা অবয়বের আশ্রয়ে সৃজিত ১৯টি চিত্রকর্মে প্রতিধ্বনিত হয়েছে সময়ের অনুরণন। ফিগারেটিভ বা অবয়বধর্মী কাজকে প্রাধান্য দিয়ে চলমান সময়কে চিত্রায়িত করেছেন রেজাউল করিম। কখনও আবার চলমান ঘটনাবলির নেপথ্যে সংযুক্ত হয়েছে মানবিকতার আর্তি। চিত্রপটে উদ্ভাসিত হয়েছে দেয়ালপিষ্ট মানুষের লাশ, মৃত্যুর আগ মুহূর্তে প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকার শেষ চেষ্টা কিংবা বেঁচে যাওয়া মানুষের আহাজারি। শ্রম যাতনায় বিধ্বস্ত মানুষের অসহায়ত্ব উপস্থাপিত হয়েছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের লোগো, পোশাক তৈরির কারখানা ও বস্ত্রের নানা অনুষঙ্গের মাধ্যমে। রেজাউলের চিত্রপটে উঠে এসেছে ঘড়ির ডায়াল; যাতে দেখা যায় শুধু কাল গণনা নয়, যাতনা ও পীড়নের সাক্ষীও এই ডায়াল। নিষ্পেষিত জীবন আর ঘড়ি যেন একই সমীকরণের দুই প্রান্ত। কালচক্র আর মানুষের জীবনচক্রের মধ্যে অন্বয়সূত্র খুঁজেছেন রেজাউল। প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে শিল্পীর ‘ক্যাপসুল গড’ সিরিজের ছবি। এছাড়া বার্তাবহ শিল্পীর অন্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ‘আইডেন্টিটি ক্রাইসিস’, সিরিজ ছবি ‘ব্রেক অব ড্রিম’ ও ‘এনসাইন্ট ডেজায়ার’, ‘দ্য কমন পিপল’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘লাইফ অব আহসান মঞ্জিল’, ‘কমপ্লেক্স ড্রয়িং এ্যান্ড ইঞ্জিন কম্পোজিশন’। পেন্সিল স্কেচ, তেলরং, এ্যাক্রিলিক ও মিশ্র মাধ্যমে আঁকা হয়েছে ছবিগুলো। ছয় দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ড. মুহম্মদ এনামুল হক স্মারক বক্তৃতা ॥ স্মরণ করা হলো বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক ড. মুহম্মদ এনামুল হককে। এই গুণীজন রবিবার স্মরণে রবিবার বিকেলে ড. মুহম্মদ এনামুল হক স্মারক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে মুহম্মদ এনামুল হকের সারস্বত সাধনা শীর্ষক বক্তৃতা করেন অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম। একক বক্তৃতায় গোলাম মুস্তাফা বলেন, মুহম্মদ এনামুল হক একজন নিষ্ঠাবান গবেষক। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং বাঙালীর সামাজিক ইতিহাসের নানাদিক ছিল তার আগ্রহ, অনুসন্ধান, অধ্যয়ন ও গবেষণার বিষয়। এই সারস্বতচর্চার প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে তার স্বজাতি ও স্বদেশপ্রেম। বাংলা সাহিত্যে মুসলমানদের অবদান সম্পর্কেও মুহম্মদ এনামুল হক গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, মুহম্মদ এনামুল হকের চিন্তার পরিধি ছিল ব্যাপক, গভীরতাও ছিল তার ভাবনায়। এদেশের সমাজ-সংস্কৃতিকে তিনি গভীরভাবে অনুধাবন করতে চেয়েছেন। তার উপলব্ধি প্রকাশ করেছেন অকপটে। গবেষকদের কাছে প্রত্যাশিত সততা তার ছিল, গবেষণাকে তিনি যান্ত্রিক বিদ্যা-চর্চার পরিণত করেননি। স্বদেশ-সমাজ ও স্বজাতির স্বরূপ অন্বেষণের অঙ্গীকার ছিল তার সারস্বত সাধনায়। সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ আবদুল কাইউম বলেন, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক গোটা বাংলা অঞ্চলের এক অসাধারণ প্রজ্ঞাবান প-িত। ভারতীয় ভাষাতত্ত্বের নানা দিক থেকে শুরু করে বাংলার আঞ্চলিক ভাষা পর্যন্ত তার আগ্রহের পরিসর বিস্তৃত ছিল। তিনি শিক্ষাবিদ হিসেবেও ছিলেন অনন্য। বাংলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে তার অবদানও বিশেষভাবে উল্লেখ করার মতো। শামসুজ্জামান খান বলেন, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক বাংলা একাডেমির প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। একাডেমির অভিধান চর্চা তার হাতে বিশেষ মাত্রা অর্জন করে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনুসন্ধিৎসু গবেষণায় তিনি অনন্য দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। আওয়ার কান্ট্রিজ গুড নাটকের মঞ্চায়ন রবিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো ঢাকার থিয়েটারের ৪৬তম প্রযোজনা ‘আওয়ার কান্ট্রিজ গুড’। টমাস কেনলির উপন্যাস দ্য প্লে-মেকার অবলম্বনে নাটকটি লিখেছেন নাট্যকার টিমবারলেক ওয়ার্টেনবেকার। বাংলায় অনুবাদ করেছেন আবদুস নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন ফখরুল বাসার, মিলি বাসার, রোজী সিদ্দিকী, শুভাশীষ ভৌমিক, মিলু চৌধুরী, সেতু ফাল্গুনী, ফারজানা চুমকি, মাহমুদুর রহমান, তাহমিদা নার্গিস, ইউসুফ খসরু, সাইদ রিংকু, বাদল, মোস্তাফা রতন, তারিকুল ইসলাম, সাজ্জাদুর সাজ, অনিক, রজব, তারেক প্রমুখ।
×