ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উত্তর কোরিয়ার উপকূলে মার্কিন বোমারু বিমানের মহড়া

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

উত্তর কোরিয়ার উপকূলে মার্কিন বোমারু বিমানের মহড়া

অনলাইন ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের বোমারু বিমান উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের কাছ দিয়ে উড়ে গেছে। যে কোনো ধরনের হুমকি মোকাবেলায় মার্কিন সামরিকবাহিনী তাদের এই যুদ্ধবিমান উড়িয়েছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। একুশ শতকের মধ্যে এই প্রথম কোনো মার্কিন যুদ্ধবিমান বা বোমারু বিমান কোরীয় উপকূলে বেসামরিক অঞ্চলের সবচেয়ে উত্তর দিক দিয়ে উড়ে গেছে। বিবিসি জানিয়েছে, শনিবার উত্তর কোরিয়ার একটি পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছে মৃদু ভূমিকম্পে পিয়ংইয়ংয়ের আবারও পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালানো নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এই সামরিক শক্তির মহড়া দিল। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির কারণে সৃষ্ট গুরুতর হুমকি মোকাবেলায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে যে অনেক সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, তা দেখানোর জন্যই এই অভিযান চালানো হয়েছে। পেন্টাগন বলছে, শনিবারের অভিযানে অংশ নেওয়া বি-১বি ল্যান্সার বোমারু বিমান গুয়াম ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে এবং জাপানের ওকিনাওয়া থেকে এফ-১৫সি ঈগল ফাইটার জেট ওই বহরে যুক্ত হয়। উত্তর কোরিয়া একের পর এক পারমাণু বোমা ও ব্যালিস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা শুরুর পর থেকে গত কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাগযুদ্ধ চলছে। কথা এই লড়াই নতুন মাত্রা পায় জাতিসংঘে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘নজিরবিহীন’ ভাষণের পর। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনকে একটি আত্মঘাতী মিশনের ‘রকেট মানব’ বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তিনি আরো বলেন, বাধ্য হলে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ করে দেবে। এর পাল্টা হিসেবে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি আত্মঘাতী মিশনে রয়েছেন। রিং বলেন, ট্রাম্পের মতো একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত লোকের কাছ থেকে এমন মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে রকেট হামলা চালানো অনিবার্য হয়ে উঠেছে। উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হবে বলে ট্রাম্প যে মন্তব্য করেছেন তার জন্য তাকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন রিং। এদিকে ট্রাম্পের এই হুমকির জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে বলে পাল্টা হুমকি দেন কিম। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ওই বিকারগ্রস্ত উন্মাদ বুড়োকে আগুনে পুড়িয়ে বশ মানাবো আমি।’ কোরীয় উপকূলে বোমারু বিমান নিয়ে মহড়া চালানোর পর পেন্টাগন থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে কোনো হুমকি মোকাবেলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে অনেক ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এই সামরিক প্রদর্শন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে একটি পরিস্কার বার্তা। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্র দেশগুলোকে রক্ষা করতে আমরা সামরিক ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। প্রসঙ্গত, গত ৩ সেপ্টেম্বর নিজেদের ষষ্ঠ ও সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এ বছর কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্রও উৎক্ষেপণ করে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রে পরমাণু হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জনে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে তারা। সর্বশেষ পরমাণু পরীক্ষার জেরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে দেশটির ওপর নতুন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এদিকে জাপানের ওপর দিয়ে ফের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে এই নিষেধাজ্ঞার জবাব দেয় উত্তর কোরিয়া। জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্পের হুমকির জবাবে প্রশান্ত মহাসাগরে শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালানোরও হুমকি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
×