ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে জাতিসংঘের শরণার্থী হাইকমিশনার

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে জাতিসংঘের শরণার্থী হাইকমিশনার

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা বর্বরতায় বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ গ্রান্ডি। শনিবার দুপুরে হাইকমিশনার উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি বালুখালি ও থাইনখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখেন। উল্লেখ্য, হাইকমিশনার তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। আজ রবিবারও তিনি কক্সবাজারে অবস্থান করবেন। কাল ঢাকায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ সোচ্চার ভূমিকা গ্রহণ করেছে। খোদ জাতিসংঘ মহাসচিব মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে দফায় দফায় বক্তব্য দিয়েছেন। জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরোচিত কায়দায় নিধনযজ্ঞ চলার পর প্রাণে বেঁচে যাওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পর্যন্ত সর্বত্র রোহিঙ্গারা সয়লাব হয়ে আছে। উখিয়ার বালুখালিতে ২ হাজার একর সরকারী জমির ওপর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবির গড়ে তোলার কার্যক্রম চলছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার শনিবার বাংলাদেশে এসে সরাসরি কক্সবাজার হয়ে উখয়ায় যান। তিনদিনের সফর শেষে তার পক্ষ থেকে একটি বক্তব্য প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে। ইউএনএইচসিআরের ত্রাণতৎপরতা জোরদার এদিকে বাসস জানায়, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের দুটি শিবিরে আশ্রয় নেয়া পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী সরবরাহ জোরদার করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। খবর বাসসর। শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান এনড্রিজ ম্যাহিসিস জানান, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে বর্ষা মৌসুমে বিপুল শরণার্থীর ন্যূনতম সুরক্ষায় তারা প্লাস্টিকের সিট বিতরণও তরান্বিত করেছেন। এ লক্ষ্যে নতুন আগত শরণার্থীর জন্য ইউএনএইচসিআরের সাইট প্ল্যানাররা কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ ২ হাজার একর জমির ওপর তাঁবুর ব্যবস্থা করতে সাহায্য করছে। কয়েক দশক ধরে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত কুতুপালং ক্যাম্প-এর বর্ধিত অংশ নতুন ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত। বর্ধিতাংশ ক্যাম্পটি ইউএনএইচসিআরের সহায়তায় সরকার কর্তৃক পরিচালিত। ম্যাহিসিস বলেন, শনিবার থেকে আমরা রোহিঙ্গা নেতাদের মাধ্যমে নির্ধারিত সাড়ে ৩ হাজার পরিবারের মাঝে পরিকল্পনা অনুযায়ী রান্নাঘরের সামগ্রী, ঘুমানোর ম্যাট, সোলার ল্যাম্প ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ শুরু করেছি। রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবী এবং ঠিকাদাররা নতুন আসা শরণার্থীদের জরুরী আশ্রয়ে সহায়তা করছে তবে সাইট প্ল্যানের জন্য পর্যাপ্ত স্যানিটেশন এবং পানি উঠতে না পারে এমন উঁচু ও সমতল ভূমির সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ইউএনএইচসিআরের মতে, গত সাড়ে ৩ সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে আসা অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিবারই কুতুপালং ও নয়াপড়া এই দুই শিবিরে বা স্কুল অথবা বিভিন্ন সরকারী ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি জানান, শরণার্থী বিষয়ক দূত ফিলিপ গ্রান্ডি সঙ্কটের মাত্রা প্রাথমিক উপলব্ধি, শরণার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাত এবং ইউএনএইচসিআরের অব্যাহত সহায়তা কার্যক্রম তদারকি করতে বাংলাদেশে আসেন।
×