ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কালিয়াকৈরে পোশাক কারখানা ভাংচুর, পুলিশসহ আহত ১৯

প্রকাশিত: ০২:২৪, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কালিয়াকৈরে পোশাক কারখানা ভাংচুর, পুলিশসহ আহত ১৯

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে বৃহস্পতিবার এক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কর্ম বিরতি, বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে। এসময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের কয়েক দফা সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার সেল ও সর্টগানের গুলি ছুড়েছে। এঘটনায় পুলিশের ৪ সদস্য ও অন্ততঃ ১২ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে শিল্প-পুলিশ গাজীপুর-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মকবুল হোসেন ও শ্রমিকরা জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা পল্লীবিদ্যুৎ এলাকাস্থিত আয়মন টেক্সটাইল এন্ড হোসিয়ারী লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গত কয়েকদিন ধরে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের পাওনা ঈদের আগের মাসের (আগস্ট) ১০ দিনের বকেয়া বেতন ও ওভার টাইমের ভাতা পরিশোধের দাবী জানিয়ে আসছিল। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পাওনাদি গত ১০ সেপ্টেম্বর পরিশোধের আশ্বাস দিলেও তা পরিশোধ করে নি। এতে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে শ্রমিক অসন্তোষের মুখে কর্তৃপক্ষ বৃহষ্পতিবার শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দেয়। এদিন সকালে শ্রমিকরা কারখানায় এসে তাদের বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। পরিবহন সমস্যার কারনে ঢাকা থেকে বেতন ভাতার টাকা নিয়ে কারখানায় পৌছতে দেরী হওয়ায় বেতন ভাতা পরিশোধ করা হবেনা বলে শ্রমিকদের মাঝে গুজব ছড়িয়ে। এর জের ধরে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে দুপুরে কারখানার ভিতরে বিভিন্ন মালামাল ও মেশিন এবং আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এসময় তারা কারখানার ভিতরে কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। এক পর্যায়ে বিকেলে টাকা বহনকারী গাড়ি কারখানার গেইটে পৌছলে শ্রমিকদের মাঝে আবারো উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় টাকা বহনকারী গাড়ি নিয়ে পুলিশ ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে শ্রমিকরা বাধা দেয়। ওই গাড়িতে টাকা নেই এমন গুজব ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালায় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে পুলিশের ৪ সদস্য আহত হয়। এসময় শ্রমিকরা টাকা বহনকারী গাড়িটিও ভাংচুর করে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ৪রাউন্ড টিয়ার সেল এবং ১২ রাউন্ড সর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এঘটনায় পুলিশের ৪ সদস্য ও অন্ততঃ ১২ জন শ্রমিক আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে বিকেলের দিকে শ্রমিকদের বেতন ভাতাদি পরিশোধের কার্যক্রম শুরু হয় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত তা চলছিল। কারখানার এজিএম নাসির উদ্দিন বালী জানান, বেতন দেয়াকে কেন্দ্র করে ভূল বোঝাবুঝির কারণে এঘটনা ঘটেছে। বেতন দেয়া শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শিল্প-পুলিশ গাজীপুর-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মকবুল হোসেন জানান, শ্রমিকদেও হামলায় ও তাদেও ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের ৪ সদস্য আহত হয়েছে। একপর্যায়ে পুলিশ ৪ রাউন্ড টিয়ার সেল ও ১২ রাউন্ড সর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
×