ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নজরদারি এড়িয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা

শরণার্থী শিবির থেকে পালানোর সময় কয়েক ঘণ্টায় আটক ২১০

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

শরণার্থী শিবির থেকে পালানোর সময় কয়েক ঘণ্টায় আটক ২১০

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ রোহিঙ্গারা শরণার্থী শিবির বাদ দিয়ে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়ার টার্গেট নিয়ে এগুচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে কি কারণে তারা শরণার্থী শিবির ছেড়ে কক্সবাজার ত্যাগ করার চেষ্টা করছে। জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিকে এড়িয়ে শিবির থেকে পালানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এদিকে, বুধবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আয়োজিত সভায় রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় পাওয়া গেলে আটক বা গ্রেফতারের পরিবর্তে উদ্ধার দেখাতে বলায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে প্রশাসন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সেভেন কক্সবাজারের বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট বসিয়েছে। মঙ্গলবার কক্সবাজারের লিংক রোড এলাকায় স্থাপিত চেকপোস্টে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ২১০ জন রোহিঙ্গা আটকের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারে বালুখালী শরণার্থী শিবিরে হস্তান্তর করেছেন র‌্যাব সেভেনের মেজর রুহুল আমীন। প্রশ্ন উঠেছে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশে কোন বাধা নেই গত ২৭ আগস্ট থেকে। এ ব্যাপারে র‌্যাব সেভেনের কক্সবাজারের কোম্পানি কমান্ডার রুহুল আমীন জনকণ্ঠকে জানান, মানবিক দিক চিন্তা করে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই দিচ্ছে সরকার। তবে রোহিঙ্গারা যেন কোন অপরাধের সঙ্গে জড়াতে না পারে সেদিকে আমাদের নজরদারি রয়েছে। এছাড়াও রোহিঙ্গারা যেন কক্সবাজার ছাড়তে না পারে সে জন্য চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বিভিন্নভাবে নজরদারি রাখা হয়েছে যেন রোহিঙ্গাকে কেন্দ্র করে কেউ ব্যবসায় মেতে উঠতে না পারে। অভিযোগ রয়েছে, দেশব্যাপী রোহিঙ্গা ছড়ানো ঠেকাতে মরিয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে একদিকে প্রবেশ অন্যদিকে রোহিঙ্গা ঠেকানোর বিষয়টি এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কেন রোহিঙ্গা প্রবেশে বাধা না দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গা আটকাতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে তা নিয়ে সচেতনদের মাঝ রয়েছে কৌতূহল। এ কেমন সিদ্ধান্ত, এ কেমন মানবতার টান। তবে এসব রোহিঙ্গা আগামীতে কাল হয়ে দাঁড়াবে যদি অনুপ্রবেশ বন্ধ করা না যায় বা পুশব্যাক করা না যায়। কারণ ত্রাণের পণ্য ও খাদ্যসামগ্রী বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রোহিঙ্গারা উপার্জনের দিকে এগুতে থাকবে। তখনই টেকনাফ-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন শ্রমবাজার ও দিনমজুর এমনকি হতদরিদ্র শ্রেণীর ওপর প্রভাব পড়বে। অভাবের তাড়নায় শুরু হবে অপরাধ। আরও অভিযোগ রয়েছে, রোহিঙ্গা প্রবেশে সহায়তা করছে পুরাতন রোহিঙ্গা সিন্ডিকেটসহ টেকনাফ-কক্সবাজার সিন্ডিকেট। উখিয়া ও কুতুপালংয়ে সরকারের নির্ধারিত শরণার্থী শিবির থাকলেও এখন তা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, বালুখালী থেকে শুরু করে কক্সবাজারের আনাচে-কানাচে এমনকি বাসাবাড়িতেও মানবিকতার টানের দোহাই দিয়ে ঠাঁই করে নিচ্ছে রোহিঙ্গারা। প্রশ্ন উঠেছে এ দেশের মানুষের মানবিকতাকে পুঁজি করে শেষ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবাস গড়ে তোলে কিনা রোহিঙ্গারা। এদিকে, বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের মোবাইল ও সিম ব্যবহার শুরু করেছে এসব রোহিঙ্গারা। প্রশ্ন উঠেছে, বায়োমেট্রিক সিম জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যতীত কিসের ভিত্তিতে তাদের কাছে বিক্রয় করা হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরদের দোকানিরা বিভিন্ন নামে এসব সিম বিক্রি করলেও আগামীতে রোহিঙ্গাদের অপরাধের কারণে নিবন্ধিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
×