ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যৌতুকের জন্য এক সন্তানের জননীকে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

যৌতুকের জন্য এক সন্তানের জননীকে নির্যাতন

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ২০ সেপ্টেম্বর ॥ আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামের এক সন্তানের জননী রিপা আকতারকে স্বামী হানিফ হাওলাদার যৌতুক না পেয়ে ঘরের মধ্যে দু’দিন আটকে রেখে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গৃহবধূর লজ্জাস্থানসহ সারা শরীরে সুই দিয়ে ফোঁড়া দিয়েছে। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে গৃহবধূ রিপা আকতারকে মঙ্গলবার রাতে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৫ মে উপজেলার খুড়িয়ার খেয়াঘাট গ্রামের মৃত তোফাজ্জেল হাওলাদারের মেয়ে রিপার সঙ্গে সেকান্দারখালী গ্রামের হারুন হাওলাদারের ছেলে হানিফের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় চাহিদামতো গলার চেইন, কানের জিনিস ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দেয়া হয়। বিয়ের এক বছর পরে তাদের কোলজুড়ে আসে একটি পুত্র সন্তান হাবিবুর রহমান (৪ মাস)। সন্তান হওয়ার পরে যৌতুকলোভী স্বামী হানিফ স্ত্রী রিপার ওপর নির্যাতন বাড়িয়ে দেয়। ব্যবসা করবে বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই সময় ৫০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। পিতৃহারা রিপা বাবার বাড়ি থেকে চাহিদামতো টাকা এনে দেয়। গত শুক্রবার স্বামী হানিফ হাওলাদার স্ত্রীকে আবার বাবার বাড়ি থেকে ব্যবসা করবে বলে দু’লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। রিপা এ টাকা দিতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয় স্বামী হানিফ হাওলাদার। রবিবার রাতে রিপার দু’পা, হাত রশি ও মুখম-ল ওড়না দিয়ে বেঁধে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে পেটাতে থাকে। তারপর আড়া থেকে মাটিতে নামিয়ে পুনরায় পেটাতে থাকে এবং সুই দিয়ে লজ্জাস্থানসহ সারা শরীরের ফোঁড়া দেয়। নির্যাতনের একপর্যায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। দু’ঘণ্টা পরে জ্ঞান ফিরে আসলে আবার পাষ- স্বামী প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ চাপ দেয়। এভাবে রাতভর চলে নির্যাতন। সোমবার বিকেলে প্রতিবেশীর মাধ্যমে খবর পেয়ে মা রিনা বেগম মেয়ের বাড়িতে যায়। মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে মেয়েকে নিয়ে আসতে চাইলেও জামাতা আসতে দেয়নি। এ অবস্থায় দু’দিন আটকে রেখে খাবার ও চিকিৎসা দেয়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিপার চাচা আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও হানিফের মামা মোশাররফ হাওলাদারকে নিয়ে রিপাকে উদ্ধার করে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
×