ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ রশিদ আলম

রোহিঙ্গা নির্যাতনের শেষ কোথায়

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা নির্যাতনের শেষ কোথায়

বিশ্ববাসীর উদ্বেগকে উপেক্ষা করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকার গত এক মাস থেকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু জেলায় ১৭৬টি গ্রামে অগ্নি সংযোগ, ধর্ষণ ও হত্যা করে যাচ্ছে। যাদের হত্যা করছে তাদের পরিচয় রোহিঙ্গা মুসলমান। ছয় শত বছর থেকে রোহিঙ্গারা আরাকান প্রদেশের বৈধ বাসিন্দা। এক সময়ে তাদের নাগরিক অধিকার থাকলেও যখন থেকে আরাকানে বৌদ্ধ শাসকরা শাসন কার্য পরিচালনা শুরু করলেন, তখন থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অত্যাচার শুরু হয়। এই অত্যাচারের শেষ কোথায় কারও জানা নেই। নেউইন যখন বার্মার শাসনভার গ্রহণ করলেন তখন থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অত্যাচারের সীমা লঙ্ঘন করা শুরু করে। এরপর থেকে এই রোহিঙ্গা মুসলমানরা তাদের নাগরিক অধিকার হারিয়ে ফেলেন। আরাকান প্রদেশে মংডু জেলায় কোন স্কুল, কলেজ এ রোহিঙ্গা মুসলমানদের ভর্তি করা হয় না। সরকারী চাকরি তারা পান না, সরকারী চিকিৎসা সেবা থেকে তারা বঞ্চিত। এমন একটি দেশে এই রোহিঙ্গারা নির্যাতিত হচ্ছেন যে দেশের আলোচিত ব্যক্তিত্ব আউং সান সুচি নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন নির্যাতিত হওয়ার পর। তিনি জানেন নির্যাতনের যন্ত্রণা। কিন্তু তার দল ক্ষমতায় আসার পর রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সর্বকালের সেরা নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এই নির্যাতনের শেষ কি হবে না? আমাদের বন্ধু দেশ চীনের ভূমিকা আমাদের ব্যথিত করেছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, পুলিশ, বৌদ্ধ সন্যাসী ও রাখাইন নর-নারী প্রায় দুই হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান ও হিন্দুদের হত্যা করেছে। হিন্দুদের হত্যা করার মূল কারণ তারা রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। রাখাইন প্রদেশে চীন দুই শ’ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। সেখানে মিয়ানমারের গ্যাসের খনি রয়েছে, তাই চীন গ্যাস উত্তোলন করার পর নিজের দেশের চাহিদা মেটাবে, সেই সঙ্গে মিয়ানমার সরকার সেখানে একটি শক্তিশালী সেনাঘাঁটি করার পরিকল্পনা করেছে। অনেক আগে থেকেই রাখাইন প্রদেশে মিয়ানমারের বিমান ঘাঁটি রয়েছে। এখানে রাশিয়ার তৈরি বিশটি ২৯ জঙ্গী বিমান ও চীনের তৈরি ১২টি জেএফ-৭, জঙ্গী বিমান মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া এই ঘাঁটিতে ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী হেলিকপ্টার ও পরিবহন হেলিকপ্টার রয়েছে। বাংলাদেশকে টার্গেট করে মিয়ানমার এই ঘাঁটিটি তৈরি করেছে। আমাদের নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে সর্বোচ্ছ শক্তিতে বলিয়ান করতে হবে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমরাস্ত্র আমাদের তিন বাহিনীকে দিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রতিবেশী কোন দেশ ষড়যন্ত্র করছে কিনা সেইদিকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। সকল আন্তর্জাতিক ফোরামে বিষয়টি তুলে ধরতে হবে। আমরা আশা করি বিশ্ববিবেক অসহায় রোহিঙ্গা মুসলমানসহ পৃথিবীর সব নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াবে। মিরপুর, ঢাকা থেকে
×