ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শাহীন রেজা নূর

বিশ্ব অর্থ-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে এশিয়া

প্রকাশিত: ০৩:০৪, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বিশ্ব অর্থ-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে এশিয়া

বিশ্বের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে চলেছে এশিয়া। বিশেষত পূর্ব এশিয়াতেই যেন চলছে এই মহাযজ্ঞ। গোটা ইন্দোচীনে তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি দেশেও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রবল হাওয়া বইতে দেখা যাচ্ছে। মোদ্দাকথা, এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের অর্থনৈতিক ও সামরিক আধিপত্য আজ চীনের এখতিয়ারে চলে যাবার উপক্রম। আর এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য সকলেই উদ্বিগ্ন। ব্যবসা-বাণিজ্য আজকের পৃথিবীতে জাতিতে জাতিতে সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে যে কোন উপায়ে ব্যবসায়ী স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা যেন সাধারণ ব্যাপার। যা হোক, চীন তার এই শ্রেষ্ঠত্ব হাসিলের জন্য দ্রুত বেগে যে এগিয়ে যাচ্ছে এ কথা সকলেই স্বীকার করে। তবে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি অর্জনের পথে চীনের সরকার অনেক ক্ষেত্রেই প্রচলিত আন্তর্জাতিক রীতিনীতির উপেক্ষা করে চলেছে এমন অভিযোগও ইদানীং জোরেশোরে উঠতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে এবং পত্রপত্রিকায়। কে না জানে, চীনের অন্যতম প্রধান মিত্র হচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সাম্প্রতিককালে চীন যেসব অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও সহযোগিতার উদ্যোগ নিয়েছে তা নিয়ে ভারতসহ কিছু দেশে বেশ উৎকণ্ঠা তৈরি হচ্ছে বৈকি! বিশেষ করে চীনা অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি কথিত হুমকি হয়ে দেখা দেবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানেও চীনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ে সেখানকার কোন কোন মহলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হচ্ছে। এখানে শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা বন্দর নির্মাণকে ঘিরে চীনা সহযোগিতা শ্রীলঙ্কার সার্বভৌমত্ব বিপন্নের পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ এবং কঙ্গো, নাইজিরিয়াসহ আফ্রিকা ও এশিয়ার আরও কিছু দেশে অনুরূপ পরিস্থিতি দেখা দেয়ায় পাকিস্তানের বিভিন্ন মহলে এই চীনা সহযোগিতার বিষয়ে উদ্বেগ অস্বাভাবিক নয়। চীন তার বাজারসমূহের ওপর পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাকল্পে এশিয়াজুড়ে ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড নামক যে অবকাঠামো ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে তন্মধ্যে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর অন্যতম। ঐ ব্যবস্থাটি গড়ে তুলতে চীন যে ৯ শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় বরাদ্দ রেখেছে তার মধ্যে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তুলতে ব্যয় করবে ৬০ বিলিয়ন ডলার। আর এই বিপুল অর্থের অর্ধেকেরও বেশি ব্যয় করা হবে পাকিস্তানের বিদ্যুত খাতের উন্নয়নে। অবশ্য এরপরও সেখানকার সড়ক-মহাসড়ক, সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, ফাইবার অপটিক ক্যাবল, সিমেন্ট কারখানা, কৃষিভিত্তিক শিল্প ও পর্যটনের উন্নয়নকল্পে থাকবে অজস্র টাকা। পাকিস্তানের নদী-বিধৌত এক বিশাল এলাকায় এই উন্নয়ন যজ্ঞ চালাবার পরিকল্পনা পেশ করেছে চীনা উন্নয়ন ব্যাংক। এ ব্যাপারে একটি খসড়া নকশাপত্র চীনা সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে তারা। এতে করে দেখা যায়, সিন্ধু নদের কর্দমাক্ত ব-দ্বীপ অঞ্চল থেকে শুরু করে বেলুচিস্তানের অনুর্বর উপকূল পর্যন্ত এই কর্মযজ্ঞের বিস্তার ঘটবে। এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে গড়ে তোলা হবে বিনোদনের এক মায়াবী জগত! বিলাসবহুল সব হোটেল, ওয়াটার পার্ক, গল্ফ ময়দান, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, প্রমোদতরীর পোতাশ্রয়, নাইট ক্লাব ইত্যাদি দিয়ে ভরে তোলা হবে ঐ এলাকা। ফলে এতকাল যেসব অবসরভোগী ব্যক্তি খেজুর বৃক্ষের ছায়াবীথিকা ঘেরা পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে প্রমোদ ভ্রমণে যেত তাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হবে এখন পাকিস্তানের এই প্রস্তাবিত আনন্দধামের প্রতি। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই বিনোদনখচিত নক্ষত্রপুঞ্জ আবার গড়ে উঠবে ইসলামী কৃষ্টি, ঐতিহাসিক সংস্কৃতিধারা, লোকজ সংস্কৃতি আর নৌ-সংস্কৃতির সমন্বয়ে। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে যখন তার পুঁজি বিনিয়োগের অনুপাত জিডিপির শতকরা ১৫ ভাগ অর্জনের জন্য যারপরনাই প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে, ঠিক তখনই সেখানে এমন এক সময়ে চীনের ৬০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি আসায় এটি তাদের কাছে ভাগ্যের বরই বলা চলে। উল্লেখ্য, প্রতিবেশী বাংলাদেশে এই অনুপাত সাম্প্রতিককালে শতকরা ২৮ আর ভারতে শতকরা ৩০ ভাগ। যাই হোক, পাকিস্তানকে প্রদেয় এই চীনা সাহায্য যে কেবল তাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা বা সংকটাপন্ন বিদ্যুত খাতকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানোর উদ্দেশ্যেই দেয়া হবে তা কিন্তু নয়। বরং দেখা যাবে এর মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে ভারতের বিরুদ্ধে এক ধরনের কৌশলগত বীমা পলিসিও বিদ্যমান! কে না জানে, চীন দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানে অস্ত্রের প্রধান যোগানদার। তাছাড়া পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচীর জন্য যাবতীয় কূটনৈতিক ও কারিগরি আবরণ তৈরি করে একে সংগোপনে এগিয়ে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে সর্বতো-সহযোগিতা করে এসেছে চীন। চীনা কর্মকর্তারা প্রায়শই বেশ গর্বের সুরেই পাকিস্তানকে তাদের সকল ঋতুর পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকেন। অন্যদিকে, পাকিস্তানের জন্মের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এ যাবত ৭৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করেও পাকিস্তানের কাছ থেকে এই ধরনের বন্ধুত্বের মর্যাদা লাভ করতে পারেনি। গত মে মাসে পাকিস্তানের ডন পত্রিকা চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর বিষয়ক সার্বিক পরিকল্পনার বাছাইকৃত কিছু অংশ তুলে ধরলে তা বহু পাঠককে হতোদ্যম করে দেয়। এই করিডর পরিকল্পনার মধ্যে যেসব বিষয় তাদের ভগ্নমনোরথ করেছে বলে জানা যায় তন্মধ্যে একটি হচ্ছে পাকিস্তানের কৃষিখাতে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্যতম একটি প্রধান বাহু হিসেবে পরিচিত জিনজিয়াং প্রোডাকশন এ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের ব্যাপক ভূমিকা পালনের প্রস্তাবনা। উল্লেখ্য, পঞ্চাশের দশক থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি ভারতের পশ্চিম সীমান্তে হান বংশোদ্ভূত চীনাদের বসতি স্থাপনের কাজ করে চলেছে। এটি প্রশাসনিকভাবে স্বায়ত্তশাসিত বলে পরিচিত। সেখানকার শহরগুলো এবং বড় বড় ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে তারা এবং প্রায় ৩০ লাখ লোকের ভাল-মন্দ দেখার ভার এর ওপর ন্যস্ত। এই জনগোষ্ঠীকে আবার সামরিক ইউনিটের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে। অন্যদিকে, সেখানকার তুর্কীভাষী মুসলিম একটি উপজাতির মধ্যে খানিক উত্তেজনা দেখা দিলেই দ্রুত সামরিক শক্তি প্রয়োগে তাদের দমন করা হয়ে থাকে। যাই হোক, কয়লা ও গ্যাসের চাইতে সৌরবিদ্যুত অনেক সস্তা এখন। এমন অবস্থায় পাকিস্তানে চীন কেন এর পরিবর্তে প্রচলিত থার্মাল প্লান্টে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করছে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে রয়েছে ব্যাপক গুঞ্জন। করাচীর পশ্চিমে ১১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন যে দুই দুইটি পারমাণবিক চুল্লী চীন স্থাপন করতে চলেছে তাতে পরিবেশ দূষণ বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। পৃথিবীর অন্যতম একটি প্রধান ঘনবসতিপূর্ণ ও বড় শহর করাচীর মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্র তীরবর্তী বিশাল এলাকায় কমপ্লেক্সদ্বয় গড়ে তোলা হচ্ছে। এই বিশেষ ডিজাইনের পারমাণবিক চুল্লী এত বিরাট আকৃতিতে ইতোপূর্বে কখনোই নির্মিত হয়নি। সবচাইতে বড় কথা, চুল্লী দুটি এমন স্থানে নির্মিত হচ্ছে যা কি-না ভূ-তাত্ত্বিক বিবেচনায় অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ ও ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ১৯৪৫ সালে এর নিকটবর্তী এলাকায় সুনামিতে ৪ সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছিল। এদিকে, স্থানীয় কারখানার মালিকরা ইতোমধ্যেই অভিযোগ করেছে চীনের সঙ্গে সম্পাদিত মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি তাদের নিজস্ব পণ্যগুলোকে এখন প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে আর থাকতে দিচ্ছে না। চীনের এই জাতীয় অর্থায়নের কারণে প্রকারান্তরে পাকিস্তান চীনের বন্ধকী সম্পত্তি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। চীনের অর্থনৈতিক সাহায্যলাভকারী অন্যান্য দেশ, যেমনÑ শ্রীলঙ্কা চীনের নানা শর্তের আবর্তে পড়ে এখন ঋণ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। করাচীভিত্তিক একজন উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ কায়সার বাঙালী বলেছেন, চীন থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অর্থ সাহায্য প্রাপ্তির চার থেকে পাঁচ বছরের মাথায়ই তা ফেরত দানের প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়। তিনি বলেন, ‘এ তো দেখছি উপনিবেশ স্থাপনের নীলনক্সারই একটি অংশ।’ অবিশ্যি পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অর্থনীতিবিদদের এ জাতীয় আশঙ্কাকে প্রত্যাখ্যান করে জানাচ্ছেন যে, ২০১৫ সালে ডন পত্রিকায় এই সাহায্য বিষয়ে যেসব দলিল ফাঁস করে দেয়া হয়েছিল তা কর্তৃপক্ষ পুনঃপর্যালোচনা করার পর ঐ পারমাণবিক চুল্লী বিষয়ে সবরকমের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। এদিকে পাক বিনিয়োগমন্ত্রী মিফ্তা ইসমাইল বলেন, ‘আমরা কোনক্রমেই আমাদের ভূমি চীনের কাছে হস্তান্তর করব না।’ ভারত অবশ্য তার প্রতিবেশী দেশ চীনের এ ধরনের গতিবিধিতে নিরুৎসাহ বোধ করছে। অবশ্য ভারতের কর্মকর্তাদের কেউ কেউ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র যেমন পাকিস্তানের কাছ থেকে হোঁচট খেয়েছে, চীনের জন্যও তেমনটা অপেক্ষা করছে। কেউ কেউ আবার এই ধারণা পোষণ করেন যে, চীন এখনও পাকিস্তানের ভেতরকার জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের ব্যাপকতা সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে কিছু আঁচ করতে পারেনি। যখন পারবে তখন দেখা যাবে যে, দ্রুতই তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। চীনের আঞ্চলিক উদ্যোগগুলোর ব্যাপারে ভারত কূটনৈতিকভাবে একটু কড়া লাইনই নিয়েছে দেখা যায়। ভারতের মতে, চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের রাস্তাটি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বিতর্কিত এলাকার মধ্য দিয়ে নির্মিত হচ্ছে। ফলে এটি খুব সহজ হবে না নিশ্চয়ই। ভারত ইতোমধ্যে চীনের প্যান-এশীয় বেল্ট ও রোড উদ্যোগটির কঠোর সমালোচনা করেছে। ভারতের মতে, এই উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট এলাকার ছোট ছোট দেশগুলোকে ঋণের জালে জড়িয়ে ফেলবে। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর থেকে চীন-ভারত সম্পর্ক এ অবধি ঠা-া, তবে শান্ত অবস্থায় রয়েছে। অবশ্য উভয়ই পরস্পরের বিরুদ্ধে নিজ ভূখ- দখলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে থাকে। বলাই বাহুল্য, তিব্বতী নেতা দালাইলামাকে ভারত আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ায় চীন ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ রয়েছে। এ কারণে চীন কূটনৈতিকভাবেÑ বিশেষ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হবার সুবাদে ভারতের জন্য নানা প্রকার বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করে থাকে বলে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন। ভারতের অর্থনীতি অত্যন্ত দ্রুত বেগে এগিয়ে যাচ্ছে, জনসংখ্যাও চীনকে ছুঁই ছুঁই অবস্থায়, কিন্তু তা সত্ত্বেও চীন ভারতকে ‘দরিদ্র ও রোগা’ হিসেবে দেখে থাকে। সে যাই হোক, এ কথাও সত্যি যে, দুর্ভেদ্য হিমালয় পর্বতমালা চীন ও ভারতের মধ্যকার বৈরিতাকে অনেকাংশে ঠেকিয়ে রাখে! আবার দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ বছরে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার। এটি পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যের পাঁচগুণ বেশি। চীন হচ্ছে ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। এমন এক পরিস্থিতিতে ভারতকেও দক্ষিণ এশিয়ায় নিজ প্রভাব বজায় রাখতে কিছু পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। যেমন বাংলাদেশের রাস্তাঘাট-সেতু, নেপালে জলবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ আর শ্রীলঙ্কার বন্দর ও রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে। তবে এ কথাও ঠিক যে, চীনের বিপুল ধনভা-ারের সঙ্গে এঁটে ওঠা ভারতের জন্য অত্যন্ত দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনের জিডিপি ভারতের চাইতে পাঁচগুণ বেশি। গত বছর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বাংলাদেশ সফরকালে ২৪ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদানের ঘোষণা করার পর ভারতও বাংলাদেশের জন্য কিছু নতুন সাহায্য প্যাকেজ নিয়ে এগিয়ে আসে। এসবের আলোকে বলা যায় যে, আজকের দুনিয়ায় ‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী’ কথাটি যেন নতুন তাৎপর্য নিয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল বা কম উন্নত দেশগুলোর কাছে হাজির হচ্ছে। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক
×