ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ তিনগুণ বৃদ্ধির বিধান রেখে সংসদে বিল পাস

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ তিনগুণ বৃদ্ধির বিধান রেখে সংসদে বিল পাস

সংসদ রিপোর্টার ॥ জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ তিনগুণ বৃদ্ধি করে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন ২০১৭ কন্ঠভোটে পাস করেছে সংসদ। ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে অধিগ্রহণের সময়কার ১২ মাসের জমি কেনাবেচার দলিলের গড় বিবেচনায় নিয়ে জমির দাম নির্ধারণ করার বিধান আইনে যুক্ত করা হয় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বিলটি পাস হয়। বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ। এরআগে বিলের ওপর আনীত সংশোধনী ও বছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাবগুলো কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিলে বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষ জমি অধিগ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, সরকারি প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণ করলে বাজারদরের ওপর অতিরিক্ত ২০০ ভাগ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বেসরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করলে বাজার দরের ওপর অতিরিক্ত ৩০০ ভাগ দাম দিতে হবে। বিলে বলা হয়েছে, অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৫০ বিঘা বা ১৬ দশমিক ৫০ একরের বেশী হলে জেলা প্রশাসকে তার প্রতিবেদন ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। কম হলে ভূমি কমিশনে পাঠাতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থান নির্বাচনের পর, জেলা প্রশাসক উক্ত সম্পত্তি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে মর্মে নোটি জারি করবেন। নোটিশ জারির ১৫ দিনের মধ্যে আপত্তি দাখিল করতে হবে। ১৫ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সে আপত্তি নিস্পত্তি করার প্রতিবেদন তৈরীর জন্য সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। বিলে আরো বলা হয়েছে, ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান এবং শ্মশান হিসেবে ব্যবহৃত কোন জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। তবে জনস্বার্থে একান্ত অপরিহার্য হলে সেসব জমিও শর্ত সাপেক্ষ অধিগ্রহণ করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে এসব স্থাপনা স্থানান্তর ও পুণ:নিমার্ণ করে দেওয়ার শর্ত যোগ করা হয়েছে। এছাড়া আরবিট্রেটর নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত আইনে যুগ্ম-জেলা জজ বা সাব-জজ পর্যায়ের কর্মকর্তাকে নিয়োগ এবং আপিলে জেলা জজ পর্যায়ের কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান করা হয়েছে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের যুক্তিসংগত পরিমাণে ক্ষতিপূরণের বিধান না থাকায় ‘স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন-২০১৭’ সময়োপযোগী বিধিবিধান ও ক্ষতিপূরণের পরিমান বৃদ্ধি অন্তর্ভূক্ত করে আইন প্রণয়ন আবশ্যক। ১৯৮২ সালের ‘এ্যাকিউজিশন এ্যান্ড রিকিউজিশন অফ ইমমুভেবল প্রোপার্টি অর্ডিন্যান্স’ বাতিল করে নতুন আইন করতে বিলটি সংসদে আনা হয়েছে। সামরিক শাসনের সময় জারি করা অধ্যাদেশটি ২০১১ সালে উচ্চ আদালতের নির্দেশে বাতিল যায়। তার প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ৭নং আইন দ্বারা উক্ত আইনের কার্যকারিতা অব্যাহত রাখা হয়। এখন উক্ত অধ্যাদেশটি রহিত করে বাংলা ভাষায় নতুন এই আইন করা হয়েছে।
×