ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জামালপুরে তীব্র যানজটে শহরবাসীর দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ২৩:৫৪, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

জামালপুরে তীব্র যানজটে শহরবাসীর দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ তীব্র যানজটের কারণে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত স্থবির হয়ে পড়ে জামালপুর পৌর শহর। ফলে সকাল থেকে কর্মমুখী মানুষেরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। নিয়ন্ত্রণহীন ইজিবাইকের কারণে প্রতিদিনই এই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে শহরবাসীর অভিযোগ। জামালপুর শহরে তিন হাজার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচলের লাইসেন্স দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু চলাচল করছে অন্ততপক্ষে ১০ হাজার। শহরের বাইরের ইজিবাইক শহরে ঢুকতে পৌর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধা দিয়েও যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় শহরের বাসিন্দাদের। সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের কেন্দ্রীয় বাস টারমিনাল থেকে জেনারেল হাসপাতাল পর্যন্ত প্রধান সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টার পর্যন্ত তীব্র যানজট লেগেই থাকে। প্রায়ই সব জায়গায় চোখে পড়ে শুধু ইজিবাইক। পুরো সড়ক জুড়ে ইজিবাইক। এর মধ্যে এ সড়ক দিয়ে দূরপাল্লার বাস-ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এতে শহরের রেল গেটপাড়, স্টেশন বাজার মোড়, দয়াময়ী মোড়, কথাকলি মার্কেট এলাকা, তমালতলা, বাইপাস মোড়, সকাল বাজার বড় মসজিদ মোড়, আদালতের সামনে ও জেনারেল হাসপাতালের সামনে প্রায় সব সময় তীব্র যানজট লেগেই থাকে। জামালপুর পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সাল থেকে নিয়ন্ত্রণহীন ইজিবাইক জামালপুর শহরে চলাচল শুরু করে। গত সাড়ে ছয় বছরের ইজিবাইকের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর সিদ্ধান্ত হয় পৌর শহরে লাইসেন্সকৃত তিন হাজার ইজিবাইক চলাচল করবে। সেই লক্ষ্যে পৌর কর্তৃপক্ষ তিন হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স দিয়েছেন। বাকি ৭ হাজার ইজিবাইক শহরে চলাচল বন্ধ করতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিদিন তীব্র যানজটের পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে। পৌর শহরের সরদারপাড়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, যানজটের কাছে আমরা শহরবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছি। আন্ত:নগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে ইসলামপুর উপজেলায় যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বের হই। কিন্তু সরদারপাড়া থেকে জামালপুর রেল স্টেশন মাত্র পাঁচ মিনিটের পথ হলেও যানজটের কারণে ৩০ মিনিটেও গিয়ে ট্রেনটি ধরতে পারলাম না। নিয়ন্ত্রণহীন ইজিবাইকের কারণে প্রতিদিন শত শত মানুষ এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শহরের জিগাতলা এলাকার শিকদার আলী বলেন, যানজটের কারণে ঘর থেকে বের হতেই মন চায় না। কয়েক হাজার ইজিবাইক দুই-তিন লাইন করে সড়ক দখল করে রাখেন। গেটপাড়া থেকে সকাল বাজার এলাকায় যেতে তীব্র যানজটের কারণে কয়েক ঘন্টা সময় লেগে যাবে। আগে এই এলাকায় যেতে সময় লাগত ১০ মিনিট। অনেক ইজিবাইক থাকায় এ যানজট হচ্ছে। কিন্তু ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। জামালপুর পৌর সভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম বলেন, বড় সমস্যা শহরের প্রধান সড়ক একটি। শহরের চলাচলের জন্য বাইপাস সড়ক নির্মাণের পরিকল্প করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পাশ দিয়ে একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ইজিবাইক চালকেরা খুব দরিদ্র। অভিযান চালিয়ে ইজিবাইক আটক করলেও কান্নাকাটি শুরু করেন। আটক ইজিবাইক না ছাড়লে চালকেরা আন্দোলনে নামে। সম্প্রতি ইজিবাইক আটক করা হয়েছিল। চালকেরা পৌরসভার কার্যালয় ঘেরাও করেছিল। তবে আমরা বসে নাই। যানজট নিয়ন্ত্রণে প্রধান সড়ক বড় করার পরিকল্পনা চলছে।
×