ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে ৫ হাজার ১৮০ কোটি টাকার দশ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

একনেকে ৫ হাজার ১৮০ কোটি টাকার দশ প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারা দেশের সামাজিক, ধর্মীয় এবং খেলাধুলা বিষয়ক অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর আওতায় সিটি কর্পোরেশন এলাকা বাদে দেশের প্রতিটি উপজেলার মসজিদ, মন্দির, চার্চ, প্যাগোডা, গুরুদুয়ারা, কবরস্থান, শ্মশান, ঈদগাহ এবং খেলার মাঠ সংস্কারে ১ কোটি টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ‘সার্বজনীন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক এ প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৬৬৬ কোটি টাকা। বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এটিসহ মোট ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। অনুমোদিত ১০টি প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১৮০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্প বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মন্ত্রী জানান, মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারী তহবিল (জিওবি) হতে প্রায় ৪ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল হতে প্রায় ২০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা হতে প্রায় ৬৯৯ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। মন্ত্রী বলেন, অনুমোদন পাওয়া সার্বজনীন সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের মাধ্যমে। প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রায় ১০ হাজার সামাজিক প্রতিষ্ঠানের অবকঠামো উন্নয়ন, সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হবে। সংসদ সদস্যদের সুপারিশে এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মতামত, স্থানীয় জনগণের চাহিদা এবং প্রতিষ্ঠানের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের অর্থ সাংসদরা সরাসরি বরাদ্দ পাবেন না। তবে তাদের দেয়া তালিকা অনুযায়ী, কাজ করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এক অর্থে সরকারের সব প্রকল্পই নির্বাচনী প্রকল্প। কারণ সরকারে থাকতে হলে জনগণের মন জয় করেই থাকতে হয়। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী, প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, এ প্রকল্পে সিটি কর্পোরেশন এলাকা বাদে প্রত্যেক উপজেলার জন্য এক কোটি টাকা করে দেশের ৪৯১টি উপজেলার জন্য ৪৯১ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া পূর্ত কাজের জন্য থোক বরাদ্দ হিসেবে ১০৯ কোটি টাকা রাখার কথা বলা হয়েছে প্রকল্প প্রস্তাবে। নির্বাচিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে। মন্ত্রী বলেন, সভায় ‘সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ‘বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প (৩য় পর্যায়) অনুমোদন পেয়েছে। দুটি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা এবং ৯৮৬ কোটি টাকা। প্রকল্পগুলোর আওতায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ব্রিজ নির্মাণ এবং সংস্কার করা হবে। মন্ত্রী জানান, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রী যতটুকু সম্ভব জলাশয় এবং বনায়ন সৃষ্টির নির্দেশনা দিয়েছেন। অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্প ‘চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার ৭২ নম্বর পোল্ডারে ভাঙ্গনপ্রবণ এলাকায় পুনর্বাসন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ২৩টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৯৯২ কোটি টাকা। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে পরিচ্ছন্নতা কর্মিনিবাস নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। আরিচা-ঘিওর-দৌলতপুর-টাঙ্গাইল সড়কে ১০৩ দশমিক ৪৩ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা। সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপন (২য় সংশোধিত প্রকল্প), ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯৮ কোটি টাকা। যমুনা নদীর ভাঙ্গন থেকে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় খুদবান্দি, সিংড়াবাড়ি ও শুভগাছা এলাকা রক্ষা প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৪৬৫ কোটি টাকা এবং গোপালগঞ্জে বহুতল বিশিষ্ট সমন্বিত সরকারী অফিস নির্মাণ প্রকল্প, এ জন্য ব্যয় হবে ৯৮ কোটি টাকা।
×