ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আরাফাত শাহীন

বন্ধ হোক নারী নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বন্ধ হোক নারী নির্যাতন

বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে নারী নির্যাতনের বীভৎস চিত্র। যে কোন সচেতন মানুষ এ চিত্র দেখে শিউরে উঠতে বাধ্য হন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০১১ এর তথ্য মতে, বাংলাদেশে বিবাহিত নারীদের শতকরা ৮৭ জন কোন না কোন সময় স্বামীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। এই সংখ্যা যে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বা নারী নির্যাতনের ব্যাপকতা ও ধরন ভয়াবহ। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পদে পদে নারীকে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নারী নির্যাতনের মাত্রা যে কোন সময়ের চেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ধর্ষণের পরিমাণ অতীতের সমস্ত রেকর্ড অতিক্রম করেছে। নারী নির্যাতনের লাগাম যদি এখনই টেনে ধরা না যায় তাহলে নিশ্চিত ভয়াবহ সমস্যার আবর্তে নিক্ষিপ্ত হবে বাংলাদেশ তাতে কোন সন্দেহ নেই। চলতি বছরের প্রথম দিকের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের গণপরিবহনে ৮৭% নারী হয়রানির শিকার হন। এ তথ্য আমাদের জন্য অবশ্যই ভীতি জাগানিয়া। নারীর জন্য কোন জায়গাই আজ নিরাপদ নয়। চলার পথ থেকে শুরু করে অফিস-আদালত, এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও আজ নারীর জন্য নিরাপদ নয়। সেখানেও মানুষরূপী হায়েনারা ওঁৎ পেতে বসে থাকে। ওয়ার্ল্ড হেলথ ওর্গানাইজেশন (হু) এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন একজন নারী। পূর্বে নারী নির্যাতনের ঘটনা রাতের আঁধারে ঘটলেও বর্তমান সময়ে প্রকাশ্য দিবালোকেই এমন নৃশংস ঘটনা অহরহ ঘটে চলেছে। সিলেটের খাদিজা আক্তার নার্গিসকে কী নির্মমভাবে চাপাতির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছিল তা আমরা সকলে প্রত্যক্ষ করেছি। এই যে নারীর প্রতি সহিংসতা এবং ধর্ষণের ঘটনা দিনের পর দিন শুধু বেড়েই চলেছে। এর কারণ কী? ওয়ার্ল্ড হেলথ ওর্গানাইজেশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, রাজনৈতিক প্রভাব ও সামাজিক নেতিবাচক মনোভাবের কারণে একের পর এক নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে। প্রকৃত কারণ হলো, যারা এ সমস্ত নৃশংস ঘটিয়ে থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা হয়ে থাকে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ। অধিকাংশ সময় আইনের নানা ফাঁক-ফোকর গলে তারা বিচারের হাত থেকে রেহাই পেয়ে যায়। ফলে সুযোগ সন্ধানীরা আরও বেপরোয়া হয়ে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যেতে থাকে। শিশু ও নারী নির্যাতনের ব্যাপারে বাংলাদেশের আইন আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলের সজাগ দৃষ্টি দেওয়া জরুরী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×