ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অবৈধভাবে আমদানিকৃত মোটরসাইকেলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব

প্রকাশিত: ০৩:০৬, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

অবৈধভাবে আমদানিকৃত মোটরসাইকেলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে অবৈধভাবে আমদানিকৃত মোটরসাইকেলে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ ভোক্তারা। আর আমদানি শুল্ক কম দেখিয়ে আনা এসব মোটরসাইকেলের কারণে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। বাড়ছে নিরাপত্তা ঝুঁকিও। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে দেশে আড়াই লাখ মোটরসাইকেল আমদানি হয়। পরের ২০১০-১১ অর্থবছরেও একই পরিমাণ মোটরসাইকেল দেশে প্রবেশ করে। তবে সর্বশেষ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিবছর বৈধপথে বড় এই সংখ্যাটি ছাড়াও অবৈধভাবেও মোটরসাইকেল আমদানি হচ্ছে। এতে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব। বাংলাদেশ মোটরসাইকলে এসেম্বলারস এন্ড ম্যানুফ্যাকচারাস এসোসিয়েশন (বিএমএএমএ) তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০১৬ সালে বিপননকৃত মোটর সাইকেলের প্রায় ৮৬ শতাংশই আমদানিকৃত। আর ১৪ শতাংশ বাজার দখলে আছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ও রানারের। জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায় হারহামেশায় বিক্রি হচ্ছে অবৈধভাবে আমদানিকৃত মোটরসাইকেল। মগবাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় নাম সর্বস্ব এন্টারপ্রাইজ গড়ে উঠেছে। রাজধানীতে প্রতিষ্ঠিত একটি এন্টারপ্রাইজ সম্প্রতি ভারতের ডলফিন মোটরস থেকে ২৪ টি মোটরসাইকেল আমদানি করে। প্রতিটির জন্য যথাক্রমে ৮৫৫ ও ৯৬৫ ডলার আমদানি মূল্য প্রদর্শন করে শুল্ক প্রদান করে। প্রকৃতপক্ষে মোটর সাইকেলের প্রতিটি মূল্য যথাক্রমে ১০৬০ ও ১১৫০ ডলার। ফলে প্রায় ১২ হাজার ডলার রাজস্ব কম দিয়ে দেশের বাজারে প্রবেশ করেছে ২৪ টি মোটরসাইকেল। আবার ওই ব্রান্ডের মোটরসাইকেল আমদানির জন্য ওই এন্টারপ্রাইজটিও বৈধ নয়। ওই এন্টারপ্রাইজটির মতো নামে বেনামে অবৈধভাবে অজ¯্র মোটরসাইকেল বাংলাদেশে আসছে। এ প্রসঙ্গে বিএমএএমএ এর কোষাধ্যাক্ষ ও টিভিএস মোটরসাইকলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অব অপারেশন বিপ্লব কুমার বলেন, বৈধ আমদানিকারকরা সঠিক মূল্য প্রদর্শন করে দেড়শ শতাংশের বেশি শুল্ক প্রদান করে একটি মোটরসাইকেল আমদানি করা হয়। কিন্তু অবৈধ আমদানিকারকরা কম মূল্য দেখিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাকি দিচ্ছে অন্যদিকে ভোক্তাদের প্রতারিত হচ্ছে। পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রান্সপোর্ট) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, অবৈধ মোটরসাইকেলের আমদানি গত কয়েক বছরে বেশ বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন থানায় এ ধরনের প্রচুর মোটরসাইকেল জব্দ করা হচ্ছে। অনেক সময় অনুমোদনের চেয়ে বেশি গতির মোটরসাইকেলও আনা হচ্ছে। এসব মোটরসাইকেল দিয়ে অপরাধমূলক কাজে বেশি ব্যবহার করা হয়। আর পরবর্তীতে অপরাধমূলক কার্যক্রম হলে চিহ্নিত করতে অসুবিধায় পড়তে হয়। এজন্য পুলিশ বাহিনি এ বিষয়ে সবোর্চ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মিরপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শামসুল কবীর বলেন, সঠিক নিবন্ধন ছাড়া কোন মোটরসাইকেল রাস্তায় চলাটা বেআইনি। এজন্য যাচাই বাছাই করে নিবন্ধন করা হচ্ছে। আমধানিকৃত মোটরসাইকেল রেজিষ্ট্রেশনের ক্ষেত্রে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে চেসিস নাম্বারসহ অনান্য বিষয়গুলো চেক করা হয়। এতে অনেক সময় অবৈধ আমদানিকারকরা ধরা পড়েন।
×