নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁর মহাদেবপুরে সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষন ও চাকুরি দেয়ার নামে কলেজ ছাত্রীকে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় এক ভুয়া সাংবাদিককে গণধোলাই দিয়ে থানা পুলিশে সোর্পদ করেছে স্থানীয় জনতা। এ ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের মাছচত্বর এলাকায়।
পুলিশ জানায়, উপজেলা সদরের দুলালপাড়ার মৃত বছির উদ্দীনের ছেলে আব্দুল আজিজ মোবাইল ফোনে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের উত্তগ্রাম পূর্বপাড়ার মৃত মজিবর রহমানের মেয়ে নওগাঁ ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী লাকি খানমকে (২০) মুক্তখবর পত্রিকার জন্য উপজেলা পর্যায়ে ক্রাইম রির্পোটার নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানায়। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বের হয়ে আসতে ভুয়া সাংবাদিক আব্দুল আজিজের প্রস্তাবে ক্রাইম রির্পোটার হতে রাজি হয় লাকি খানম। লাকি খানমকে প্রলোভন দেয়া হয় ওই পত্রিকার ক্রাইম রির্পোটার নিয়োগ পাওয়ার পর তাকে প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা স্যালারি দেয়া হবে।
লাকি খানমের কাছ থেকে পত্রিকার ক্রাইম রির্পোটারের পরিচয়পত্র বাবদ ১২ হাজার টাকাও দাবী করে ওই ভুয়া সাংবাদিক। এছাড়াও লাকি খানমকে রাজশাহী এবং ঢাকায় সাংবাদিকতার ওপর ট্রেনিং নিতে পর্যায়ক্রমে তিন মাস থাকতে হবে বলে জানায় এ ভুয়া সাংবাদিক। পত্রিকার পরিচয়পত্র বাবদ এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আব্দুল আজিজ নিজেই ওই খরচের টাকা বহন করবে বলে মোবাইলে লাকি খানমকে জানায় এবং এদিন সন্ধ্যায় মহাদেবপুর ব্যাসষ্ট্যান্ডে আসতে বলে। তার কথামত লাকি খানম স্থানীয় বাসষ্ট্যান্ডে আসে এবং তার আত্মীয়স্বজনকে ওই সাংবাদিকের কথাগুলো জানায়।
এ সময় লাকি খানমের লোকজন স্থানীয় সাংবাদিকদের ডেকে নেন এবং তাদের এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নে এক পর্যায় আব্দুল আজিজ স্বীকার করেন তিনি কোন সাংবাদিক নয়। তিনি ভুল স্বীকার করে স্থানীয় লোকজনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে গণধোলাই দিয়ে থানা পুলিশের সোপর্দ করে। পুলিশ ধারনা করছে সাংবাদিক বানানোর নাম করে লাকি খানমকে কোন অসত উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ ঘটনায় মহাদেবপুর থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ভুয়া সাংবাদিক আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে এ রকম অভিযোগসহ নানা ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকান্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে। নওগাঁর পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।