ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সদ্য প্রকাশিত হয়েছে মারিয়া শারাপোভার আত্মজীবনী

প্রকাশিত: ০১:০২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সদ্য প্রকাশিত হয়েছে মারিয়া শারাপোভার আত্মজীবনী

অনলাইন ডেস্ক ॥ একটা সময় মনে হয়েছিল, তাঁদের দু’জনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা টেনিসকে অন্য একটা মাত্রা দেবে। কিন্তু ২০০৪ উইম্বলডন ফাইনালে সেরিনা উইলিয়ামসকে হারানোর পর থেকে সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর জমে ওঠেনি। কারণ শেষ ১৮টা ম্যাচে মারিয়া শারাপোভাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন সেরিনা। সেরিনা উইলিয়ামস নামটা যে তাঁকে কতটা যন্ত্রণা দেয়, কষ্ট দেয়, তাতিয়ে তোলে তা নিজের সদ্য প্রকাশিত আত্মজীবনী ‘আনস্টপেবল: মাই লাইফ সো ফার’-এ পরিষ্কার করে দিয়েছেন শারাপোভা। যে বইয়ের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হল মঙ্গলবার। যে বইয়ে উইলিয়ামস বোনেদের নিয়ে নিজের মনোভাব তুলে ধরেছেন তাঁদের চিরকালের ‘শত্রু’। ছ’বছর বয়সে রাশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন শারাপোভা। শুরু হয় টেনিস শিক্ষা। বারো বছর বয়সে শারাপোভার অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং করতে এসেছিলেন উইলিয়ামস বোনেরা। যাঁদের দেখতে ভিড় জমে গিয়েছিল। কিন্তু সেই ভিড়ের মধ্যে আরও একটা মুখ হয়ে থাকতে চাননি শারাপোভা। ‘‘আমি কখনওই চাইনি আমাকে দেখে কেউই ভাবুক যে ওদের আমি পুজো করছি। ওদের ভক্ত হয়ে পড়েছি। না, কখনওই সেটা চাইনি।’’ মেয়ের মনোভাব বুঝেই ইউরি শারাপোভ তাঁকে আড়ালে নিয়ে যান। যেখানে একা একা বসে দুই বোনের প্র্যাকটিস দেখেছিলেন শারাপোভা। আমি আড়াল থেকে বসে বসে ওদের দেখছিলাম। একা, অন্ধকারে। আর ওরা দু’জন খেলে চলেছিল।’’ এর তিন বছর পরে আবার সেরিনা উইলিয়ামসের সঙ্গে দেখা হয় রুশ টেনিস কন্যার। ২০০২ সালের উইম্বলডন বল ড্যান্স-এর আসরে। চ্যাম্পিয়ন সেরিনা বলরুমে ঢোকা মাত্র সবাই উঠে দাঁড়ান। ব্যতিক্রম ছিলেন শারাপোভা। ‘‘আমি উঠে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার শরীর যেন আটকে গিয়েছিল। ওই ভাবে বসে থেকেই সেরিনাকে দেখতে থাকি। মনের মধ্যে তখন একটা কথাই ঘুরছিল। মনে মনে বলছিলাম, এক দিন আমি তোমাকে দেখে নেবো।’’ সেরিনা বনাম শারাপোভা প্রথম হয় মায়ামিতে, ২০০৪ সালে। প্রথম লড়াইয়ে কী মনে হয়েছিল? শারাপোভা লিখেছিলেন, ‘‘টিভি-তে দেখে সেরিনা নিয়ে যে ধারণাটা হয়, সেটা কোর্টে ওর বিরুদ্ধে খেলতে নামলে কিন্তু পুরোপুরি ভেঙে যাবে। সামনাসামনি ওকে আরও লম্বা দেখায়, আরও বড় দেখায়। মোটা, চওড়া হাত। চওড়া পা। দেখলেই উল্টো দিকে থাকা যে কারও মনে ভয় ঢুকে যাবে।’’ একটা ঘটনার কথা নিজের বইয়ে তুলে ধরেছেন শারাপোভা। উইম্বলডন ফাইনাল ২০০৪। যে ফাইনালে সেরিনাকে হারিয়ে দেন শারাপোভা। এর পরের ঘটনা লকাররুমের। যখন ট্রফি জেতার পরে পোশাক বদলাচ্ছিলেন শারাপোভা। ‘‘আমি শুনতে পেলার সেরিনা কাঁদছে। ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। এমন ভাবে কাঁদছিল যে আমি ভয় পেয়ে যাই। তাড়াতাড়ি লকাররুম ছেড়ে বেরিয়ে যাই। সেরিনা জানত, আমি লকাররুমে ছিলাম। আমার মনে হয় ও তখন আমাকে ঘৃণা করছিল। একটা রোগা-পটকা মেয়ে ওকে হারিয়ে দেবে, এটা সেরিনা মেনে নিতে পারছিল না। ওই কান্নার দৃশ্য জীবনে ভুলতে পারব না।’’ এত শত্রুতা থাকলেও এখন সেরিনার বন্ধুই হতে চান শারাপোভা। কিন্তু মাশার সেই ইচ্ছে পূরণ হবে কি না বলবে সময়। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×