ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লালমনিরহাট সরকারী হাসপাতাল চলছে ১১জন চিকিৎসক দিয়ে

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

লালমনিরহাট সরকারী হাসপাতাল চলছে ১১জন চিকিৎসক দিয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট ॥ লালমনিরহাট ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসকের মঞ্জুরীকৃত পদ ৩৯ টি। বর্তমানে ১১ জন কর্মরত রয়েছে। ১১ জনের মধ্যে তত্বাবধায়ক এক জন, আট জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মাত্র দুই জন মেডিকেল অফিসার। দুই জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে এমারজেন্সীসহ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা প্রদান দূরূহ ব্যাপার বটে। কেননা ২৪ ঘন্টা এমারজেন্সী চালু রাখতে নুন্যতম পক্ষে পাঁচ জন মেডিকেল অফিসার অত্যাবশ্যক। বর্তমানে জেলার সিভিল সার্জনের অধিনে কর্মরত মেডিকেল অফিসার দিয়ে কোন রকমের জোড়াতালির মাধ্যমে হাসপাতাল চলছে। তাছাড়া এই হাসপাতালে ১৩ জন স্টাফ নার্স, ৫ জন সহকারী নার্স সহ অন্যান্য পদ শূন্য রয়েছে। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে তত্বাবধায়ক, সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী), সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী), সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), সিনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি), সিনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেস:), জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো সার্জারী) সহ ১ জন মেডিকেল অফিসার, ১ জন ইমারজেন্সী মেডিকেল অফিসার কর্মরত রয়েছেন। সিনিয়র কনসালটেন্ট (ই.এন টি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (রেডিওলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেস:), ৪ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট (প্যাথলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল অফিসার ৩ জন, এমারজেন্সী মেডিকেল অফিসার ২ জন, রেডিওলজিস্ট, প্যাথলজিষ্ট, সহকারী সার্জন ৮ জন, মেডিকেল অফিসার (আয়ুবেদীয়), ডেন্টাটাল সার্জনসহ ২৮ টি চিকিৎসকের পদ শুন্য রয়েছে। সদর হাসপাতালে গত জুলাই মাসে আউড ডোরে ১২ হাজার ১৭০ জন রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। তাছাড়াও ইনডোরে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১৭৭ জন। এমারজেন্সী বিভাগের আগত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৩৪ জন। লালমনিরহাট ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে বছরের পর বছর ধরে চিকিৎসক সংকট চলে আসছে। উদ্ধর্তন কতৃপক্ষকে লিখিত এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অবহিত করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। এমনকি স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্যকে দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেও ফলাফল শূন্য। স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে সাধারন মানুষ বিক্ষুদ্ব ও বিবৃত। সীমাহীন কষ্ঠ ও দুর্ভোগের শিকার। চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে হাসপাতাল কতৃপক্ষের সাথে কথা বললে, তারাও বিব্রত বোধ করেন। অনেক সময় আক্ষেপের সাথে বলেন, সংবাদ প্রকাশ করে কিছুই হবে না। উল্লে্খ্য অনুন্নত এলাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসাররা চাকুরী করতে চান না। কারন এখানে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা আয় অর্থাৎ চিকিৎসা বানিজ্য করার সুযোগ নেই। অনেকেই নেহাত চাকুরীর জন্য কিংবা চাকুরীতে পদোন্নতির জন্য কয়েক মাসের জন্য অনুন্নত এলাকায় আসেন। আবার তদবির করে ষ্টান্ড রিলিস নিয়ে চলে যান। অনেকেই আবার কর্মস্থলে অবস্থান করেন না। পার্শবর্তী শহরে চলে যান। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, এম, পি, মন্ত্রীর কিছুই করনীয় নেই। দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত থাকবে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বরন করবে, এটাই স্বাভাবিক। চিকিৎসক সংকটকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তি মালিকানা ধীন ক্লিনিক, ডায়াগনেস্টিক, প্যাথলজি কেন্দ্র গুলোতে জমজমাট চিকিৎসা বানিজ্য চলছে।
×