ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে অবশ্যই ফিরে যেতে হবে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে অবশ্যই ফিরে যেতে হবে ॥ নাসিম

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১২ সেপ্টেম্বর ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের এ দেশে আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু মানবিক কারণের অর্থ এই নয় যে, তারা দীর্ঘদিন এ দেশে থাকবে। তাদের নিজ দেশে অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। আমরা মিয়ানমার সরকারকে অনুরোধ করব তারা যেন অবশ্যই দ্রুততম সময়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয় এবং তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করে। তিনি বলেন, মিয়ানমারকে অবিলম্বে বর্বর হত্যাকা- বন্ধ করতে হবে। মিয়ানমারে এখন চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ জন্য বিশ্ববাসী ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা যেন মানবিক কারণে এগিয়ে আসেন এবং রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা মায়ানমারে করেন। বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্র উদ্যোগ নিলে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের দ্রুত পুনর্বাসন করা সম্ভব। তিনি মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা মিলনায়তনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচীর’ (এসএসকে) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের চিকিৎসাসেবাসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা দেয়া হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানকল্পে ভারত-চীনসহ সব দেশ বাংলাদেশের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ। রোহিঙ্গাদের নিয়ে সন্ত্রাস বা জঙ্গীবাদের কোন হুমকি বা চাপ অনুভব করছে না বর্তমান সরকার। তবে তাদের অবশ্যই দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেরত নিতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের জরুরী স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১২১টিম সেখানে কাজ করছে। গরিব মানুষের বিনা পয়সায় ৫০ রকম রোগের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতেই শেখ হাসিনার সরকার গরিববান্ধব এ কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। সরকারের এ কর্মসূচী স্বার্থক করতে হলে চিকিৎসক-নার্সদের গ্রামে থেকে আন্তরিকতার সঙ্গে মায়ের মমতা দিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। চিকিৎসকরা গ্রামের বাবা-মায়ের সন্তান হয়েও গ্রামে থাকতে চান না। মন্ত্রী কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করে বলেন, চিকিৎসকদের অবশ্যই গ্রামে থেকে গ্রামের মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। তা না পারলে তাদের চাকরি করার অধিকার নেই। সরকার এটা কোন অবস্থাতেই বরদাস্ত করবে না। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সেবা করতে এসেছে। শোষণ করতে নয়। তিনি বলেন, এ দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আওয়ামী লীগকে আরও ২০ বছর সময় দিতে হবে। শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্য কারও অধীনে এ দেশে আর কোন নির্বাচন হবে না। আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বে যেভাবে নির্বাচন হয় ২০১৯ সালে দেশে সেভাবেই নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে সংবিধান মোতাবেক এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে একাত্তরের ঘাতক ও তার দোসরদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। একুশ বছর ক্ষমতায় থেকে তারা হত্যা আর ক্যু ছাড়া দেশ ও জাতিকে কিছুই দিতে পারেনি। তিনি ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে দেশের উন্নয়ন টেকসই হবে না। শেখ হাসিনা আজ আলোকিত বাংলাদেশ গড়েছেন। উন্নয়নের কর্ণধার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আগামীতে আবার ক্ষমতায় আনতে হবে। নৌকাকে জয়যুক্ত করতে হবে। শেখ হাসিনা জনগণের সমর্থন নিয়ে আরও বিশ বছর ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ বঙ্গবঙ্গু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডাঃ কামরুল ইসলাম খান, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক খান মোঃ নূরুল আমিন, পুলিশ সুপার মাহবুব আলম, সিভিল সার্জন ডাঃ শরিফ হোসেন খান, গ্রীনডেল্টা লাইফ ইনসুরেন্সের কর্ণধার ফারজানা চৌধুরী, মধুপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সরোয়ার আলম খান আবু, কালিহাতী উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম তালুকদার ঠা-ু, ঘাটাইল উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান সামু প্রমুখ। পরে মন্ত্রী দরিদ্র ও বিত্তহীনদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যবীমা কার্ড বিতরণ করেন।
×