ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের পুণর্বাসনে সহায়তা ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:৪৮, ২৩ আগস্ট ২০১৭

বাগেরহাটে আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের পুণর্বাসনে সহায়তা ॥  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বাবুল সরদার, বাগেরহাট ॥ আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সুন্দরবনের ১২টি বনদস্যু বাহিনীর ১৩২ জন সদস্যকে পুনর্বাসনে সহায়তা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে তাদের প্রত্যেককে নগদ এক লাখ এবং র্যা ব-এর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা ছাড়াও বিশেষ ‘ঈদ উপহার’ দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার বিকেলে তাদের হাতে পুণর্বাসনের অর্থ ও উপহার তুলে দেন। বাগেরহাট শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে এই উপলক্ষে র্যা ব-৬ এর অধিনায়ক খন্দকার রফিকুল ইসলাম বিপিএম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত জনাকীর্ণ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, ডা: মোজাস্মেল হোসেন এমপি, তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি, এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা এমপি, হেপী বড়াল এমপি, পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, র্যা বের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, র্যা ব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আনোয়ার উজ জামান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আ: সামাদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব জ্যোতির্ময় দত্ত (সিমানও নিরাপ্তা), প্রধান মন্ত্রীর কর্যলয়ের মহাপরিচালক-৪ কবির বিন আনোয়ার, খুলনা রেঞ্জর ডিআইজি( ভারপ্রপ্ত) মো.একরামূল হাবীব,বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস,একজিম ব্যাংকের ডিজিএম মেজর মনির, এসপি পংকজ চন্দ্র রায়-সহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি সুন্দরবনের বাকী দস্যুদের অতিদ্রুত আত্বসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহবান জানিয়ে বলেন, আত্বসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসালে তাদের পুনর্বাসন ও আইনী সহায়তা করবে সরকার। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে না আসলে যথযথ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। তাদের আর্থিক ও আইনি সহয়তা দেয়া হচ্ছে। অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে সুন্দরবন ও সাগরে জেলে-বাওয়ালীরা এখন নিরাপদ। পর্যাটকদের কাছে আকর্ষনীয় ও নিরাপদ করতে সরকার র্যা ব, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি করছে। তিনি আরও বলেন, প্রায় ১০ হাজার বর্গ কি.মি. আয়তন বিশিষ্ট পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনকে ২০১৪ সালের ২২ জানূয়ারী ইউনোস্কো কর্তৃক ৫২২তম বিশ্ব ঐতিহ্য হিসাবে ঘোষনা করা হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দযের লীলাভূমি এই সুন্দরবন আশির দশকে চাঁদাবাজি,অপহরণ শুরু হয়। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে উপকুলীয় এলাকায় বনদস্যু, জলদস্যু দমনে লক্ষে ডিজি র্যা বকে প্রধান সম্মনয়কারী করে পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও বনবিভাগের সম্মনয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। শুরু হয় সুন্দরবনে আইন-শৃখলা বাহীনীর আভিযান। সেই থেকে এ পযর্ন্ত আইন-শৃখলা বাহিনীর আভিযানে ৩৭৮ জন বনদস্যু-জলদস্য ৯৮৩ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৬১৮৩ রাউন্ড গুলিসহ আটক হয়। ১১৭ জন বনদস্যু, জলদস্য র্যা বের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ২০১৬ সালের মে মাস থেকে ১৫ মাসে ১২ টি কুখ্যাত জলদস্যু বাহীনীর ১৩২ জন সদস্য, ২৪৯ টি অস্ত্র ১২৫৯২ গোলাবারুদ সহ র্যা বের নিকট আত্বসমর্পন করে। এদের সবাইকে যথাযথ আইনী সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। আজ প্রধান মন্ত্রীর পক্ষ থেকে আত্বসমর্পন কৃত ১২ টি জলদস্যু বাহীনীর ১৩২ জন সদস্যের পরিবারকে পুনবাসনের রক্ষ্যে ১ লক্ষ টাকা ও একজিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা র্যা বের পক্ষ থেকে মোবাইল সেট ঈদ উপহার সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে।’ সভায় উপস্থিত জেলে, বাওয়ালী ও মৎস্যজীবীরা জানান, এখন সুন্দরবন ও সাগরে সশস্ত্র দস্যুদের উপদ্রব অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। তারা নিরাপদে চলাচল করতে পারছেন।
×