ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২০২১ সালে বিলিয়ন ডলারের খাদ্য রপ্তানি হবে

প্রকাশিত: ০০:২৬, ২৩ আগস্ট ২০১৭

২০২১ সালে বিলিয়ন ডলারের খাদ্য রপ্তানি হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিভিত্তিক শিল্পখাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধি ঘটছে। এ সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পখাতে বিলিয়ন ডলার রফতানি করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। বুধবার রাজধানীর প্যান-প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা সম্মেলন-২০১৭’ এর উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ : সকলের সম্মিলিত দায়িত্ব’ শীর্ষ সেøাগানে দেশে প্রথমবারের মত করা হয়েছে এ আয়োজন। সম্মলিতভাবে ১৯টি স্থানীয় ও বহুজাতিক কোম্পানির সহযোগিতায় এই সম্মেলনের আয়োজন ফরেন ইনভেস্টর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসি), মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ফুড সেফটি অতরিটি (বিএফএসএ) এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনন্সিটিউড (বিএসটিআই)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, খাদ্য মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ। কি খাচ্ছি সে বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। সরকারের একার পক্ষে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক এবং আরো সচেতন হতে হবে বলে মনে করেন শিল্পমন্ত্রী। আমির হোসেন আমু আরো বলেন, নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টিমান নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধ পরিকর। জমির আয়তন কমছে, আবার মানুষ বাড়ছে। তারপরও শেখ হাসিনা সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পেরেছে। কৃষকের মধ্যে সার সরবাহের মধ্য দিয়ে প্রতিটি ফসলে বাম্পার ফলন হচ্ছে। আমু বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, প্রতিবছর হালাল খাদ্য ও পণ্যের চাহিদা ১০.৮ শতাংশ হারে বাড়ছে। ২০১৪ সালে বিশ্বে হালাল শিল্পের পরিমাণ ছিল ৭৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৯ সাল নাগাদ বিশ্বে হালাল শিল্পের পরিমাণ ৩.৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পরিণত হবে। হালাল খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বাংলাদেশের জন্য গুণগতমানের খাদ্য শিল্প প্রসারের সুযোগ এনে দিয়েছে। এ ধরনের শিল্প স্থাপন করে একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নিরাপদ খাদ্যের যোগান বৃদ্ধি এবং বিশ্ববাজারে রফতানির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। শিল্পমন্ত্রী বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উদ্যোক্তারা ২২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছেন। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ২৭ মিলিয়ন ডলার। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিভিত্তিক শিল্পখাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধি ঘটছে। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা এ খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পখাতে বিলিয়ন ডলার রফতানি করতে সক্ষম হবো। সম্মেলনের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এখন বড় দায়িত্ব হচ্ছে জনগনের সাংবিধানিক অধিকার নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে খাবার টেবিল পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাই প্রধান লক্ষ্য। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। নিরাপদ খাদ্য প্রদানে ১৮টি মন্ত্রণালয় এক সাথে কাজ করছে। খাদ্য শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের আরো সজাগ হতে বলেন খাদ্যমন্ত্রী। খাদ্য সচিব মো. কায়কোবাদ হোসাইন বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এক সময় উপযোগী আইনের অভাবে এটি আরো কঠিন হয়ে উঠেছিল। ২০১৩ সালে খাদ্য নিরাপত্তা আইন করা হয়। পরবর্তীতে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। আরো বক্তব্য ‍রাখেন, ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অরগানাইজেশন (এফএও) এর প্রধান টেকনিক্যাল এডভাইজার নায়কি মিনামিজুকি, এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবীর, এফআইসিসিআই সভাপতি রুপালি চৌধুরী। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসটিআই’র মহাপরিচালক মো. সাইফুল হাসিব এবং সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। উদ্বোধনী পর্বের পর শুরু হয় দিনের দ্বিতীয় সেশন। এই সেশনে বৈশ্বিক খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
×