ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান

টার্গেট জননেত্রী শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২২ আগস্ট ২০১৭

টার্গেট জননেত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশে সন্ত্রাসী এবং জঙ্গী হামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও জঘন্য ঘটনা হচ্ছে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের ইতিহাসের আরেকটি কলঙ্কজনক ও রক্তাক্ত দিন এটি। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ৩০ বছর পর সেই আগস্ট মাসেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা করা হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় এই গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা-গ্রেনেড হামলা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সমাবেশের আয়োজন করে। বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের ওপর স্থাপিত মঞ্চে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা তার বক্তব্য শেষ করার পর পরই বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে অতর্কিতে চারদিক থেকে গ্রেনেড এসে পড়তে থাকে। ওই সময় মঞ্চে উপবিষ্ট দলের জাতীয় নেতারা পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে মানববর্ম রচনা করে সভাপতি শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে সেদিন শুধু গ্রেনেড হামলাই চালানো হয়নি, তিনি যখন গাড়িতে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করছিলেন, তখনও তাকে লক্ষ্য করে গাড়িতে গুলি চালানো হয়েছিল। অল্পের জন্য যদিও শেখ হাসিনা রক্ষা পেয়েছিলেন কিন্তু মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়ে গিয়েছিল সেই দিন বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ। এই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও প্রায় ৪শ’ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি। এই বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহতরা হলেন- বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমান, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম, মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়াসহ ২৪ জন। মারাত্মক আহত হয়েছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, মোহাম্মদ হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, সাঈদ খোকন, মাহবুবা আখতার, এ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনি, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, রুমা ইসলাম, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেইন ও মামুন। ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফের শরীরে অসংখ্য গ্রেনেডের স্পিøন্টার নিয়ে জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ২১ গ্রেনেড হামলা ছিল ব্যাপ্তির বিবেচনায় সবচেয়ে জঘন্যতম ঘটনা। হামলার উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এ আক্রমণ। তৎকালীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং সর্বোচ্চ মহলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ আক্রমণ করা হয় এ বিষয়ে এখন আর কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। গ্রেনেড হামলার বিচারিক কর্মকা- এবং জবানবন্দীতে তা প্রমাণিত হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের প্রেক্ষাপট এবং রাজনৈতিক যোগাযোগ বিশ্লেষণ করলে স্পষ্টভাবে বলা যায়, বর্তমানে চলমান জঙ্গী হামলার সঙ্গে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কোন পার্থক্য নেই। এসব বর্বর, নগ্ন এবং নৃশংস হামলা একই গোষ্ঠীর। বর্তমানে জঙ্গীদের বৈশ্বিক যোগাযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে এ জঙ্গীদের এক ধরনের ভিশন এবং মিশন রয়েছে। আইএসের লক্ষ্য হলো মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। আর সেখানে না হলেও পৃথিবীর অন্য কোথাও তা প্রতিষ্ঠা করা। তবে ওয়াহাবী মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করাই আইএসের প্রধান লক্ষ্য। আমি মনে করি বাংলাদেশের জঙ্গীগোষ্ঠীর সঙ্গে বিদেশীদের সম্পর্ক থাকলেও এখানে তাদের টার্গেট ভিন্ন। জঙ্গীদের বর্তমান এবং অতীতসহ সব সময়ই লক্ষ্য হলো জননেত্রী শেখ হাসিনা। জঙ্গীরা মনে করে বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সরকার জঙ্গীত্বকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অনুকূলে নয়। ২০০১ থেকে ২০০৮ সালে এদেশে জামায়াত-বিএনপি সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত, ঠিক তখনই জঙ্গীবাদ একেবারে তুঙ্গে উঠে। এরপর সামরিক লেবাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। তাদের ধ্যান-ধারণাও ওই গোষ্ঠীর দ্বারা সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে জঙ্গী হামলার সঙ্গে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের মিল আছে। কেবল তাই নয়, জঙ্গী হামলা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যারও সাদৃশ্য পাওয়া যায়। জঙ্গীদের সঙ্গে আবার ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, বাঙালীর প্রগতিশীল চিন্তার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক অর্জনের বিরোধিতাকারী শক্তি সব সময়ই সবর ছিল। তারা যুগে যুগে আামদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ওই শক্তি সক্রিয় ছিল। আমাদের সকল অর্জনের পিছনে যে শক্তি বিরোধিতা করেছে, সেই একই শক্তি পরবর্তী পর্যায়ে যুদ্ধাপরাধ, ’৭৫-এর হত্যাকা-, ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা এবং আজকের জঙ্গীবাদী আক্রমণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এর প্রমাণস্বরূপ বলা যায়, চট্টগ্রামের জনসভা থেকে শুরু করে ঢাকার ভোটকেন্দ্র, কোটালীপাড়ার ৭৬ কেজি বোমা, উদীচী, রমনার বটমূল ও বানিয়াচরের গির্জাসহ এই পর্যন্ত যতগুলো আক্রমণ হয়েছে, তার সঙ্গে ওই শক্তির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তারা আমাদের বাঙালিত্বের বিরোধিতাকারী এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধীপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১০০টি জঙ্গী হামলার উদাহরণ দেয়া যাবে। আমাদের এখানে জঙ্গী হামলার সাম্প্রতিক তৎপরতার যে ব্যাপকতা, তা শুরু হয় মূলত গণজাগরণ মঞ্চের ব্লগার এবং মুক্তমনা লেখকদের হত্যার মধ্য দিয়ে। এই রূপ ঘটনা মিসরেও ঘটেছিল। সেখানে ইসলামী ব্রাদারহুডের লোকেরা প্রথমে নাস্তিক, ধর্ম, নবী-রাসুলকে অবমাননাকে জঙ্গী হামলার কারণ হিসেবে উল্লেখ করে। পরে দেখা গেল, তারা মুক্তমনা মানুষের ওপরও আক্রমণ করছে। অর্থাৎ যারা একটু হলেও ধর্মনিরপেক্ষ এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মের অতিমাত্রায় জড়াজড়ি পছন্দ করেন না, তাদের ওপরও ব্রাদারহুড আক্রমণ পরিচালনা করে। বাংলাদেশেও কিন্তু এই ধারা অব্যাহত। এখানে প্রথমে লেখক, মুক্তমনা মানুষ, সাহিত্যিকদের আক্রমণ করেই শেষ হয়নি। যারা ধর্মীয় অনুশাসন এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে, তাদের বাইরে গিয়ে সাধারণ ধর্ম যাজক, পীর, গির্জার পুরোহিত থেকে শুরু করে নিরীহ জাপানি এবং ইতালির নাগরিকের ওপর আক্রমণ করা হয়। এর দ্বারা স্পষ্টত, জঙ্গীরা তাদের লক্ষ্যবস্তু পরিবর্তন করে। তারা শুরু করেছিল ব্লগার, কিংবা তথাকথিত ধর্ম অবমাননাকারীদের দিয়ে। পরে দেখা যায়, ধর্ম অবমাননা করার সঙ্গে যাদের কোন সম্পর্ক নেই, তাদেরও তারা হত্যা করে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। তবে হত্যাকা- যে অজুহাতে হোক না কেন, তাদের আগে গ্রেফতার করতে হবে। বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। কিন্তু সরকারের লোকজনের পক্ষ থেকে দুটি বিষয়কে পাশাপাশি নিয়ে আসা হয়। এক. হত্যাকারীদের ধরার কথাও বলা হয়। দুই. হত্যাকারীরাদের অজুহাত ধর্ম অবমাননা অর্থাৎ নাস্তিকতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় নাস্তিকতাকে বরদাস্ত করা হবে না। এতে তখন অনেকে এই হত্যার পক্ষে প্রাসঙ্গিকতা বা যুক্তিকতা পেয়ে যায়। তবে ভাবনার বিষয় হচ্ছে, জঙ্গীরা হত্যা শুরু করেছে তথাকথিত নাস্তিক দিয়ে, কিন্তু তাদের শেষ পর্যন্ত টার্গেট হচ্ছে বর্তমান সরকার। ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানের ঘটনার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিত হয়। আমরা যখন উন্নয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছি, উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের দেশে এসেছে, ঠিক তখনই জঙ্গীগোষ্ঠী উঠে পড়ে লেগেছে। আমাদের মেট্রোরেলের পরামর্শদাতা হিসেবে জাপানের এক প্রবীণ ইঞ্জিনিয়ারসহ পোশাক শিল্পের ক্রেতাকে যখন হত্যা করা হয়, তখন জঙ্গীদের টার্গেট স্পষ্ট হয়ে উঠে। জঙ্গীরা এখানে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায় না, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে বর্তমান সরকারকে বিব্রত করা এবং পারলে এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সরকারকে বন্ধুহীন করা এবং সমস্যায় ফেলে তাদের প্রিয় অন্ধকারের শক্তিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যারা জঙ্গীদের গ্রেনেড হামলাসহ বাংলাভাইয়ের উত্থানে সব ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা এবং সহযোগিতা করেছিল, তাদের আক্রমণের স্থান, কাল ভিন্ন হলেও আমি মনে করি তাদের মূল লক্ষ্য শেখ হাসিনা এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। যদি ২১ আগস্ট হত্যাকা-ের বিচার করা যায় এবং সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হয় তাহলে জঙ্গীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে। তবে গ্রেনেড হামলার বিচার বিলম্ব হওয়া কাম্য নয়। গ্রেনেড হামলা ১২ বছর পেড়িয়ে গেছে। এর কারণ, দীর্ঘদিন এই হামলার বিচার আটকে রাখা হয়েছিল। জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে এই হামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাসহ সর্বোচ্চ মহল এই ঘটনা ভিন্ন দিকে নিয়ে যায়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রধান আশ্রয় ছিল হওয়া ভবন। এখন গ্রেনেড হামলার সঙ্গে সেই সময়ের সরকারী লোকজনের জড়িত থাকার বিষয়টি একেবারেই স্পষ্ট। হরকাতুল জিহাদসহ অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এই হামলা ঘটিয়েছে। তবে গ্রেনেড হামলার মামলায় চার শ’ থেকে পাঁচ শ’ জন লোককে সাক্ষী করাও খুব বুদ্ধিমানের কাজ হয়নি। যদি সাক্ষীর লোকজন কমানো যেত, তাহলে এ মামলা নিষ্পত্তি হতে আরও কম সময় লাগত। যে ঘটনা একেবারেই প্রকাশ্যে ঘটেছে সেখানে এত বেশি সংখ্যক সাক্ষী না নিয়ে কম সংখ্যক সাক্ষী নিলে মামলা দ্রুত সম্পন্ন হতো। গ্রেনেড হামলার বিচার নিষ্পত্তি করতে পারলে আমরা জঙ্গীবাদের শিকড়ে আঘাত হানতে পারব। এতে এখানকার জঙ্গীবাদ সীমিত হলেও স্তিমিত হবে। কারণ এসব জঙ্গীগোষ্ঠী তাদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধাসহ অন্য সহযোগিতা রাজনৈতিক দল কিংবা নেত্রীর কাছ থেকে পাচ্ছে। যদি আদালতে প্রমাণিত হয়, জঙ্গীদের সহায়তা করে পার পাওয়া যায় না, তাহলে আজকের জঙ্গীবাদের উত্থান কিছুটা হলেও স্তিমিত হবে। হলি আর্টিজানের ঘটনায় আমাদের কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে। আক্রমণকারীদের চেষ্টা ছিল বিদেশীদের সঙ্গে আমাদের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল ধরানো। আর একটি হলো সর্বমহলে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। আমি মনে করি, তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মানুষ এখন এসব বিষয়ে মোটেও আতঙ্কিত নয়। হাজার হাজার শিক্ষার্থী এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ এবং ঘৃণা জানিয়েছে। তারা জঙ্গীবাদ না বলেছে। গুলশান, শোলাকিয়া এবং কল্যাণপুরের ঘটনার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। যারা দেশ-বিদেশে থেকে এসব জঙ্গীবাদীকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, তাদের এ বার্তা দেয়া গেছে, বাঙালিত্ব এই জঙ্গীবাদকে কখনোই গ্রহণ করবে না। কারণ আমাদের শাশ্বত ইতিহাস এবং ঐতিহ্যে জঙ্গীবাদ জায়গা পাবে না। তবে ষড়যন্ত্রকারী এবং অপশক্তি এখনো থেমে নেই। তারা দেশের জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়ে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। দেশের অগ্রগতিকে তারা মানতে চায় না। শেখ হাসিনাকে আক্রমণ মানেই আমাদের বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, আশা আকাক্সক্ষায় আঘাত হানা। তাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার সম্পন্ন হলে জঙ্গীরা বড় ধরনের শিক্ষা পাবে। লেখক : উপাচার্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
×