ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

একজন দুর্নীতিবাজকে রক্ষা করা প্রধান বিচারপতির কাজ নয় ;###;বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতে কি সুপ্রীম জুডিসিয়াল কাউন্সিল;###;প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কেড়ে নিতে চান

প্রধান বিচারপতির প্রতি প্রধানমন্ত্রী ॥ সরে যাওয়া উচিত

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২২ আগস্ট ২০১৭

প্রধান বিচারপতির প্রতি প্রধানমন্ত্রী ॥ সরে যাওয়া উচিত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধান বিচারপতির করা মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, সব কিছু সহ্য করা যায়; কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা সহ্য করা যায় না। আর আমাকে হুমকি দিয়ে কোন লাভ নেই। আইয়ুব-ইয়াহিয়া, জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়া দেখেছি। আমি একমাত্র আল্লাহর কাছে সেজদা দেই, আর অন্য কারও কাছে মাথা নত করি না। জনগণের আদালতই সবচেয়ে বড় আদালত, জনগণের শক্তিই বড় শক্তি- এটা সবাই মনে রাখবেন। পাকিস্তানের কথা বলে হুমকি দেয়ার বিচারের ভার আমি জনগণের ওপরই ছেড়ে দিলাম। প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির সব ক্ষমতা কেড়ে নিতে চান অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন বলেই তারা (বিচারপতি) ওই পদে বসতে পেরেছেন। যে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দেন, সেই রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে না বলেই তাদের এত রাগ ও গোস্বা। দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করা তো উচ্চ আদালতের দায়িত্ব না। সংসদ সদস্যদের সম্পর্কে অপমানজনক কথা বলাও তো আদালতের কাজ না। প্রধান বিচারপতি সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন নিয়েও কথা বলেছেন। সংসদ সদস্যদের সঙ্গে এসব সংরক্ষিত নারী এমপিও তো ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন। আর নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দেন। তাই সংরক্ষিত নারী আসন নিয়ে কথা বলার আগে প্রধান বিচারপতির তো উচিত ছিল পদ থেকে সরে যাওয়া। বলতে পারতেন, যেহেতু সংরক্ষিত নারী এমপি ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়েছেন, তাই আমি এই পদে থাকব না। ২১ আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলার ১৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে প্রধান বিচারপতির দেয়া পর্যবেক্ষণের কিছুৃ অসঙ্গতি তুলে ধরে বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে বিএনপির ফরমায়েশি রিপোর্ট দেয়া বিচারপতি জয়নুল আবেদনের দুর্নীতির তদন্ত দুদক যাতে না করতে পারে সেজন্য প্রধান বিচারপতি চিঠি লিখলেন। কিন্তু তদন্ত করা যাবে না কেন? একজন দুর্নীতিবাজকে রক্ষা করা তো প্রধান বিচারপতির কাজ নয়। এটা তো সংবিধান পরিপন্থী, লঙ্ঘনের শামিল। গণপরিষদের সদস্যদের করা আইন প্রধান বিচারপতির পছন্দ নয়, উনার পছন্দ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে মার্শাল ল’ অডিন্যান্সের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের জারি করা সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল! বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতেই কী তার জুডিশিয়াল কাউন্সিল পছন্দ? রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কেড়ে নেয়া এ কোন ধরনের দাবি? বিএনপি আমলে অনেক বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ, ভুয়া সনদধারীকে বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে উচ্চ আদালতের পবিত্রতা নষ্ট করে গেছে। সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল হলে তো কারোরই বিচার হবে না। আলোচনা সভায় অধিকাংশ বক্তাই প্রধান বিচারপতির কড়া সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেমন, জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভা-ারী, জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল, কথাসাহিত্যিক ও কালেরকণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের পরিবার ও আহত নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সার্বিক খোঁজখবর নেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণের সমালোচনা করে বলেন, হঠাৎ করেই দেখছি উচ্চ আদালত থেকে নানা কথাবার্তা বলা হচ্ছে, লেখা হচ্ছে এবং হুমকি দেয়া হচ্ছে। যে সংসদ রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন করেন, সেই সংসদকে নিয়ে নানা কথা বলা হচ্ছে, এমনকি এমপিদের ক্রিমিন্যালও বলা হচ্ছে। সংসদকে হেয় করে কথা বলা হচ্ছে, এর অর্থ কী? আমরা অনেক সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। তিনি বলেন, পুরো দায়িত্বই যেন নিতে চাইছেন। তিনি বলেন, একটি আইন পাস করতে গেলে অনেক পর্যায় পার হতে হয়। সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন পাস করা হয়। আর আদালত এক খোঁচায় তা বাতিল করে দেয়। এত সংসদ সদস্য, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা তাদের কারোরই কোন জ্ঞানবুদ্ধি নেই, জ্ঞানবুদ্ধি আছে শুধু এক বা দু’জনের? অন্য বিচারকা স্বাধীনভাবে মতামত তুলে ধরতে পেরেছে কিনা, এটা নিয়েও কথা আছে। ড. কামাল হোসেনের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন আইনজীবী সর্বোচ্চ আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে এ্যাটর্নি জেনারেলকে যে ভাষায় গালিগালাজ করেছেন, তা কোন সভ্য মানুষ করতে পারে না। তারা আদালতকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? ‘সংসদ কতদিন চলবে তা ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত নেয়’- প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণে এ দাবি অসত্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্যাবিনেটে সংসদ কতদিন চলবে তা নিয়ে কখনই কোন আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয় না। সংসদ সম্পর্কে এতটুকু ধারণা থাকলে এ কথা বলতে পারতেন না। ক্যাবিনেট নয়, স্পীকারের সভাপতিত্বে কার্যোপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সংসদ কতদিন চলবে, কি কি বিষয়ে আলোচনা হবে। এমন বহু অবান্তর কথা বলা হয়েছে পর্যবেক্ষণে। আমরা পূর্ণাঙ্গ রায় ভাল করে পড়ছি এবং অসঙ্গতিগুলো নোট নিচ্ছি। সংসদে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। সময় এলে নিশ্চয় সব কিছু জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। এটা নিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যরা দায়বদ্ধ দেশের জনগণের কাছে। পাঁচ বছর পর পর আমাদেরকে জনগণের আদালতের সামনে দাঁড়াতে হয়। একটি রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে না আসে সেই দায়িত্ব কার? এটা তো ওই রাজনৈতিক দলেরই সিদ্ধান্তের ব্যাপার। বিএনপি তো সবসময় উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু উত্তরপাড়া তাকে কোন সাড়া দেয়নি। আর ড. কামাল হোসেন তো কোনদিন সরাসরি ভোটে জিততে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া একটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। নিজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আবার বড় বড় কথা বলেন কিভাবে? নির্বাচনী আইনেই রয়েছে কোন আসনে অন্য কোন প্রার্থী না থাকলে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী প্রার্থীই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। কোন দল নির্বাচনে না এলে কিংবা প্রার্থী না দিলে সংসদের বৈধতা বা অবৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে না। দেশবাসীর ওপর বিচারের ভার ছেড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে পাকিস্তানকে আমরা যুদ্ধ করে পরাজিত করেছি, লাখো শহীদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে পেয়েছি স্বাধীনতা। যে পাকিস্তান এখন ব্যর্থ রাষ্ট্র সেই দেশটিকে নিয়ে তুলনা করার বিচারের ভার দেশের জনগণের। কারণ, জনগণের আদালতই হচ্ছে সব বড় আদালত। স্বাধীনতা ভাল কিন্তু তা বালকের জন্য নয়। বালকসুলভ আচরণ ভাল নয়। রাজাকার-আদবদর কিংবা শান্তি কমিটির সদস্যরা ক্ষমতায় এলে দেশের কোন উন্নয়ন হয় না। একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়; আমরা তা প্রমাণ করেছি। ‘কয়েকটা ফ্লাইওভার বা রাস্তা হলেই উন্নয়ন হয় না’ এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, কয়েকটা ফ্লাইওভার কিংবা রাস্তা নয়, আমরা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করেছি। দেশের মানুষ দু’বেলা খেতে পারছে, চিকিৎসা পাচ্ছে, গ্রামের মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ বিদ্যুত সুবিধা পাচ্ছে, শতভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে যাচ্ছে। এসব উন্নয়ন কি চোখে পড়ে না আমাদের প্রধান বিচারপতির। সারাবিশ্বে আমরা দেশের সম্মান নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোলমডেল। সংবিধান লঙ্ঘন করে কেউ ক্ষমতা দখল করলেই কি উন্নয়ন হবে? সেই অবস্থা আর নেই। সংবিধান লঙ্ঘন করে কেউ ক্ষমতায় এলে তার বিচার হবে। জনতার আদালত সবচেয়ে বড় আদালত, মনে রাখবেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, তার মন্ত্রিসভার সদস্য ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকরা এ হামলার সঙ্গে জড়িত। আমাকেসহ পুরো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করতেই যুদ্ধক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীরা যে গ্রেনেড ব্যবহার করে, তা আমাদের সমাবেশে ব্যবহার করা হলো। হামলার পর পিন্টুর ভাই ও কারারক্ষীকে বিমানে পালিয়ে যেতে সাহায্য করা হয়। তিনি বলেন, ধানম-ির ৫ নম্বর রোডে তারেক রহমানের শ্বশুরবাড়ি। ওই বাড়িতে সে দীর্ঘদিন থেকে কি করছিল? ১ আগস্ট ওই বাড়ি ছেড়ে তারেক রহমান ক্যান্টনমেন্টের বাসায় যায়। হামলার আগের দিন ২০ আগস্ট রাতে তারেক রহমানের শ্বশুরবাড়িতে কয়েকটি বড় বাক্স-পেঁটরা নামানো হয়। কিছু সময় পর সেগুলো সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কি ছিল তাতে? সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতেই এই হামলা চালানো হয়েছিল। ট্রাকের গায়ে না লেগে গ্রেনেডটি যদি ভেতরে পড়ত তবে আমরা কেউ-ই বাঁচতে পারতাম না। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন, মোহাম্মদ হানিফসহ নেতারা মানববর্ম রচনা করে আমাকে রক্ষা করেছেন। আমির হোসেন আমু প্রধান বিচারপতির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, এদের কিছু আলবদর, রাজাকার ও শান্তি কমিটির লোক আছে যারা সবসময় পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু ব্যর্থ পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে থেকে কোন লাভ হবে না, বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে কাজ করুন। সময় থাকতে সবাইকে সংযত হতে বলব। এদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের সুরে কারো কথা জনগণ সহ্য করবে না। তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের দুঃখ লাগে পাকিস্তানের সঙ্গে উচ্চ আদালতে বসে তুলনা করে কথা বলা হয়। সংসদকে অপরিপক্ক বলা হয়। পাকিস্তান এখন মৃত। সকল দিক থেকে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে। বিচারপতি জয়নুল আবেদীন ২১ আগস্ট হামলাকে ভিন্নখাতে নিতে কী করেননি! তার পক্ষ নিয়ে প্রধান বিচারপতি চিঠি দেন। সেই প্রধান বিচারপতি সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রধান হলে বিতর্কিত বিচারপতিদের বিচার কিভাবে হবে? ওবায়দুল কাদের বলেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট আর ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা। সেই সময়ের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতেই এই হামলা চালানো হয়। আর এই হামলার প্রাইম টার্গেটই ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, সাংবিধানিক নয়, পর্যবেক্ষণে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্তের হুমকি দেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে আমাদের উপদেশ দেবেন না। করলে কি হবে জনগণ তার জবাব দেবে। জনগণ জেগে উঠলে ষড়যন্ত্রকারীরা কেউই পালাতে পারবে না। রাশেদ খান মেনন বলেন, গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই একটি জায়গা থেকে অনেক কথা বলা হচ্ছে। পাকিস্তানের ঘটনা উল্লেখ করা হচ্ছে প্রকাশ্য আদালতে। কিন্তু সবাইকে মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ পাকিস্তান নয়, বাংলাদেশ বাংলাদেশই। তাই ভয় দেখিয়ে কোন লাভ হবে না। হাসানুল হক ইনু বলেন, আগামী নির্বাচন কঠিন অগ্নিপরীক্ষা। রাজাকার-আলবদর সমর্থিক মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিকে এই নির্বাচনের মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। অগ্নিœসন্ত্রাসকারী, গ্রেনেড হামলাকারী খালেদা জিয়াদের সঙ্গে কোন আপোস কিংবা মিটমাট নয়, এদের আবারও পরাজিত করতে হবে। নজিবুল বশর মাইজভা-ারী অবিলম্বে প্রধান বিচারপতিকে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার দাবি জানিয়ে বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার বিচারে প্রধানমন্ত্রী এই প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দিয়েছিলেন; তখন আমার দলসহ অনেক ইসলামপন্থী দলই এতে সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাই প্রধান বিচারপতিকে বলব- আপনি জাতির কাছে ক্ষমা চান। নইলে আপনার বিরুদ্ধে বিচার চাইতে আদালতে যেতে বাধ্য হব।
×