ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্যারিসে নেইমারের রঙিন অভিষেক

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২২ আগস্ট ২০১৭

প্যারিসে নেইমারের রঙিন অভিষেক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্যারিসে এসে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন নেইমার। অভিষেক ম্যাচে গুইনগ্যাম্পের বিপক্ষে নিজেকে রাঙিয়ে তোলেন। ওই ম্যাচে নিজে গোল করে ও সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়ে নতুন ক্লাবে অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখেন। ম্যাচটি ছিল প্রতিপক্ষের মাঠে। এবার প্যারিস পর্বটাও স্মরণীয় করে রাখলেন নেইমার। অর্থাৎ পিএসজির ঘরের মাঠেও রঙিন অভিষেক হয়েছে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের। রবিবার রাতে ফরাসী লীগ ওয়ানের ম্যাচে অতিথি তুলুজকে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছে স্বাগতিক পিএসজি। পিএসজির হোমগ্রাউন্ড পার্ক দ্য প্রিন্সেসে পুরো ম্যাচে আলো ছড়ান নেইমার। ম্যাচটিতে রীতিমতো তার নিজস্ব শো চলেছে। নিজে তো দুটি গোল করেছেনই, সেই সঙ্গে দলের বাকি চার গোলেও রাখেন অবদান। প্যারিসের ভক্ত-সমর্থকরা প্রিয় তারকার এমন নৈপুণ্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে ভুল করেননি। অসাধারণ পারফর্মেন্সের পর সাবেক বার্সিলোনা তারকা জানিয়েছেন, তিনি আরও উন্নতি করতে চান। এই জয়ে তিন ম্যাচ শেষে ৯ পয়েন্ট নিয়ে লীগ টেবিলের শীর্ষে থাকল পিএসজি। সেই সঙ্গে মোনাকোর কাছ থেকে হারানো সিংহাসন ফিরিয়ে নেয়ার দাবিটা আরও জোরালো করল। ১৫ মাস পর পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানও ফিরে পেয়েছে প্যারিসের পরাশক্তিরা। গত মৌসুমে কোন রাউন্ডের খেলা শেষেই এক নম্বরে উঠতে পারেনি পিএসজি। ৮ পয়েন্টের ব্যবধানে লীগ জিতেছিল মোনাকো। চ্যাম্পিয়ন মোনাকো এবারও ভাল ছন্দে আছে। তারাও টানা তিনটি ম্যাচ জিতে ৯ পয়েন্ট পেয়েছে। তবে গোল গড়ে দ্বিতীয় স্থানে তারা। সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল গড়ে তিনে আছে সেইন্ট এটিয়েনে। ঘরের মাঠে নেইমারের অভিষেক ম্যাচে প্রথমে অবশ্য গোল হজম করেছিল পিএসজিই। ১৮ মিনিটে প্যারিসের সমর্থকদের অবাক করে দিয়ে গোল করে বসে অতিথি তুলুজ। এ কারণেই হয়ত একে একে ছয় গোল করে পিএসজি। শুরুটা করেন নেইমারই। র‌্যাবিওটের নেয়া শটটা কোনমতে আটকে দিয়েছিলেন তুলুজের গোলরক্ষক। তবে ঠিক সামনেই ছিলেন নেইমার। একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গোল করে করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। শুরুতে গোল না পেলেও চার মিনিট পরই গোল করেন ফরাসী তারকা আদ্রিয়েন র‌্যাবিওট। এই গোলে প্রত্যক্ষ অবদান রাখেন নেইমার। তার পাস থেকে বল পেয়েই সেটা জালে জড়িয়ে দেন র‌্যাবিওট। এরপর মিনিট চল্লিশেক সময় আর কোন গোল করতে পারেনি কোন পক্ষই। গোলের দরজাটা খুলে দেন নেইমার। ৭৪ মিনিটে তাকে ডি বক্সে ফাউল করে তুলুজ। পেনাল্টি থেকে গোল করে এডিনসন কাভানি। তিন মিনিট পরই অবশ্য একটা গোল পরিশোধ করে তুলুজ। কর্নার থেকে আসা বল ক্লিয়ার করতে যেয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন পিএসজি অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা। চার মিনিট পর ব্যবধানটা আরও বাড়াতে সাহায্য করেন নেইমার। নেইমার কর্নার কিকের বলটা দেন জ্যাভিয়ের পাস্তোরেকে। দারুণ শটে গোল করেন আর্জেন্টাইন তারকা। এরপর নেইমারের পাসে গোল করেন লেইভিন কুরজাওয়া। যোগ করা (৯২ মিনিট) সময়ে গোল করে ব্যবধানটা ৬-২ করেন নেইমার। অসাধারণ ড্রিবলিং জাদুতে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। তুলুজের পাঁচ ডিফেন্ডারের কেউই থামাতে পারেনি। নেইমারের বাঁ পায়ের আলতো নিখুঁত শট খুঁজে পায় জাল। জাদুকরী এমন পারফর্মেন্সের পরও অবশ্য তৃপ্ত নন নেইমার। আরও ভাল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি। ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন, পিএসজিতে আমি সুখী অনুভব করছি, এ যেন বাড়ির মতো। এখন আমি আরও দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে চাই। শারীরিক দিক থেকে আরও ভাল হতে চাই। আমার মনে হয়, আমি আরও উন্নতি করতে পারব। সাবেক বার্সা তারকা বলেন, এটা খুব চমৎকার, এখানে পরিবেশ দুর্দান্ত। সমর্থক, দলের পারফর্মেন্স ও দলের সব খেলোয়াড়কে নিয়ে আমি খুবই খুশি। শেষ মুহূর্তে নেইমারের গোলটা ছিল দেখার মতো। এই চোখ ধাঁধানো গোলটি নিয়ে নেইমার বলেন, কী ঘটেছিল আমি মনে করতে পারছি না। আমি এটা দেখিওনি। আমি কেবল জানি, এটা একটি গোল এবং এটাই আসল কথা।
×