ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ষোড়শ সংশোধনীর সমালোচনায় তোফায়েল

পর্যালোচনার নামে সংসদকে ছোট করা হয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২২ আগস্ট ২০১৭

পর্যালোচনার নামে সংসদকে ছোট করা হয়েছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আদালতের দেয়া সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিষয়ক রায়ের সমালোচনা করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, রায়ের সঙ্গে পর্যালোচনার নামে জাতীয় সংসদকে ছোট করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের পবিত্র সংবিধানে বলা আছে-সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। সেই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই মহান সংসদের সদস্য। তাই পর্যালোচনার নামে জাতীয় সংসদ, জাতীয় সংসদের সদস্য সর্বোপরি দেশের জনগণকে ছোট করা হয়েছে। সোমবার বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নির্মমভাবে জিয়াউর রহমান হত্যা করেছে তা আজ প্রমাণিত। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতা। এ কারণে খালেদা জিয়া সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যা চেষ্টা চালানো হয়। হাওয়া ভবন থেকে সে হামলার নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। সেই হামলায় শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও ২৪ জন নিহত হন। অসংখ্য মানুষ আহত হয়ে আজও যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করেছেন জিয়াউর রহমান। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রমাণ করেছেন তিনিই খুনী। এছাড়া ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চালু করে তিনি জামায়াতকে এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। পাকিস্তানী পাসপোর্টধারী গোলাম আযমকে দেশে এনে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যাতে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে না পারে সে জন্যই ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকা- চালানো হয়েছিল। ওই আলোচনায় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন বাঙালী জাতির জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। অধিকার আদায়ের জন্য তিনি বাঙালী জাতিকে এক কাতারে দাঁড় করিয়েছিলেন, ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি বাঙালী জাতিকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। সংগ্রাম শুরুর আগেই তিনি লক্ষ্য স্থির করেছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগের পরেই তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, পাকিস্তান বাঙালী জাতির জন্য সৃষ্টি হয়নি, পাকিস্তানী কাঠামোর মধ্যে বাঙালী জাতির অধিকার আদায় করা যাবে না। বাঙালীর ভাগ্যনির্ধারক বাঙালীকেই হতে হবে। মন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে থেকে দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ৪,৬৮২ দিন জেল খেটেছেন। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ছিল বাঙালী জাতির মুক্তির সনদ। ৬ দফা ঘোষণা করে তিনি এর পক্ষে জনমত তৈরির জন্য দেশের সকল অঞ্চল সফর করেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- প্রদানের উদ্দেশেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমাদের মুক্তির জন্য বাঙালী জাতি আন্দোলনে নেমে আসবে, আমরা মুক্ত হব। নির্বাচন দেবে আমরা জয়লাভ করব, কিন্তু তারা নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেবে না। মুক্তিযুদ্ধ হবে, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। বঙ্গবন্ধুর সেই ভবিষ্যত বাণী সঠিক ছিল। সেদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না জিতলে বাংলাদেশে স্বাধীনতা আসত না। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসু, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমেদ, টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) মুসফিকা ইকফাত, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল খান চৌধুরী, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য্য, বাংলাদেশ টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ শাফিনুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম লস্কর, আমদানি ও রফতানি অধিদফতরের প্রধান নিয়ন্ত্রক আফরোজা খানসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
×