ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অন্য কোন স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে তা ভুল ॥ মতিয়া

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ২০ আগস্ট ২০১৭

অন্য কোন স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে তা ভুল ॥ মতিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্কের মধ্যে বিচার বিভাগ ও প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরি বলেছেন, কেউ যদি অন্য কোন স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে তা ভুল। উদারতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না। যে উদার হতে পারে সে কঠোরও হতে পারে। যে হাত দিয়ে আমরা সেবা করি, সে হাত দিয়ে শত্রু নিমূর্ল করেও আমরা দেখিয়ে দিতে পারি। রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ আয়োজিত শোক দিবসের এক আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ ড. মো আব্দুর রাজ্জাক এমপির সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি। এতে কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক, প্রাক্তন কর্মকর্তা ও কৃষি বিজ্ঞানী ও সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ, জিয়ার আমলে এয়াফোর্সে ৬০০ মানুষকে হত্যা ও সর্বশেষ অপারেশ ক্লিন হার্টের নামে ইতিহাসে যেসব জঘন্য কর্মকান্ড ঘটে গেছে সেসময় প্রধান বিচারপতি বা আদালত কোন টু শব্দটিও করে নি বলেও এর সমালোচনা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ হলো। আপনারা চুপ। এয়ারফোর্সের ৬০০ মানুষকে বিচারের নামে বিচারই হলো না। ধরো, গুলি করো। ডেড বডি পাঠিয়ে দেও। তখন তো তাদের (আদালত) কোন কণ্ঠ শুনি নি। ২০০০ সালের পরে অপারেশন ক্লিন হার্টের সময়ও কোন কথা শুনি নি তাদের। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই- যে যার কাজ করবে। যে জায়গায় আছেন, যদি সাহস থাকে, তাহলে সে জায়গার কাজগুলো করেন। বিচার বিভাগের কাজ করবে, সংসদ সংসদের কাজ করবে; এটা মেনে নিয়েই দেশ চলবে। বঙ্গবন্ধু শাসনামলের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর টাকা দিয়ে কেনা গমও কিন্তু মধ্য সমুদ্র থেকে ফিরিয়ে নেয়া হয়। আমেরিকা এই কাজটি করেছিলো ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর গভীর সম্পর্ক ও তার দেশে ছালার চট বিক্রি করার কারণে। আমেরিকার সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, এতো কিসের দম্ভ তাদের! একটা দেশের মানুষকে না খাইয়ে মারা? যখন মধ্য সাগর থেকে আমেরিকা গম ফেরত নেয় তখন বঙ্গবন্ধু সংসদে দাঁড়িয়ে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন আমি দেশের সবগুলো মানুষকে বাঁচাতে পারলাম না। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়েছিলো তখন খাদ্য শস্যের দাম কিন্তু কমে গিয়েছিলো। বন্যা ও খরায় তখন খাদ্য যে নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছিলো তা কিন্তু ছিলো মাত্র ২ সপ্তাহ। আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে মতিয়া চৌধুরি বলেন, ১৫ আগস্টের অনেক ছবিই আমরা কিন্তু দেখতে পাই। কিন্তু একটা ছবি দেখতে পাই না। শেখ মনির অনাগত সন্তানের ছবিটি কিন্তু আমরা দেখি না! কারবালা যুদ্ধকেও ম্লান করে দিয়েছিলো ১৫ আগস্টের ওই নৃশংস হত্যাকান্ড। সাম্প্রতিক বন্যা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান যেসব পূর্বাভাস দিচ্ছে তা ভুল প্রমাণিত হতে পারে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ৯৮ সালের বন্যায় বিবিসি বলেছিলে ২ কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী তখন তা হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তখন বন্যা মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছিলো। মানুষ না খেয়ে মরে নি। বর্তমানেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পূর্বাভাস দিচ্ছে। ৯৮ সালের বন্যায় শেখ হাসিনা ভবিষ্যৎ বাণীকে যেমন মিথ্যা প্রমাণ করেছিলেন তেমনি এবারও তা করবেন। শুধু আপনার দোয়া করবেন। তিনি যেন তার পথে কাজ করে যেতে পারেন। বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের মহাসচিব আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের দায় থেকে জিয়া যেমন বাঁচতে পারে না, তেমনি খালেদাও এর দায় এড়াতে পারে না। জিয়া এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলো। মোশতাক মাত্র ৩ মাস ক্ষমতায় ছিলো। এর পর জিয়া ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের পুরষ্কৃত করেছে। একইভাবে খালেদাও বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তদের বা তাদের মিত্রদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ফিরিয়ে আনতে একটি মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাব উত্থাপন করে বক্তারা বলেছেন, কেবল আগস্ট এলেই শোনা যায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। পরবর্তীতে আর কোন খোঁজ থাকে না। দ্রুত সময়ে আসামীদের ফিরিয়ে আনতে সারা বছর তদারকি করা প্রয়োজন।
×