ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাবনায় দুই স্কুল ছাত্রী গণধর্ষণের ভিডিও প্রকাশ

প্রকাশিত: ০১:০৯, ২০ আগস্ট ২০১৭

পাবনায় দুই স্কুল ছাত্রী গণধর্ষণের ভিডিও প্রকাশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা ॥ সুজানগরে দুই স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষনের পর ইন্টারনেটে ধর্ষনের ভিডিও চিত্র প্রকাশ করায় ৬ ধর্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষিতারা বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। রবিবার বিকেলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: ইমরান হোসেন চৌধূরী মামলাটি গ্রহণ করে আসামীদেরকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলর আইনজীবী রাজিউল্লাহ সরদার রঞ্জু জানান, সুজানগর পৌর এলাকার চর ভবানীপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান সুজানগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্রী ১ আগষ্ট বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৬ বখাটে চর ভবনীপুর মাষ্টার পাড়ার হযরত আলী, আল আমিন, শাহিন, মিঠুন, পাংকু ও সোহেল রানা মিলে জোরপূর্বক অস্ত্রের মুখে তাদের তুলে নিয়ে পাশ্ববর্তী নিকিরী পাড়ার একটি বাশ বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে বখাটেরা জোরপূর্বক পালাক্রমে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে এবং মোবাইলে তার ভিডিও চিত্র ধারণ করে। ঘটনাটি কাউকে জানানো হলে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। দুই ছাত্রী বিষয়টি ভয়ে গোপন রাখে। ঘটনার কয়েক দিন পর ভিডিও চিত্র দেখিয়ে পুনরায় তাদের সাথে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে তারা তা প্রত্যাখান করে। এরপর বখাটেরা ওই ভিডিও চিত্রটি ফেসবুকে আপলোড করলে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পরে ভিডিওটি। বিষয়টি জানা জানি হলে ওই দুই ছাত্রীর অভিভাবকরা থানায় বখাটেদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে মামলা গ্রহণ না করে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে পৌর মেয়রের কাছে ওই দুই ছাত্রীর দরিদ্র পিতা মাতা বিচার দাবী করলেও তিনি কৌশলে শালিসী বৈঠকের মাধম্যে সময় ক্ষেপন করেন। অভিযোগ রয়েছে, বখাটে ধর্ষকরা পৌর মেয়রের ক্যাডার হওয়ায় তিনি শালিসী বৈঠকের মাধ্যমে সময়ক্ষেপন করেন। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই তারা আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। ঘটনার শিকার দুই ছাত্রী বলেন, এই ঘটনার পর থেকে বখাটেদের হুমকীর মুখে তারা বাড়ির বাইরে যেতে সাহস পারচ্ছেনা। সুষ্ঠু বিচার না পেলে তাদের আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না বলে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পরে। এ বিষয়ে ওই দুই ছাত্রীর পিতামাতা জানান, তারা গরিব মানুষ আর বখাটেরা প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান হওয়ায় থানা পুলিশের নিকট কোন বিচার পাইনি। এ ঘটনার পর থেকে তারা সমাজে মুখ দেখাতে পারচ্ছেন না। ঘটনার পর থেকেই ওই দুই ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুল হক জানান, এ ধরণের কোন অভিযোগ কেও করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহাব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মেয়ে দুটির অভিভাবকরা আমার নিকট এসেছিল। এটা নিয়ে কয়েক দফা শালিসী বৈঠকও হয়েছে, কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। বখাটেরা তার কর্মী সমর্থক এ বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি আরো জানান, তারা আওয়ামী পরিবারের ছেলে হলেও তারা আমার লোক নয়। এ ঘটনার সাথে আমাকে জড়িয়ে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
×