ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিলকিচ বেগম

‘নারী ও শিশুর জন্য আরও বরাদ্দের দাবি’

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ১৮ আগস্ট ২০১৭

‘নারী ও শিশুর জন্য আরও  বরাদ্দের দাবি’

স্থানীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। যা শক্তিশালী করতে এবং নারীর ক্ষমতায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সরকার জাতীয় সংসদের আলোকে ইউনিয়ন পরিষদে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে ৩টি সংরক্ষিত মহিলা আসন নির্ধারণ করেছে। যা গণতন্ত্রকে আরও সু-দৃঢ় করতে বাংলাদেশ সরকারের একটি দূরদর্শী পদক্ষেপ। প্রশ্ন হচ্ছে সরকারের এই পদক্ষেপ অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতায়ন কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে? ১৯৯৬ সালে গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য নির্বাচিত হই বিপুল ভোটে। তৎকালে চেয়ারম্যানের কাছে পুরুষ সদস্যদের মূল্যায়ন ছিল নারী সদস্যদের চেয়ে বেশি। সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যদের তেমন কোন মূল্যায়ন ছিল না। মহিলা আসনের সদস্যদের উন্নয়ন কাজে সম্পৃৃক্ততা নির্ভর করত চেয়ারম্যানের দয়ার ওপর। কিছুদিন পর চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও আত্মসাতের বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেই যা বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়। এর জেরে চেয়ারম্যান আমাকে পরবর্তীতে কোন উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ততা করত না। এর বড় একটি কারণ হচ্ছে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যদের ক্ষমতায়নে সরকারের নির্ধারিত কোন নীতিমালা না থাকা। দ্বিতীয়বারের মতো ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবারও ৭৩৫ ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হই। এ যাবৎ পর্যন্ত আমার অধিকার অর্থাৎ উন্নয়নের বিভিন্ন বরাদ্দ ভাগমতো পেয়ে সঠিকভাবে জনগণের সেবা করতে পারতেছি। কিন্ত অন্য কিছু ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যদের থেকে জেনেছি তাদের অধিকার ঠিকমতো পাচ্ছে না। সরকারের কোন নীতিমালা বা নির্ধারিত বরাদ্দ না থাকায় এলাকা বা জনগণের উন্নয়নে তারা নিজেকে নিয়োজিত করতে পারছে না। চেয়ারম্যানদের করুণাই তাদের একমাত্র ভরসা। এ সমস্যার উত্তরণে বাংলাদেশ সরকার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যদের ক্ষমতায়নে নীতিমালা নির্ধারণ অত্যন্ত জরুরী। যুব উন্নয়ন অধিদফতর , সমাজ সেবা অধিদফতর , মহিলাবিষয়ক অধিদফতর এমন কি বিভিন্ন এনজিও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যদেরকে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ দিয়ে এলাকার উন্নয়ন বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশুদের উন্ন্য়ন করাতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্পের বিশেষ অংশ তথ্য ও প্রযুক্তিতে গ্রামীণ নারীরা এখনও অনেক পিছিয়ে। তাদের স্বাস্থ্য, আর্থিক, আইন এবং বিভিন্ন অধিকারের তথ্য ও প্রযুক্তির প্রকল্প বরাদ্দ দিলে তা বাস্তবায়নে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যরা পিছিয়ে পড়া শিশু ও নারী-সমাজের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারবে। এর ফলে তৃণ্যমূল থেকে শুরু হবে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন যা শক্তিশালী গণতন্ত্রের একটি উত্তম নিয়ামক।
×