ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাসান হাবিব

কবিতা হলো চিন্তার শৈলস্বর

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৮ আগস্ট ২০১৭

কবিতা হলো চিন্তার শৈলস্বর

কবিতা হলো চিন্তার শৈলস্বর। জানা, বোঝা এবং হওয়ার মধ্যে কবির কল্পনা যখন চিন্তাকে একটি শিল্পীত রং দিয়ে সাজিয়ে তোলেন তখন তাকে কবিতা বলা হয়। কবিতার সৌন্দর্য-মহিমা একটি কণ্ঠ কিন্তু সে কণ্ঠ কবি তার ধ্যানের অমৃত চঞ্চু দিয়ে তুলে আনেন ফুল, পাখি, নদী, সমুদ্র, মহাসমুদ্রের অতল সেচে। মানুষ ফুল দেখে কমনীয় হতে শেখে কিন্তু ফুলকে ভালবেসে কবি যেমন তার অমলিন সৌন্দর্যকে স্পর্শ করেন মনের সুষমায়; তেমনি তাকে লালন করেন, উৎপাদন করেন বিচ্ছুরিত রূপ-সাধনা দিয়ে। এ সাধনার ‘অৎঃং াধষঁব’ কবিকে জগতের অন্য মানুষ থেকে একটি ‘যবরমযঃবহরহম অৎঃং াধষঁব’-তে পৌঁছে দেয়। কবি কল্পনা দিয়ে তার ভালবাসাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করেন, ধ্বংস করেন; আবার তাকে সৃষ্টি করেন নিজের স্বপ্ন দিয়ে। এ সৃষ্টি তার পেশা নয়; সৃষ্টি তার নেশা। যদি বলি এসব ভাবনা থেকে আমার কবিতা নির্মাণ হয়; তাও কি ঠিক? কারণ কবিতা আমার কাছ থেকে কখনও মুক্তি পায় না। আসলে আমি হেঁটে চলি কবিতার পথ দিয়ে; কেউ হয়ত আমার চলার শব্দ দেখবে- সে পথটি দেখবে কিন্তু আমার চলার শেষটা কেউ জানে না। কারণ আমিই জানি, আমি কেন ভাঙ্গি কেন গড়ি, আমি কেন চলি; কেন আমার পথের শেষ হয় না। আমি যখন একটি নদীর কাছে যাই, নদীর জল দেখে ঢেউ দেখে কোন নারীর জীবন নিয়ে নিজের স্বপ্ন নিয়ে ভাববো।তখন হয়তো আমি কবিতায় কোনো শোকগাঁথা অথবা স্বপ্নগাঁথার মতো করে কবিতা নির্মাণ করবো। কিন্তু তখন আমাকে ঘাটের মাঝি অথবা কলসি কাখে যে নারী দেখেছে, তার হয়ত শোকগাথা অথবা স্বপ্নগাথা কোনটিই আমি নির্মাণ করিনি। কারণ নদীতে যাওয়া ছিল আমার এক ধরনের ছল। ঢেউ তো আমি সৃষ্টি করি কবিতায়। তাই কবিতা সৃষ্টি করার জন্য আমি যে চিত্রকল্পকে গ্রহণ করি, তা হলো আমার চিন্তাশৈলীর অন্বেষা। আমার চিন্তার শৈলস্বর।
×