ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

খুলনায় নব্য জেএমবির সন্ধানে মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৮ আগস্ট ২০১৭

খুলনায় নব্য জেএমবির সন্ধানে মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনায় নব্য জেএমবির সন্ধানে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকার পান্থপথের একটি হোটেলে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নব্য জেএমবির সদস্য হিসেবে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাঠি গ্রামের আবুল খায়ের মোল্লার ছেলে সাইফুলের নাম আসার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুলনা মহানগর ও জেলার বিভিন্নস্থানে সতর্ক নজরদারি বাড়িয়েছে। নজরদারিতে রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি নব্য জেএমবির সন্ধানকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়। সূত্র মতে, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশের ন্যায় খুলনাতে সিরিজ বোমা হামলা চালায় জামায়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। এর পর খুলনায় অদ্যাবধি এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে খুলনার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু গত ১৫ আগস্ট ঢাকায় আত্মঘাতী হওয়া সাইফুল ইসলামের বাড়ি খুলনায় হওয়াতে নব্য জেএমবির বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আবারও নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। গত বছর জুলাই মাসে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলার ঘটনা এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জঙ্গীদের গ্রেফতারের ঘটনা ঘটলেও খুলনাতে জঙ্গী তৎপরতা নজরে আসেনি। কিন্তু ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার ঢাকায় খুলনার ছেলে সাইফুল নিহত হওয়ায় পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর সতর্কতার সঙ্গে সমগ্র খুলনায় নজরদারি করছে। সাইফুলের মতো আরও কেউ খুলনায় নব্য জেএমবি আছে কিনা তার অনুসন্ধান চলছে। সাইফুলের ঘটনার পর খুলনা মহানগরী জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত রয়েছে তাদের ব্যাপারে বিশেষ অনুসন্ধান চলছে। বিশেষ করে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজী ভার্সনের স্কুল-কলেজ ও পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট প্রশাসনের নজরদারিতে রয়েছে। তবে জামায়াত-শিবির পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি রয়েছে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেপথ্যে থেকে ছাত্রশিবিরের নেতারা কলকাঠি নাড়াচ্ছে তাদের ব্যাপারেও খোঁজখবর নিচ্ছে প্রশাসন। প্রশাসন এটুকু নিশ্চিত হয়েছে যে, খুলনা মহানগরীর বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে শিবির নিয়ন্ত্রিত। শিবির নেতারা নেপথ্যে থেকে তাদের পছন্দমতো কিছু লোককে পরিচালনা পরিষদে রেখে প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করছে। খুলনা জেলা পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা জানান, নিয়মিত কার্যক্রম ও গোয়েন্দা নজরদারির পাশপাশি জঙ্গী বিরোধী অভিযানে পুলিশ সব সময় তৎপর। তবে মঙ্গলবার ঢাকায় আত্মঘাতী যুবক খুলনার ডুমুরিয়ার বাসিন্দা হওয়ায় জেলাব্যাপী পুলিশের গোয়েন্দা তদারকি বাড়ানো হয়েছে। নব্য জেএমবি কোথাও আছে কিনা তা খুঁজে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে যাচাইবাছাই চলছে। সাইফুলের বাবাসহ ২ জন গ্রেফতার ॥ ঢাকার পান্থপথে একটি হোটেলে ‘আত্মঘাতী জঙ্গী’ সাইফুল ইসলামের বাবা খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাঠী গ্রামের বাসিন্দা মাঠেরহাট মসজিদের ইমাম মোঃ আবুল খায়েরসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার থেকে তারা পুলিশ হেফাজতে ছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের আটক দেখানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনার পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা এ তথ্য জানিয়েছেন।
×