ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হবিগঞ্জে হামলার প্রস্তুতিকালে ৩ শিবির ক্যাডার আটক

প্রকাশিত: ০১:২৬, ১৭ আগস্ট ২০১৭

হবিগঞ্জে হামলার প্রস্তুতিকালে ৩ শিবির ক্যাডার আটক

নিজস্ব সংবাদদাতা,হবিগঞ্জ ॥ রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ওপর হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ব্যাপক প্রস্তুতিকালে অস্ত্রশস্ত্র এবং বিপুল পরিমান জিহাদী বই সহ হবিগঞ্জ শহর থেকে ৩ শিবির ক্যাডারকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো, জেলার মাধবপুর উপজেলাধীন কাটুরা গ্রামের জিয়া উদ্দিনের পুত্র মাসুম বিল্লাহ (১৮), হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকার বাসিন্দা বিল্লাল হোসেনের পুত্র সরোয়ার হোসেন (১৮) ও কিশোরগঞ্জ জেলাধীন মিটামইন উপজেলার কাটখাল গ্রামের রেনু মিয়ার পুত্র নাজমুল হোসেন (১৯)। এসময় পুলিশ ১ টি পাইপগান, ৫ রাউন্ড গুলি, ৩ টি রামদা, ১ টি চাইনিজ কুড়াল, ৩ টি মোটর সাইকেল, ৩ ডজন চকলেট বোমা সহ বেনার-ফেস্টুন আর জিহাদী বই উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শিবির কর্মীদের হামলা ও ধস্তাধস্তিতে সদর থানার ওসি (তদন্ত) মানিকুল ইসলাম, এসআই অরূপ কুমার ও এসআই রাকিবুল ইসলাম আহত হন। নবাগত পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরার সার্বিক তত্বাবধানে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সদর থানা পুলিশের একটি বিশেষ টীম হবিগঞ্জ শহরের অনন্তপুর আবাসিক এলাকার জেলা জামায়াতে ইসলামীর অফিসে ঝটিকা অভিযান চালালে ওই শিবির ক্যাডাররা আটক হয়। পুলিশ জানায়, আসছে ২১ আগষ্টকে সামনে রেখে জেলা জামায়াতের ওই অফিসে অস্ত্রশস্ত্র সহ শিবির কর্মীরা জড়ো হয়ে গোপন বৈঠক করছিল। গোপনে এই সংবাদ জানতে পেরে নবাগত এসপি বিধান ত্রিপুরার নির্দেশে সদর থানার ওসি ইয়াসিনুল হক ও ওসি (তদন্ত) মানিকুল ইসলামের নের্তৃত্বে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ওই তিনজন শিবির কর্মীকে আটক করা সম্ভব হলেও ধস্তাধস্তি ও কৌশলে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে তাদেরকেও আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা জানান, ১৫ আগষ্ট শুধু নয় ২১ আগষ্টেও হামলার জন্য শিবির ক্যাডাররা প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আর এরই অংশ হিসেবে নাশকতার উদ্দেশ্যেই হবিগঞ্জেও শিবিরকর্মীরা গোপন বৈঠক করছিল। পুলিশেরই অপর একটি সূত্র থেকে ওই ধরনের হামলার একটি চক উদ্ধার করা হয়েছে অভিযানকালে অফিস স‍ূত্র আরও জানায়, হবিগঞ্জ শহরের ওই এলাকায় অবস্থিত জামায়াতের কার্যালয়ে প্রতিদিনই নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়ে শুধু সভা করা নয় বরং পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে সাধারন মানুষকে জাগ্রত করতে অলিগলিতে ফটোসেশন করাও ছিল তাদের নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। কিন্তু সদর থানা পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা শাখা গুলো অজ্ঞাতকারনে শিবির ক্যাডারদের নজরদারীতে ছিল বেশ অমনোযুগী। ফলে হবিগঞ্জ শহরে এখনও প্রকাশ্যে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা দাপটের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যাদের নামে রয়েছে একাধিক মামলাও। জানা গেছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া মৌলবাদী পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের আদ্যক্ষরের ‘ম’ নামধারী এক সুচতুর সাংবাদিক এইসব অশুভ কর্মকান্ডে উস্কানী দিচ্ছে। এমনকি সাবেক অর্থমন্ত্রী শামস কিবরিয়া হত্যাকান্ডের সাথেও নাকি তার ছিল সরাসরি সর্ম্পৃক্ততা। যা নিয়ে মিডিয়াতে নানা সময়ে সংবাদও প্রকাশ পায়। তবে অজ্ঞাত কারনে সে থেকে যায় ধরাছোয়ার বাইরে। তার সাথে নাকি রয়েছে আরও কয়েকজন সাংবাদিক সহ প্রভাবশালী ব্যক্তির বড় ধরনের আর্শিবাদ। অথচ বর্তমানে কারাগারে অন্তরীন বর্তমান জেএমবি প্রধান সাঈদুর রহমানের বাড়ী থেকে এই সাংবাদিকের ব্যবহৃত মটর সাইকেলটিও উদ্ধার করেছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তারপরও সে এখন হবিগঞ্জ শহরে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জানা গেছে, বেড়ানোর নামে সে গেল কয়েকদিন যাবত ভারতে অবস্থান করছে। বলাবাহুল্য, যখনই হবিগঞ্জের কোথাও না কোথাও নাশকতামূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হয় এই সুচতুর সাংবাদিক অন্যত্র চলে যান বলে শহরের সর্বত্র জোর গুঞ্জন রয়েছে।
×