ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যার কারনে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না ॥ খাদ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:৪৬, ১৬ আগস্ট ২০১৭

বন্যার কারনে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না ॥  খাদ্যমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ চলতি অর্থবছরে সরকার যে পরিমাণ ধান-চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, সারাদেশে বন্যার কারণে তা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। বুধবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সভায় দেশের সার্বিক খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার হাওড় এবং অন্যান্য এলাকার বন্যার কারণে এক কোটি ৯১ লাখ টন বোরো ধান উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা পূরণ হবে না। এছাড়া আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যে সাত লাখ টন ধান ও ৮ লাখ টান চাল সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছিলাম, সেটাও কিনতে পারিনি। আমরা মাত্র ২ লাখ ৭০ হাজার টন ধান ও চাল সংগ্রহ করতে পেরেছি। বন্যার কারণেই পৌনে ১০ লাখ টন ধান/চাল সংগ্রহ করতে পারবো না। বন্যা যেভাবে আসছে তাতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। এসব দিক বিবেচনা করে ১৫ লাখ টন চাল ও ৫ লাখ টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ দেশে খাদ্য সংকট আছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশে কোনও খাদ্য সংকট নেই। পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। বাজারেও খাদ্য আছে। ইতোমধ্যে ভারত থেকে ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে দুই লাখ ৬০ হাজার টন চাল ও অন্যান্য দেশ থেকে ৫ লাখ ৭০ হাজার টন গমও এসেছে। বন্যার কারণে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আমাদের এ খাদ্য সংগ্রহ অভিযান। অতিমাত্রায় সাবধানতা অবলম্বন করায় আমাদের এটা আমদানি করতে হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চালের ওপর আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। ফলে অনেক ব্যবসায়ী চাল আমদানি করছেন। চাল আমদানি উৎসাহিত করতে বিদ্যমান ১০ শতাংশ থেকে শুল্ক কমিয়ে ২ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন। দুই একদিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’ খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল আসছে। কম্বোডিয়া থেকে আড়াই লাখ টন চাল আমাদানির চুক্তি হয়েছে। ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির অনুমোদন হলেই আমদানি প্রক্রিয়া শুরু হবে। এছাড়া উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সাড়ে তিন লাখ টন চাল আসছে বিভিন্ন দেশ থেকে। খাদ্য মজুদের পরিমাণ খুবই ভালো। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চাল আমদানিতে যে সাড়া পাচ্ছি, তাতে কোনও সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’ এ মুহূর্তে দেশে কত লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আড়াই লাখ টন চাল বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার মধ্যে রয়েছে।’ বন্যায় চাল বিতরণে সরকারের বরাদ্দ আটকে যাচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও জায়গায় বরাদ্দ আটকে নেই। সরকারি নিয়মের মধ্যে যখন যেখানে যা প্রয়োজন, তা সরবরাহ করা হচ্ছে।’ বাজারে চালের দাম ১০ টাকা বাড়লেও কমেছে এক টাকা? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘চালের দাম একবারে ১০/২০ টাকা কমবে এমন প্রত্যাশা করা ঠিক না। দাম সবার ক্রয়সীমার মধ্যে আছে। দাম নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনও হা-হুতাশ নেই। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশের ৫০ লাখ পরিবারের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হবে।’
×