নিজস্ব সংবাদদাতা সুনামগঞ্জ ॥ ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও ধর্মপাশা উপজেলার প্রায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। অনেক ঘর বাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় রান্না বান্নাসহ গবাদি পশুর খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে সুনামগঞ্জে স্কুল ও স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ধর্মপাশা দিরাই ও সদর উপজেলার সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শনিবার ও রবিবারের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এসব স্কুলের প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা চলছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বায়োজীদ খান বলেন, ‘ জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্কুল ও স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্থগিত পরীক্ষাগুলো আবার নেওয়া হবে।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতের কারণে ৬টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে সুনামগঞ্জের ষোলঘর পয়েন্টে ২৩ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘন্টায় গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২২২ মি.মি। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় জেলার সবকটি হাওরে পানি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বালিজুড়ী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মিলন রায় জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে রক্তিনদীর পাশ্ববর্তী আনোয়ারপুর বাজার ব্রীজ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও আনোয়ারপুর ও শক্তিয়ারকলা সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে পাকা রাস্তার ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই নয় আনোয়ারপুর বাজারের ২০-২৫টি দোকানপাট তলিয়ে গিয়ে বাজার হাট বন্ধ রয়েছে। তবে প্লাবিত হওয়া এলাকাগুলোতে খেটে খাওয়া মানুষেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। গবাদী পশুগুলোর অবস্থা আরো করুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ যেখানে নিজেদের খাদ্য ও পানির ব্যবস্থা করতে পারছে না, সেখানে গবাদী পশুর দিকে খেয়াল দেওয়ার অবকাশ নেই। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মেঘালয় পাদদেশসহ ভারতে বর্ষারোহী মৌসুুমি বায়ু জোরালো রয়েছে। সীমান্তবর্তী নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন নতুন এলাকাগুলো প্লাবিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস জানান, ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢল নেমে এসে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সে.মি উপর দিয়ে বইছে। জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জে বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হচ্ছে। তবে বন্যার মোকাবেলায় সতর্ক থাকার জন্য ১১টি উপজেলার ইউএনকে সতর্ক জানানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: