ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারী বর্ষনে নীলফামারী প্লাবিত

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ১২ আগস্ট ২০১৭

ভারী বর্ষনে নীলফামারী প্লাবিত

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার (৫২.৪০) ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর শোঁ শোঁ শব্দ আর গর্জন তিস্তা অববাহিকা কাঁপিয়ে তুলেছে। অপর দিকে এক নাগাড়ে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে নীলফামারী জেলা সহ পাশ্ববর্তি এলাকা সমুহ। নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। শুধু নদী লাগোয়া সকল গ্রাম নয়। অবিরাম বর্ষনের কারনে মাঠঘাট,বাড়িঘর,সড়ক,ফসলী জমি সব কিছু তলিয়ে গেছে। সেই যে গত বুধবার হতে বৃস্টি শুরু হয়েছে তা থামবার নাম নেই। চলছেতো চলছে। জেলার প্রতিটি নদী এখন বিপদসীমায়। অবিরাম বর্ষনে জনজীবন থমকে গেছে। রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল কমে গেছে। মানুষজন জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি হতে বের হচ্ছেনা। ভারী বর্ষন ও নদীর পানি উপচে লোকালোকে প্রবেশ করায় এ জেলার ২০ লাখ মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছে। কৃষকদের মতে জেলার ৫০ হাজার হেক্টর আমন ধানের জমি তলিয়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টি নীলফামারী জেলার গত কয়েক বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। নীলফামারী সদরে ১৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং বৃস্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। জেলা শহরের প্রতিটি পাড়া মহল্লার পথঘাট ও বাসা বাড়ি বৃস্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া এ জেলার ডোমারে ২২৩,ডিমলায় ১৫০,জলঢাকায় ২০৭,সৈয়দপুরে ২৫০ ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় ২৪৫ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা কৃষি বিভাগ। অপর দিকে গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তা অববাহিকার ডালিয়া পয়েন্টে ১৮৬ মিলিমিটার বৃস্টিপাত হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানানো হয়েছে। কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে তিস্তা নদী ছাড়াও পানি বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বুড়ি তিস্তা, চারালকাটা, বুড়িখোড়া, যমুনেশ্বরী, খড়খড়িয়া, দেওনাই, খেড়–য়া, শালকি, নাউতারা, কুমলাই, ধুম, ধাইজান, চিকলি, আউলিয়া খানা,ইছামতি । এদিকে জেলা প্রশাসক মোহম্মদ খালেদ রহীম জানান প্রশাসনের সকল স্থরের সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। “কোথায় কী ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে তা নিয়ে রিপোর্ট তৈরির কাজ করা হচ্ছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা ব্যরাজ ডালিয়া পানি উনয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্র সুত্র জানায় গতকাল শুক্রবার তিস্তা অববাহিকায় ডালিয়া পয়েন্টে ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩২ মিলিমিটার। একই সুত্র মতে গত বুধবার ১৫৮ ও বৃহস্পতিবার ১৬৪ মিলিমিটার বৃস্টি হয়েছিল তিস্তা অববাহিকায়। ফলে গত ৯৬ ঘন্টায় ৬৪০ মিলিমিটার বৃস্টিপাত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সারে ১০ টা পর্যন্ত বৃস্টিপাত অব্যাহত ছিল। এ ছাড়া তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা ব্যারজের ৪৪টি জলকপাট সার্বক্ষনিক খুলে রাখা হয়েছে। নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাহিনুর আলমের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের সকল সহকারী কমিশনার এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগন সহ সকল সরকারী বিভাগের লোকজন মাঠে নেমে পরিস্থিতি পর্যক্ষন ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরপণ করছেন। তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান জানান চারদিনে অবিবরাম বর্ষনের পানি ছাড়াও উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে।
×