ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্যাকেটে সতর্কবানী প্রচারে তামাকবিরোধী ১১টি সংগঠনের মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০২:২৬, ১০ আগস্ট ২০১৭

প্যাকেটে সতর্কবানী প্রচারে তামাকবিরোধী ১১টি সংগঠনের মানববন্ধন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্যাকেটে সতর্কবানী প্রচারে তামাকবিরোধী ১১টি সংগঠন মানববান্ধন করেছে। মানববন্ধন শেষে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমারকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর আইনানুগ বাস্তবায়নের দাবিতে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, এসিডি, ইপসা, প্রত্যাশা, এইড ফাউন্ডেশন, উবিনীগ, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বিসিসিপি, টিসিআরসি, প্রজ্ঞাসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন আজ ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হেলাল আহমেদ, সৈয়দা অনন্যা রহমান, আমিনুল ইসলাম বকুল, শাহীদা আক্তার, মো. বজলুর রহমান, নাজমুল হায়দার প্রমুখ। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপে আবারও ভেস্তে যেতে বসেছে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর আইনানুগ বাস্তবায়ন। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখ হতে সকল তামাকজাত পণ্যের প্যাকেটে উপরের অংশে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ বাধ্যতামূলক মর্মে এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করায় বাংলাদেশ সিগারেট ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ) বিরোধিতা করে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) একটি চিঠি দিয়েছে। আবারও ব্যান্ড রোল বা স্ট্যাম্পের দোহাই দিয়ে প্যাকেটের নিম্নভাগে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। রাজস্ব হ্রাসের হুমকি দিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো গত বছর যেমন এনবিআর’কে তাদের পক্ষে এনেছিল, সেই সম্ভাবনা এবারও দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সিগারেট কোম্পানির মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকগণ (এমডি) একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী ছাড়াও বাণিজ্যমন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড স্ব-উদ্যোগে সিগারেট কোম্পানিসহ, আইন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং এনটিসিসি’র প্রতিনিধি নিয়ে আজ বিকাল ৩টায় একটি বৈঠকের আয়োজন করেছে। অথচ এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫ দশমিক ৩ ধারা অনুযায়ী, তামাক নিয়ন্ত্রণের যেকোনো পলিসি বাস্তবায়নে তামাক কোম্পানির সাথে আলোচনার সুযোগ নেই। মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তারা আরও জানান, সিগারেটের প্যাকেটের সামনে/পিছনের পরিবর্তে পার্শ্বদেশে লম্বালম্বিভাবে স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল লাগিয়ে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। এতে একদিকে ২০১৭ সালের স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল নির্দেশনাও প্রতিপালন হবে অন্যদিকে ২০১৩ সালের আইন ও ২০১৫ সালের বিধিমালার বিধান প্রতিপালন করে প্যাকেটের উভয়পার্শ্বে উপরিভাগে পঞ্চাশ ভাগ স্থান জুড়ে ছবিযুক্ত সতর্কবাণী অক্ষত (স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোলে ঢেকে যাওয়া থেকে) রাখা সম্ভবপর হবে। কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পার্শ্বদেশে স্ট্যাম্প লাগানোর বিধান প্রচলিত রয়েছে। প্রসঙ্গত, তামাকপণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ তামাক নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর কৌশলগুলোর অন্যতম হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশে এই উদ্যোগটির গুরুত্ব অনেক বেশি কারণ, এদেশের মোট জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ লেখা-পড়া জানেন না। ‘তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৩’ ও এর বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী গত ১৯ মার্চ ২০১৬ তারিখ থেকে সকল তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইনের ১০ ধারা অনুযায়ী সকল তামাকজাত পণ্যের প্যাকেটের উপরের অংশে ৫০ শতাংশ জায়গা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণের বিধান থাকলেও সিগারেট কোম্পানিগুলোর হস্তক্ষেপের কারণে আইন মন্ত্রণালয় তামাকপণ্যের প্যাকেটের নিম্নভাগে ৫০ শতাংশ স্থান জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণের সাময়িক অনুমতি প্রদান করলে সরকারের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) ১৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে এসংক্রান্ত এক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
×