ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাষ্ট্রপক্ষের আশাবাদ

বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপীলের রায় শীঘ্রই

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৯ জুলাই ২০১৭

বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপীলের রায় শীঘ্রই

বিকাশ দত্ত ॥ বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ১৫২ আসামির মৃত্যুদ-ের অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আসামিদের আপীলের রায় শীঘ্রই ঘোষণা করা হতে পারে বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের শুনানি শেষে গত ১৩ এপ্রিল রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি ) রাখা হয়। সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ায় এখন যে কোন দিন এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জনকণ্ঠকে বলেছেন, আমি আশা করছি এ মামলার রায় শীঘ্রই ঘোষণা করা হতে পারে। বিচারপতি মোঃ শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মোঃ আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার। আসামির সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপীল শুনানির জন্য ২০১৫ সালে এই বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়। এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, দেশের ইতিহাসে সব চেয়ে বড় ডেথ রেফারেন্স ও আপীল মামলা এটি। আসামি পক্ষ ও আমরা শুনানি করেছি। আদালত শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য সিএভি রেখেছে। আমি আশা করছি রায়টি শীঘ্রই হতে পারে। ‘আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।’ শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, কিছু আসামি আছে যাদের মৃত্যুদ- হওয়া উচিত ছিল কিন্তু হয়নি। কিছু আসামি আছে যারা খালাস পেয়েছেন তাদের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আমরা তিনটি দরখাস্ত করেছিলাম। কিন্তু দরখাস্ত দেরিতে দেয়া হয়েছে বলে আদালত সেগুলো নাকচ করে দিয়েছে। পিলখানা হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের দেয়া ১৬১ জনের যাবজ্জীবন, ২৩৭ জনের ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদের কারাদ- ও ১৯৪ জনের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে সাজা বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রপক্ষ আবেদনগুলো করেছিল । দ্রুত আপীল শুনানি করার জন্য সুপ্রীমকোর্টের বিশেষ ব্যবস্থায় সর্বমোট ৩৭ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। এজন্য মোট ১২ লাখ ৯৫ হাজার পৃষ্ঠার ৩৫ কপি ও অতিরিক্ত ২ কপি পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়। ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি সকল ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপীলের শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ বেঞ্চটি গঠন করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন। পরদিন ৫ জানুয়ারি বসে ১৮ জানুয়ারি শুনানি শুরুর দিন ধার্য করে দেয় বিশেষ বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দফতরে রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই ঘটনার পর ৫৭টি বিদ্রোহের মামলার বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। আর হত্যাকা-ের বিচার চলে বকশীবাজারে আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে। ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোঃ আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নবেম্বর এ হত্যা মামলার যে রায় ঘোষণা করেন, তাতে ১৫২ আসামিকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়। মামলার সাড়ে ৮০০ আসামির মধ্যে ওই রায়ের দিন পর্যন্ত জীবিত ছিলেন ৮৪৬ জন। তাদের মধ্যে ১৬১ জনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদ-। পাশাপাশি অস্ত্র লুটের দায়ে তাদের আরও ১০ বছরের কারাদ- এবং ২০ হাজার টাকা জারিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদ- দেন বিচারক। এছাড়া ২৫৬ আসামিকে তিন থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদের কারাদ- ও অর্থদ- দেয়া হয়। কারও কারও সাজার আদেশ হয় একাধিক ধারায়। অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ে ২৭৭ জনকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। মৃত্যুদ-ে দ-িতরা বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদস্য ছিলেন। যাবজ্জীবন কারাদ-ে দ-িতদের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীও রয়েছেন। এর মধ্যে নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ওই রায়ের এক বছরেরও বেশি সময় পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। দ-াদেশের বিরুদ্ধে আপীল ও জেল আপীল করে আসামিপক্ষ। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষও খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে ও সাজা বাড়াতে আপীল করে। নিম্ন আদালত যাদেরকে ফাঁসি দিয়েছিল তাদের মধ্যে রয়েছেন ডিএডি তৌহিদুল আলম, ডিএডি নাছির উদ্দিন খান, ডিএডি মির্জা হাবিবুর রহমান, ডিএডি আবদুল জলিল, সিপাহী সেলিম রেজা, সিপাহী মোঃ শাহ আলম, সুবেদার মেজর গোফরান মল্লিক, সিপাহী সাজ্জাদ হোসেন, সিপাহী কাজল আলী, সিপাহী আবদুল মতিন, বেসামরিক ব্যক্তি জাকির হোসেন, ল্যান্স নায়েক শাহ আলম, হাবিলদার আবু তাহের, সিপাহী আজিম পাটওয়ারী, সিপাহী রেজাউল করিম, সিপাহী রফিকুল ইসলাম, সিপাহী মোঃ রফিকুল ইসলাম, সিপাহী জসিম উদ্দিন, ল্যান্স নায়েক মোঃ জাকারিয়া মোল্লা, ল্যান্স নায়েক মোঃ আঃ করিম, ল্যান্স নায়েক মোঃ শাহাবুদ্দিন তালুকদার, সিপাহী মোঃ হাবিবুর রহমান, সিপাহী মোঃ জিয়াউল হক, সিপাহী রুবেল মিয়া, হাবিলদার সহকারী খন্দকার মনিরুজ্জামান, সিপাহী মোঃ আজাদ খান, সিপাহী খন্দকার শাহাদত, সিপাহী মোঃ এমরান চৌধুরী, ল্যান্স নায়েক মোঃ ইকরামুল ইসলাম, সিগন্যালম্যান মোঃ আবুল বাশার, সিপাহী মোঃ শেখ আইয়ুব আলী, হাবিলদার মোঃ খায়রুল আলম, সিপাহী মোঃ ওবায়দুল ইসলাম, সিপাহী মোঃ শামীম আল মামুন, সিপাহী মোঃ সিদ্দিক আলম, সিপাহী মোঃ আমিনুল, সিপাহী মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিপাহী মোঃ রিয়ান আহাম্মেদ, সিপাহী মোঃ রাজিবুল হাসান, সিপাহী মোঃ সুমন মিয়া, সিপাহী মোঃ হারুন রশিদ মিয়া, সিপাহী মোঃ আতোয়ার রহমান, সিপাহী মোঃ ইব্রাহিম, সিপাহী মোঃ কামাল মোল্লা, সিপাহী মোঃ আবদুল মুহিত, সিপাহী মোঃ রমজান আলী, সিপাহী মোঃ শাহীন শিকদার, নায়েক সুবেদার শাহজাহান আলী, হাবিলদার মোঃ ইউসুফ আলী, সিপাহী মোঃ বজলুর রশিদ, ল্যান্স নায়েক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, হাবিলদার জালাল উদ্দিন আহমেদ, সিপাহী মোঃ আলিম রেজা খান, হাবিলদার শাহজালাল, জেসিও সুবেদার মোঃ খন্দকার একরামুল হক, জেসিও নায়েক সুবেদার মোঃ শাইদুর রহমান, জেসিও সুবেদার মেজর মোঃ শহিদুর রহমান, জেসিও নায়েব সুবেদার মোঃ আজিজ মিয়া, পিয়ন এমএলএসএস মোঃ সাইফুদ্দিন মিয়া, জেসিও নায়েক সুবেদার মোঃ আলী আকবর, সিপাহী মোঃ কাজী আরাফাত হোসেন, সিপাহী মোঃ হায়দার আলী শেখ, সিপাহী মোঃ আবুল বাশার, জেসিও নায়েব সুবেদার মোঃ ফজলুল করিম, হাবিলদার এবিএম আনিসুজ্জামান, সিপাহী মোঃ মতিউর রহমান, নায়েক মোঃ ওয়াজেদুল ইসলাম, সিগন্যালম্যান মোঃ মনির হোসেন, সিপাহী মোঃ মনিরুজ্জামান, নায়েক আবু সাঈদ আলম, সিপাহী মোঃ তারিকুল ইসলাম, নায়েব সুবেদার ওয়ালি উল্লাহ, সিপাহী মোঃ হারুন অর রশিদ, সিপাহী আতিকুর রহমান, সিপাহী ড্রাইভার মোঃ হাবিবুর রহমান, সিপাহী মোঃ রমজান আলী, হাবিলদার (চালক) আঃ সালাম খান, সিপাহী মোঃ তারিকুল, হাবিলদার বিল্লাল হোসেন খান, হাবিলদার মাসুদ ইকবাল, নায়েক মোঃ আবদুল কাইয়ুম, হাবিলদার মোঃ আক্তার আলী, হাবিলদার মোঃ শফিকুল ইসলাম, ল্যাঃ নায়েক মোজ্জাম্মেল হক, নায়েক সুবেদার মনোরঞ্জন সরকার, নায়েব সুবেদার আবুল খায়ের, হাবিলদার জাকির হোসেন তালুকদার, সিপাহী মোঃ সাইফুল ইসলাম, হাবিলদার মোঃ সহঃ আবুল বাশার, জেসিও সুবেদার মোঃ ইউসুফ আলী খান, জেসিও মেডিঃ এ্যান্সি. নায়েব সুবেদার খান মোঃ তোরাব হোসেন, নায়েক মোঃ নজরুল ইসলাম, নায়েক চালক মোঃ আলী হোসেন, হাবিলদার মোঃ হুমায়ুন কবির (সুধীর), হাবিলদার মোঃ ওমর আলী, সিপাহী রাজু মারমা, সিপাহী আল মাসুম, নায়েক মোঃ শফিকুল ইসলাম, হাবিলদার জমিস উদ্দিন খান, সিপাহী মোঃ আবদুর রশিদ, সিপাহী মোঃ জিয়াউল হক, সিপাহী মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম, নায়েক ফিরোজ মিয়া, সিপাহী মোঃ শাহীনূর আল মামুন, নায়েক মোঃ নূরুল ইসলাম, নায়েক শেখ মোঃ শহিদুর রহমান, সিপাহী মোঃ মহসিন আলী, সিপাহী এসএম সাইফুজ্জামান, সিপাহী উত্তম বড়ুয়া, জেসিও নায়েক সুবেদার মোঃ কবির উদ্দিন, সিপাহী এসএম রেজওয়ান আহম্মেদ, সিপাহী মোঃ নাজমুল হোসাইন, জেসিও সুবেদার মোঃ আবদুল বারী, সিপাহী মোঃ আমিনার রহমান, সিপাহী মোঃ জাহিদুল ইসলাম, সিপাহী রাখাল চন্দ্র, নায়েক মোঃ রফিকুল ইসলাম, সিপাহী মোঃ এরশাদ আলী, ল্যাঃ নাঃ হাবিবুল্লা বাহার, নায়েক (চালক) মোঃ নজরুল ইসলাম, নায়েক মোঃ আসাদুজ্জামান, সিপাহী মোঃ মিজানুর রহমান, সিপাহী মোঃ মুকুল আলম, সিপাহী মোঃ হাসিবুল হাসান, সিপাহী পল্টন চাকমা, সিপাহী মোঃ মাঈন উদ্দিন, সিপাহী মোঃ রেজাউল করিম, সিপাহী মোঃ বাকী বিল্লাহ, সিপাহী মোঃ কামরুল হাসান, সিপাহী মোঃ মেজবাহ উদ্দিন, সিপাহী মোঃ সেলিম, সিপাহী মোঃ নুরুল আলম, ল্যান্স নায়েক মোঃ হামিদুল ইসলাম, সিপাহী মোঃ আনিছুর রহমান, সিপাহী মোঃ মকবুল হোসেন, সিপাহী মোঃ সালাউদ্দিন, ল্যান্স নায়েক রেজাউল করিম, ডিএডি মোঃ নূরুল হুদা, নায়েক সুবেদার মোঃ ইসলাম উদ্দিন, ল্যান্স নায়েক মোজাম্মেল হক, হাবিলদার মোঃ দাউদ আলী বিশ্বাস, সিপাহী মোঃ জসিম উদ্দিন, নায়েক শাহী আকতার, ল্যান্স নায়েক মোঃ মজিবুর রহমান, ল্যান্স নায়েক মোঃ আনোয়ার হোসেন, ল্যান্স নায়েক মোঃ হাসনাত কামাল, ল্যান্স নায়েক সহকারী ইমদাদুল হক, ল্যান্স নায়েক সহকারী সেলিম মিয়া, ল্যান্স নায়েক সহকারী নজরুল ইসলাম, হাবিলদার বেলায়েত হোসেন এবং সিপাহী মোঃ আবুল কালাম আজাদ।
×