অনলাইন ডেস্ক ॥ শুরুটা ২০০০ সালে। মেদিনীপুরে বন্যা দেখতে যাওয়া তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে প্রথম শোনা গিয়েছিল ‘ম্যানমেড বন্যা’র তত্ত্ব। তার পরেও একাধিকবার বাংলার বন্যাকে ‘ম্যানমেড’ আখ্যা দিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও এ বার তাঁর মুখে ফের ফিরে এল ‘ম্যানমেড বন্যা’র তত্ত্ব। এ নিয়ে তিনি বিঁধলেন ডিভিসি ও কেন্দ্রকে। জবাব দিয়েছে ডিভিসি-ও।
ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে গিয়ে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বৃষ্টি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আচমকা ডিভিসি যে ভাবে জল ছেড়েছে, তাতেই বন্যা হয়েছে। যে পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে, তাতে আগামী দু’দিন পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে। এই বন্যায় মানুষের কোনও প্রস্তুতি থাকে না। এটা ম্যানমেড বন্যা নয়তো কী?’’ মমতার দাবি, ‘‘২০০৯ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ফরাক্কায় অনেক দিন ডুবে ছিল একটি ট্রেন। তখন রেলের অফিসারেরা আমাকে বলেছিলেন, ম্যাডাম এটা ম্যানমেড বন্যা।’’ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও এ দিন সংসদে ‘ম্যানমেড বন্যা’ নিয়ে সরব হন।
ডিভিসি কর্তাদের পাল্টা দাবি, বাঁধের যা অবস্থা, তাতে আরও বেশি জল ছাড়া দরকার। যেমন, পাঞ্চেতের জলধারণ ক্ষমতা ৪২৫ ফুট। সেখানে জলস্তর চলে গিয়েছে ৪৩০ ফুটে। আরও খারাপ অবস্থা তেনুঘাটের। জলস্তর বাড়ছে মাইথনেরও। পাঞ্চেতের জনসংযোগ আধিকারিক বিজয় কুমার বলেন, ‘‘রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে যতটা জল ছাড়া উচিত, তার থেকে অনেক কম জল ছাড়ছি। তা সত্ত্বেও আমাদের উপরে বারবার মিথ্যা দোষারোপ করা হচ্ছে।’’
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, ‘‘বন্যা হলেই বলা হয় ম্যানমেড! রেগুলেটরি বোর্ডে এ রাজ্যেরও প্রতিনিধি রয়েছেন। তিনি কেন কিছু জানতেন না?’’ কংগ্রেস নেতা মনোজ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের সঙ্গে তো মুখ্যমন্ত্রীর ভাল সম্পর্ক। দিল্লিতে উনি বলুন যেন জল এ ভাবে না ছাড়া হয়।’’
মমতার দাবি, গত সাত বছর ধরেই কেন্দ্রকে বাঁধ সংস্কারের জন্য বলছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘জল ধারণের ক্ষমতা বাড়াক ডিভিসি। না হলে সমস্যার সমাধান হবে না। মনমোহন সিংহকে বলেছি, এখন মোদীজিকেও বলছি।’’ প্লাবিত এলাকায় ক্ষতিপূরণ হিসেবে কেন্দ্র যে বিপুল টাকা দেয়, তার কিছু অংশ ব্যারাজ সংস্কারে কাজে লাগানো হলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি আটকানো যায় বলেও মন্তব্য মমতার।
সূত্রা : আনন্দবাজার পত্রিকা
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: