ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন কর্মকর্তা লিসা কার্টিস আসছেন ৩০ জুলাই

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৮ জুলাই ২০১৭

মার্কিন কর্মকর্তা লিসা কার্টিস আসছেন ৩০ জুলাই

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক জোরদারে ঢাকায় আসছেন হোয়াইট হাউসের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা লিসা কার্টিস। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানোর লক্ষ্যে আগামী ৩০ জুলাই ঢাকায় আসছেন তিনি। লিসা কার্টিস যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ডেপুটি এ্যাসিস্ট্যান্ট এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, লিসা কার্টিসের ঢাকা সফর হবে খুবই সংক্ষিপ্ত। তিনি একদিনের সফরে আসছেন। তবে এই সংক্ষিপ্ত সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক হবে। চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। শুরু থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ঢাকা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মার্কিন সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নতুন করে আলোচনাও শুরু করেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) নিয়ে ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চালিয়ে আসছিল বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা এখনও পায়নি। সে কারণে এই ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন। সে সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি টমাস শ্যাননের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তারা সেখানে উন্নয়ন সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সন্ত্রাস ও সহিংসতা দমন এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক ইস্যুতে আলোচনা করেন। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক ওয়াশিংটন সফরকালে ট্রাম্পের ডেপুটি এ্যাসিস্ট্যান্ট লিসা কার্টিসের সঙ্গেও সাক্ষাত করেছিলেন। তারা দুজনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা বিশেষ করে সন্ত্রাস ও সহিংসতা দমনের বিষয়ে আলোচনা করেন। লিসা কার্টিস বাংলাদেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ গণতন্ত্রকে স্বাগত জানান। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন কার্টিস। পররাষ্ট্র সচিব তখনই লিসা কার্টিসকে বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানান। লিসা কার্টিস আমন্ত্রণ গ্রহণ করে শীঘ্রই বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী এই সফর হচ্ছে। লিসা কার্টিসের ঢাকা সফরের মূল ফোকাস হবে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমন। বিশেষ করে গত বছরের পহেলা জুলাই হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার পর এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারে বিশেষ আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে তার সফরকালে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় ঢাকা। সে কারণেই লিসা কার্টিসের এই সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়তে চায়। আর দক্ষিণ এশিয়ার ভৌগোলিক কৌশলতগত কারণে বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। জানা গেছে, লিসা কার্টিসের সফরের পরে ঢাকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসনেরও সফর হতে পারে। সে বিষয়েও আলোচনা চলছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ইতোমধ্যেই টিলারসনের কাছে পাঠানো এক বার্তায় তাকে সস্ত্রীক বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বার্তায় জানিয়েছেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। রেক্স টিলারসন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় মাহমুদ আলী আন্তরিক অভিনন্দন জানান। সেই সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সুবিধাজনক সময়ে সস্ত্রীক বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামীতে সুবিধাজনক সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ঢাকা সফর করতে পারেন বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই বিশ্বনেতাদের মধ্যে প্রথম যারা ট্রাম্পকে স্বাগত জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম ট্রাম্পকে অভিনন্দন বার্তা পাঠায়। সেই অভিনন্দন বার্তায় ট্রাম্পের নেতৃত্বগুণের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে তিনি আশা করছেন।
×