ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রেলের জমি দখল করে মাছ চাষ ॥ ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথ

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২৬ জুলাই ২০১৭

রেলের জমি দখল করে  মাছ চাষ ॥ ঝুঁকিপূর্ণ  রেলপথ

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ উলিপুরে এক ভূমিদস্যু রেলওয়ের পাঁচ একর জমি জবরদখল করে মৎস্য খামার তৈরি করেছে। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলনের ফলে রেলওয়ের পাইলিংয়ে ধস দেখা দেয়ায় ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জোনাইডাঙ্গা গ্রামের ফজলুল হক রেলওয়ের প্রায় পাঁচ একর জমি দখলে নিয়ে মৎস্য খামার গড়ে তুলেছে। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছে অনেকে। তার বিরুদ্ধে রেলের জমি অবৈধভাবে দখলের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সে ভূমি দখল টিকিয়ে রাখতে এলাকায় একটি বাহিনী গঠন করেছে, যার নাম দিয়েছে ফজলু বাহিনী। চলতি বছর ওই মৎস্য খামার থেকে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন করে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করেছে বলে এলাকার মানুষ জানিয়েছে। বালু উত্তোলনের ফলে পার্শ্ববর্তী আবাদি জমির মারাত্মক ক্ষতি ও ট্রেন চলাচল হুমকির মুখে পড়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় কার্যালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ওই ভূমিদস্যুকে সহায়তা করে তার কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে অবৈধ দখলদাররা রেলওয়ের দু’ধারের কিছু জমিতে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করে আসছে। ফলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রেলপথের দু’ধার ভেঙ্গে যাচ্ছে। এ কারণে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। উলিপুর উপজেলা রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সভাপতি আপন আলমগীর জানান, আনন্দবাজার থেকে রমনা রেলস্টেশন পর্যন্ত রেলওয়ের দু’ধারে যে জলমহালগুলো আছে তার পুরোটাই রেলের জায়গা। বর্তমান রেললাইনের দু’ধারে ২৫ থেকে ৬০ ফুট পর্যন্ত জমি রয়েছে। সেগুলো রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে লিজ নেয়ার নামে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দখল করে নিয়েছে। বারবার পাইলিং দেয়ার নামে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। ফজলুল হক রেলের জায়গা দখলের কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি রেলের জায়গা থেকে বালু উত্তোলনের কথা অস্বীকার করেন। তিনি নিজের জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করেছেন বলে জানান। রেলওয়ের বিভাগীয় জোন লালমনিরহাটের ব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম জানান, কিছু লোকের কুড়িগ্রাম-রমনা রেলস্টেশনের দু’ধারের জমি দখল করে বালু উত্তোলন ও মাছ চাষ করার বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অবৈধ দখলদার ও বালু উত্তোলনকারী ভূমিদস্যু ফজলুল হকের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
×