ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোন দুর্নীতি নয়

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৬ জুলাই ২০১৭

কোন দুর্নীতি নয়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে দেয়ার লক্ষ্যে আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা যে সিদ্ধান্ত নেই, সেটা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের ওপর বর্তায়। তাই আপনাদের আন্তরিকতা, কর্মদক্ষতা, যোগ্যতাই পারে এ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টে দিতে। কাজেই আপনারা সেভাবেই কাজ করবেন। আর সরকারী সেবা গ্রহণে মানুষ যাতে কোনভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাই একটি দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে পারে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তিনদিনব্যাপী ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনকালে শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে জনসচেনতা সৃষ্টি করতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, করাপশন (দুর্নীতি) দূর করতে হবে আমাদের। কারণ কোন কাজ করতে গেলে সেখানে যদি করাপশন হয়, আর সেটুকুই যদি খেয়ে ফেলে তাহলে আমার উন্নয়নের ছোঁয়াটা গ্রাম-বাংলায় বা কোথাও লাগবে না। কাজেই এ ব্যাপারে আপনাদের জনসচেতনতাও সৃষ্টি করতে হবে এবং নিজেদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। আর দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য, মানুষের ভাগ্য গড়ার জন্য কাজ করবে- এটাই যেন সবার লক্ষ্য হয়। তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক ও মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। জেলা প্রশাসকদের পক্ষে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক বেগম উম্মে সালমা তানজিয়া, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক আবদুস সবুর মন্ডল এবং যশোরের জেলা প্রশাসক মোঃ আশরাফ উদ্দিন এবং ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার জি এম সালেহ উদ্দিন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন মাঠ প্রশাসনের ৬৪ ডিসি এবং ৬ বিভাগীয় কমিশনার। সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানে ৪ বছর আগে এ ধরনের সম্মেলন আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়। এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে চতুর্থ ডিসি সম্মেলন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের সামনে ২৩ দফা নির্দেশনা তুলে ধরে বলেন, আমরা চাই দেশকে এগিয়ে নিতে এবং আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাই হচ্ছে একটি দেশকে উন্নত করতে পারে, সেই অভিজ্ঞতা ইতোমধ্যেই আমরা অর্জন করেছি। এই ৮ বছরে সরকারের ধারাবাহিকতা থাকায় বাংলাদেশের যে উন্নয়নের ধারাটা সূচিত হয়েছে, আজ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ একটা মর্যাদা পেয়েছে। দেশের উন্নয়নের সুফল জনগণ পাচ্ছে। দেশ স্বাধীন না হলে এটা কোন দিনও হতো না। ’৭৫ থেকে ’৯৬-এ দেশের মানুষ শুধু বঞ্চনারই শিকার হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার যে জনগণের সেবক সেটা তখনই মানুষ উপলব্ধি করতে পেরেছেÑ যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘এই বাংলার মাটি থেকে করাপশন উৎখাত করতে হবে। করাপশন আমার বাংলার কৃষক করে না। করাপশন আমার বাংলার মজদুর করে না। করাপশন করি আমরা শিক্ষিত সমাজ; যারা তাদের টাকা দিয়ে লেখাপড়া শিখেছে।’ তিনি বলেন, দেশকে ডিজিটালাইজড করতে তার সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তার ফলে দুর্নীতিও নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। এখন আর ওই টেন্ডারের বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা খুব বেশি শোনা যাচ্ছে না। ডিজিটালাইজড করার ক্ষেত্রে কয়েকটা মন্ত্রণালয় এখনও পিছিয়ে আছে। কিন্তু প্রতিটা ক্ষেত্রে আমরা ডিজিটালাইজড করে দেয়ার ফলে এখন অনেকটা স্বচ্ছতাও চলে এসেছে। কাজেই এটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট বাস্তবায়ন সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১২ সাল থেকে গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি আলাদা শাখা খোলা হয়েছে। এই ইউনিটের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবন করে সরকারী সেবা প্রদান পদ্ধতি সহজ করা। পাশাপাশি সরকারী কাজের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে বিশ্বায়ন এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের ফলে একদিকে মানুষের আচরণ এবং রুচিতে যেমন পরিবর্তন এসেছে, তেমনি মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক চিন্তাভাবনাসহ সবকিছু বদলে গেছে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সকল মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল নথি নম্বর ও ই-ফাইলিং চালু, সকল দফতরে দ্বিতীয় প্রজন্মের সিটিজেন চার্টার প্রবর্তন এবং এর আওতায় মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রত্যেক মন্ত্রণালয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী জাতি, তবে বঞ্চনার ইতিহাস ভুললে চলবে না। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে সবসময় মাথা উঁচু করে যেন চলতে পারি আপনারা সেভাবে কাজ করবেন এবং আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাই একটি দেশকে উন্নত করতে পারে। পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের তথাকথিত অভিযোগ এবং কানাডার একটি আদালতে এ অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট প্রমাণিত হওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যে সামর্থ্য আছে তা আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে প্রমাণ করছি- যা বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলা হয়। আপনাদের (জেলা প্রশাসক) কর্মপ্রয়াসের ফলে এই সুখ্যাতি অর্জন সম্ভব হয়েছে। গ্যাস বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় ২০০১ সালের নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনসমর্থন না থাকলে অনেক দেশই আসবে আমাদের নিয়ে খেলতে। কাজেই আমরা স্বাধীন দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারলে কেউ আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারবে না। পাশাপাশি উন্নয়ন করে উন্নত দেশে পরিণত হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, আমি আপনাদের যে নির্দেশনা দিচ্ছি তা আপনারা অধীনস্থদের কাছেও পৌঁছে দেবেন যে আমরা দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমরা এটা পারব। আমরা বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে চাই এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হবে ইনশাআল্লাহ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু কথায় নয় কাজে প্রমাণ করতে হবে যে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ। এখানে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না, থাকবে না কেউ অভুক্ত। প্রত্যেকের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছবে। কেউ নিরক্ষর থাকবে না। সংবিধানে বর্ণিত জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলো আমাদের পূরণ হবে। তিনি আবাসনের ব্যবস্থা করতে সব জেলায় গৃহহীনদের তালিকা তৈরি করতে ডিসিদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘খাস জমির বিষয়ে খোঁজ নিন। আমাদের সরকার সবাইকে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেবে। ২ লাখ ৮০ হাজার গৃহহীনের আবাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী ডিসিদের বলেন, ‘আপনারা গুচ্ছগ্রাম, আদর্শ গ্রাম, ও এ ধরনের প্রকল্প থেকে গৃহহীনদের আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেন।’ ২৩ দফা নির্দেশনা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকদের সামনে ২৩ দফা নির্দেশনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। নিদের্শনার মধ্যে রয়েছে- সরকারী সেবা গ্রহণে সাধারণ মানুষ যাতে কোনভাবেই হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে হবে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। মানুষ যেন শহরমুখী না হয়; শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে ব্রতী হতে হবে। ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্য কমাতে উন্নয়ন কর্মসূচী এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ উপকৃত হয়। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। নির্দেশনায় আরও রয়েছে- জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতার সঙ্গে এবং কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস নির্মূলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, গ্রামের মুরুব্বি, নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী, নারী সংগঠক, আনসার-ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ, এনজিও কর্মীসহ সমাজের সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সহজে সুবিচার প্রদান ও আদালতে মামলাজট কমাতে গ্রাম্য আদালতগুলোকে কার্যকর করতে হবে। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিকাশে নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে। শিক্ষার সর্বস্তরে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি এবং ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারী ভূমি রক্ষায় আরও সচেষ্ট হতে হবে। ২৩ দফা নির্দেশনায় আরও রয়েছে- কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার, বীজ, বিদ্যুত, জ্বালানি ইত্যাদির সরবরাহ করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থাপনাকে জনপ্রিয় করতে উদ্যোগী হতে হবে। ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করে এসব অনৈতিক কর্মকা- কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজির সফল বাস্তবায়নে মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় প্রশমনে সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশ রক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই সংক্রান্ত আইন ও বিধিবিধানের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। শিল্পাঞ্চলে শান্তিরক্ষা, পণ্য পরিবহন ও আমদানি-রফতানি নির্বিঘœ করা এবং পেশিশক্তি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি সন্ত্রাস নির্মূল করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোক্তা অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে এবং বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির যে কোন অপচেষ্টা কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। নারী উন্নয়ন নীতি সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ এবং নারী ও শিশু পাচার রোধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিনোদন ও সৃজনশীল সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে ইতিহাস চেতনা, জ্ঞানস্পৃহা ও বিজ্ঞানমনস্কতা জাগিয়ে তুলতে হবে। কঠোরভাবে মাদক ব্যবসা, মাদক চোরাচালান এবং এর অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ভূমি প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে সরকারী ভূমি রক্ষায় সজাগ থাকবে হবে। পার্বত্য জেলাসমূহের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ভূ-প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করতে হবে। পর্যটনশিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ও ঐতিহ্যবাহী কুটির শিল্পের বিকাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। এছাড়াও নিজ নিজ জেলার সমস্যা ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসকদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে উদ্ভাবনী কর্মসূচী প্রণয়ন করতেও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি। ডিসিদের জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কমিটি প্রধানের দায়িত্ব পালন করার কথা উল্লেখ করে মানুষের সেবা সহজ করতে এসব কমিটি যাতে আরও ‘সক্রিয়, গতিশীল ও ফলপ্রসূভাবে’ করে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়ারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
×