ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরায় পাসপোর্ট সেবাপ্রার্থীদের চকলেট উপহার

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ২৩ জুলাই ২০১৭

উত্তরায় পাসপোর্ট সেবাপ্রার্থীদের চকলেট উপহার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘শুনেছিলাম দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করা যায় না। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। পরিবেশ অনেক ভালো। কোন ঝামেলা ছাড়াই পাসপোর্টের ফরম জমা দিতে পেরেছি। ‌কাজ শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট একজন হাসিমুখে একটি চকলেটও উপহার দিলেন!’ উত্তরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিচতলায় দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন খন্দকার এম তামাসুল। শুধু তামাসুল নন, আজ রবিবার এই অফিসে পাসপোর্ট সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা অনেকেই পেয়েছেন এমন ‘উপহার’! ভোগান্তি ছাড়া সেবার সঙ্গে অমন ‘প্রতীকী উপহার’ পেয়ে খুশিই হয়েছেন সেবাপ্রার্থীরা। জানা গেল, জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস পালন উপলক্ষে অফিস কর্তৃপক্ষ ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নেয়। এদিন বাক্সভর্তি চকলেট নিয়ে জনসাধারণকে বিভিন্ন সেবা দিয়েছেন কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক থেকে শুরু করে প্রায় সবাই। তবে দিবসটিকে শুধু উপহার প্রদানেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি। এদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়েছে ‘বেল চাপুন’ সিস্টেম। বিশেষ এই সেবাটি পাবেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা দিয়ে কার্যালয়ের নিচতলায় লাগানো হয়েছে বিশেষ বেল। কার্যালয়ে ঢুকে যে কোন ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যাক্তি এই বেলে চাপ দিলে সংশিষ্ট কর্মকর্তা এসে হাজির হবেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রয়োজনীয় সেবাপূরণের ব্যবস্থাও তিনি করবেন। এ প্রসঙ্গে উত্তরা পাসপোর্ট কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক আজিজুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে কিছু দিন আগে চিঠির মাধ্যমে দেশের সব আঞ্চলিক পাসর্পোট অফিসে প্রতিবন্ধীদের জন্য এই বিশেষ সেবা চালুর নির্দেশনা দেয়া হয়। আমরা পাবলিক সার্ভিস দিবসেই এটি চালু করেছি। ভোগান্তি নয়, সাধারণ মানুষকে সেবা দেয়াই আমাদের কাজ। এটা বোঝাতেই আজ সবাইকে চকলেট উপহার দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, কার্যালয়ের ভেতরে দালালদের তৎপরতা বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের জনবলের অভাব রয়েছে। কার্যালয়ের নিজস্ব কর্মকর্তা ২১ জন। এছাড়া ৫ জন আনসার সদস্য ও চার জন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এখানে কাজ করছেন। তবে এই জনবল দিয়েই সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভাড়া ভবন ছেড়ে নিজস্ব ছয়তলা ভবনে এ কার্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। রবিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভবনটির প্রতি তলায় প্রতিটি বিভাগেই মানা হচ্ছে শৃঙ্খলা ও সারিবদ্ধতা। নেই কোনো ঠেলাঠেলি, হইহুল্লোড় কিংবা সারি ভেঙে সামনে যাওয়ার তাড়া। তৃতীয় তলায় পাসপোর্ট প্রদান অংশে গিয়ে দেখা যায় লোহার রেলিং তৈরি করা হয়েছে সেখানে। নারী-পুরুষের জন্য পৃথক সারি। চতুর্থ তলায় শৃঙ্খলার একই দৃশ্য। ছবি তোলার জন্য পৃথক দুটি লাইনে একজন করে ভেতরে যাচ্ছেন। আঙুলের ছাপ দিচ্ছেন আর ছবি তুলছেন। ভবনের প্রতিটি তলাতেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আছে টেলিভিশন দেখার সুবিধা, নামাজের জন্য কক্ষ। সেবাগ্রহীতা নারীদের জন্য কার্যালয়ের চতুর্থ তলায় আছে ‘ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ’। এ প্রসঙ্গে আজিজুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে, পাসপোর্ট অফিসগুলোর মধ্যে উত্তরাতেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার চালু আছে। পাসপোর্ট আবেদন জমা দেয়া ও সংশ্লিষ্ট কাজ করতে কিছুটা সময় লাগে। নারী সেবাগ্রহীতারা যাতে স্বচ্ছন্দে আবেদন সম্পন্ন করতে পারেন সেজন্য এটি চালু করা হয়েছে।
×