ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রিটেনে ছুরি হামলা বাড়ছে যে কারণে

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২৩ জুলাই ২০১৭

ব্রিটেনে ছুরি হামলা বাড়ছে যে কারণে

ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে এ বছর প্রায় প্রতি সপ্তাহেই একজন করে তরুণ ছুরির হামলায় নিহত হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান এ সহিংসতা বন্ধে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এখন উপায় খুঁজছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত লন্ডনে ২৭ জন ব্যক্তি ছুরি হামলায় নিহত হয়েছেন। যাদের বয়স ২৫ বছরেরও কম। কিশোরদের ছুরি হামলার স্মৃতি নিয়ে কাজ করা শিক্ষামূলক সংগঠন বেন কিনসেলা ট্রাস্টের প্যাট্রিক গ্রীন জানান, এটি যদিও ভীতিকর পরিসংখ্যান তবুও বড় কোন পরিস্থিতি বা সমস্যার লুকানো ছোট উপস্থিতি হচ্ছে এসব ছুরি হামলার ঘটনা। গত বছরের এপ্রিল থেকে এ বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত পুলিশ ১২ হাজার এক শ’র বেশি ছুরি হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। যাতে চার হাজার চার শ’ লোক আহত হয়েছে। যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিসখ্যান। গ্রীন বলেন, ছুরি হামলার শিকার অনেক লোক স্থায়ী অক্ষমতা, স্থায়ী শঙ্কা এবং সবচেয়ে ভয়াবহ অসামর্থ্যতা হচ্ছে মানসিক আতঙ্ক যা জানা সম্ভব হয় না। এই পরিস্থিতি হয়তো আপনি কাটিয়ে উঠছেন তবে এর মানে এই নয় যে আপনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাচ্ছেন। ব্যাপকভাবে অনুমান করা ধারণার বিপরীত হচ্ছে অধিকাংশ হামলার ঘটনাই ঘটছে অসঙ্গত সংগঠিত অপরাধ হিসেবে। প্রতি চারটি ঘটনার তিনটিতে যুক্ত ব্যক্তিরা ছুরি বহন করে। কেননা তারা বিশ্বাস করে এটি তাদেরকে নিরাপদ রাখবে। লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিশের সাবেক প্রধান বার্নার্ড হোগান হাউয়ি বলেন, এটি হয়ত তাদের স্বপ্রণোদিত চিন্তা হতে পারে যেসব তরুণরা ছুরি বহন করছে ও কোন ঘটনা ঘটাতে যাচ্ছে তাতে ছুরিটি যে কোন কাজে আসবে। স্কুলে মেটাল ডিটেক্টর নিষিদ্ধ ॥ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আম্বার রুড ঘোষণা করেন যে, তারা স্কুলে মেটাল ডিটেক্টর নিষিদ্ধ করতে চায়। এই পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে সরকার জনসম্মুখে ও স্কুলগুলোতে ছুরি নিষিদ্ধ করার চিন্তা করছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে ৭৯ লাখ ইউরোর এক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। যাতে স্কুলগুলোর ছুরি হামলার অপরাধ প্রতিরোধ করা যায়। গত মাসে সরকারের অনুদান কমানোর ঘোষণাকে মেয়র সমালোচনা করে বলেন, এজন্য ৩০টি যুব কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলেই তরুণরা অপরাধ জগতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যুব সেবাগুলোতে সঠিক অর্থায়ন করার মাধ্যমেই আমরা রাস্তার ছুরি অপরাধ কমাতে পারব। পুলিশ ছুরি হামলা কমানোর অভিযান পরিচালিত করছে। এরই অংশ হিসেবে তারা শত শত স্কুল পরিদর্শন করেছে। বিভিন্ন কুইজের মাধ্যমে অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারে। পুলিশের বরাদ্দ কমানো ॥ গত বছর পুলিশের বরাদ্দ ২৪ শতাংশ কমানো হয়েছে। যে কারণে ছুরি হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি পুলিশকে এজন্য অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ২০১০ সালে পুলিশের বরাদ্দ ১৪ শতাংশ কমানো হয়। পুলিশের জন্য বরাদ্দ কমিয়ে দেয়ায় তারা ঠিকমত কাজ করতে পারছে না। নতুন হামলা সম্পর্কে কোন তথ্য পাচ্ছে না। ফলে জরুরী সেবাগুলো ব্যাহত হচ্ছে বলে ভাল কিছু আশা করা যাচ্ছে না ও ছুরি হামলা বাড়ছে। -এএফপি
×