ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংবিধানের দোহাই না দিয়ে সমঝোতায় আসুন ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০১:২৪, ২২ জুলাই ২০১৭

সংবিধানের দোহাই না দিয়ে সমঝোতায় আসুন ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, সংবিধানের দোহাই না দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সঙ্কট এড়াতে সমঝোতায় আসুন। সংবিধানের কথা বলে সমঝোতার পথ এড়িয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে না। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১‘ আয়োজিত ‘সহায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর ভিত্তি করেই সংবিধানের বাইরে গিয়ে ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। সেটা করতে হয়েছিল কেন? রাজনৈতিক কারণে, সাংবিধানিক কারণে নয়। সংবিধানে এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তাই এখনও সংবিধানকে বড় করে দেখার কোনো উপায় নেই। কারণ, সংবিধান তো মানুষের জন্য, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। আর সংবিধানের কথা বলে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়াও সম্ববপর হবে না। সমঝোতার উপর ভিত্তি করেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে। সংবিধান সংশোধনের পর নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠনের সুযোগ নেই বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে মওদুদ বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। একাদশ জাতীয় সংসদ র্র্নিাচন নিয়েও বিএনপি দাবি করে আসছে, তবে তাতে গা নেই আওয়ামী লীগ নেতাদের। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায় করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে আন্দোলন করতে হবে। বিএনপি চেয়ারপার্সন পালিয়ে গেছেন বলে আওয়ামী লীগ নেতারা যে বক্তব্য দিচ্ছেন তার সমালোচনা করে মওদুদদ বলেন, খালেদা জিয়ার পালিয়ে যাওয়ার কোনো রেকর্ড নেই। ২০০৮ সালে তখনকার সেনা সমর্থিত সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে প্যারোলে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর জন্যও অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি আপস করেন নাই। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ সম্পর্কে মওদুদ বলেন, এতে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য কোনো রোডও নেই, ম্যাপও নেই। একদলীয় শাসন কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়, কীভাবে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনা যায়, সেই উদ্যোগই গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সকল রাজনৈতিক দলের জন্য সমান অধিকার দেওয়ার কোন কথা নেই। তাই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে না। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, দলের নেতা শাম্মূ আখতার, আশরাফ উদ্দিন বকুল, গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় পার্র্টি (কাজী জাফর) সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আহসান হাবিব লিংকন প্রমুখ।
×