ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করিমন, নসিমন, ভটভটি জয়পুরহাটের সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কেউ বিষয়টি খেয়াল করছে না

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২২ জুলাই ২০১৭

করিমন, নসিমন, ভটভটি জয়পুরহাটের সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কেউ বিষয়টি খেয়াল করছে না

তপন কুমার খাঁ, জয়পুরহাট থেকে ॥ শ্যালোইঞ্জিন চালিত অননুমোদিত করিমন, নসিমন, ভটভটি, বেবি টেক্সি, মেসি, শ্যালো মেশিন চালিত ভ্যান ও তাদের অদক্ষ চালকের দাপটে জয়পুরহাট জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের নেতিবাচক অবস্থানের কারণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না থাকার ফলে ও একশ্রেণীর ক্ষমতাবান শ্রমিকের বেপোরোয়া আচরণের কারণে এসব অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। জেলার প্রায় ১০টি অভ্যন্তরীণ রুটে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল করে পুলিশকে নিয়মিত মাসোহারা দেয় বলে অভিযোগ। জয়পুরহাটের যে রুটগুলোতে অবৈধ এ গাড়িগুলো চলাচল করে সেগুলো হলোÑ জয়পুরহাট-বগুড়া, জয়পুরহাট-শান্তাহার, জয়পুরহাট-মঙ্গলবাড়ি, জয়পুরহাট-পাঁচবিবি-হিলি, জয়পুরহাট-গোবিন্দগঞ্জ, পাঁচবিবি-গোবিন্দগঞ্জ, জয়পুরহাট-গোবরচাপা-নওগাঁ, জয়পুরহাট-মলামগাড়ি, আক্কেলপুর-বগুড়া, জয়পুরহাট-ক্ষেতলাল। ঝুঁকিপূর্ণ এই যানবাহনগুলো প্রশাসনের নাকের ডগায় এক শ্রেণীর ক্ষমতাবান পরিবহন ব্যবসায়ী এই পরিবহনগুলো সড়কে চালালেও তাদের বিরুদ্ধে কোনই ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ফলে প্রতিনিয়ত যেমন দুর্ঘটনা ঘটে তেমন সড়কগুলোতে যানযটের সৃষ্টি হয়। এই অবৈধ যানবাহনগুলোর সংখ্যা প্রায় সহস্রাধিক। বেবিটাক্সিগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রায় ১১ বছর পূর্বে চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ায় বিআরটিএ কর্তৃক রাজস্ব নেয়া বন্ধ থাকলেও পুলিশকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে দিতে হয় বলে তারা জানায়। শ্যালোইঞ্জিন চালিত এই বেবিটাক্সিগুলোতে ৮/১০ যাত্রী বহন করা হয়। যে কোন সময়ে এই বেবিটেক্সিগুলোতে আগুন লেগে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একেবারে নির্বিকার। শ্যালোইঞ্জিন চালিত বেবিটেক্সিগুলো প্রধানত জয়পুরহাট-পাঁচবিবি, জয়পুরহাট-মঙ্গলবাড়ী, নতুনহাট-জামালগঞ্জ, জয়পুরহাট-শিরট্টি, জয়পুরহাট-বটতলী, পাঁচবিবি-চানপাড়া, পাঁচবিবি-শালপাড়াহাট রুটে চলাচল করে। শ্যালোইঞ্জিন চালিত নসিমন, করিমনগুলোতে শনিবার আর মঙ্গলবার পাঁচবিবি ও জয়পুরহাট গরুর হাট থেকে যেভাবে গরু বোঝাই করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। একইভাবে জয়পুরহাটের বিভিন্ন সড়কে মানুষদেরও গরুর মতো বোঝায় করে এই নসিমন-করিমনে পরিবহন করা হয়। গত পাঁচ বছরে জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন সড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি, বেবিটেক্সি দুর্ঘটনায় প্রায় ৬০ জনের মৃত্যু ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে। কয়েক বছর আগে জয়পুরহাট-হিলি সড়কের বাসের সঙ্গে ইজি পাওয়ারের মুখোমুখি দুর্ঘটনায় ৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এর ফলে ওই সড়কে জয়পুরহাট হিলি পর্যন্ত সরাসরি বাস চলাচল এখনও বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও পরিবহন মালিকশ্রমিক গোষ্ঠী এই সড়কটি চলাচলে কোন সুরাহা করতে পারেনি। ফলে হিলি, ফুলবাড়ি, বিরামপুর, দিনাজপুরে ব্যবসায়ী ও যাত্রীদের সরাসরি যোগাযোগে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান শহরে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ায় এদের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই অভিযান শুরু করা হবে।
×