এটা কেমন হয়! যদি আপনার ভ্রমণটা আকাশপথের মতো দ্রুত গতির, প্রাইভেটকারে চড়ে অত্যাধুনিক বিলাস বহুল হোটেলের সব সুবিধাসম্পন্ন পরিবহন ব্যবস্থার অংশ হয়! আর হ্যাঁ, সেটাই হচ্ছে ব্রানডন সাইব্রিচ এর ‘হাইপার লুপ হোটেলের’ নেপথ্য -যেটাকে মনে করা হচ্ছে একবিংশ শতাব্দীর ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য বিলাস বহুল ভ্রমণ চাহিদার সমাধান।
ব্রানডন সাইব্রিচ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের লাসভেগাজ অঙ্গরাজ্যের নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করা একজন স্থপতি প্রকৌশলী। ইতোমধ্যে যিনি অর্জন করেছেন বর্ষসেরা ‘র্যাডিক্যাল ইনোভেসন এ্যাওয়ার্ড।’ এই পুরস্কার দেয়া হয় ভবিষ্যতের কাল্পনিক হোটেলের নক্সাকারদের উৎসাহিত করার জন্য। সাইব্রিচের হোটেল নক্সার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো একত্রে অনেক কক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের সব জায়গায় ‘হাইপার লুপ’ থিওরির সাহায্যে চাপ সংকোচিত পাইপের মধ্য দিয়ে বহন করা যাবে।
‘হাইপার লুপ’ থিওরির মূল পরিকল্পনাবিদ হচ্ছে ইলন মাসকের সিইও টেসলা, যিনি ২০১৩ সালে প্রথম এমন একটা ধারণার উপর প্রকাশনা বের করেন। এই থিওরির উদ্দেশ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী স্টিলের পাইপ তৈরি করে তার ভেতর দিয়ে পরিবহন ব্যবস্থা করা যার গতি হবে আনুমানিক ঘণ্টায় ৩০০ কিমি.।
‘পরিবহনে ব্রডব্যান্ড’ হচ্ছে হাইপার লুপের মূলমন্ত্র। হোটেল ব্যবসায় বিশ্বয়কর পরিবর্তন আনতে এবং ভ্রমণ পিপাসুদের অভিজ্ঞতা আরও এত ধাপ এগিয়ে নিতে হাইপার লুপ হোটেল ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করবে। ভ্রমণ পিপাসুদের আর আলাদা করে টিকেট কাটা বা থাকার জন্য হোটেল বুকিং করা লাগবে না। বরং হোটেলটাই দ্রুতগতিতে তাকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। সাইব্রিচের আশা এটা এশিয়া এবং ইউরোপেও একইভাবে বিস্তার করা সম্ভব।
রেডিক্যাল ইনোভেশন এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের বিচারকদের চিন্তা ভাবনাকে তাক লাগিয়ে দেন সাইব্রিচের এই ‘হাইপার লুপ’ হোটেলের নক্সা। সাইব্রিচের মতে আমাদের বসবাসের সাধারণ ধারণাকেই পাল্টে দেবে এই হাইপার লুপ হোটেলের ধারণা। র্যাডিক্যাল ইনোভেশন গ্রুপ এই ধরনের নতুন আবিষ্কারকে বাস্তবতায় রূপ দেয়ার সমস্ত সাহায্য করে থাকে।
সাইব্রিচ এই হোটেল তৈরি করতে ব্যবহার করতে চান জাহাজের বড় বড় কন্টেনার যার মধ্যে তিনি সংযোজন করবেন সব ধরনের বিলাস বহুল জিনিসপত্র। সাইব্রিচ জানান প্রতিটা হোটেল বানাতে খরচ হবে ১০ মিলিয়ন ডলার। র্যাডিক্যাল ইনোভেশন টিম ইতোমধ্যে তাকে ১০ হাজার ডলার দিয়েছে যাতে করে সে তার এই ধারণাকে আরও এগিয়ে নিতে পারে।
‘হাইপার লুপ’ পদ্ধতি এখনও ভূমিষ্ট হয় নাই যদিও আশা করা যায় তা ২০২০ সালের মধ্যে শুরু হবে। এ কথা জানান সাইব্রিচ। তিনি আরও বলেন এ বিষয়ে তিনি হাইপার লুপের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করা যায় হাইপার লুপ হোটেল খুব শীঘ্রই বাস্তবতার মুখ দেখবে। এই পরিকল্পনা একেবারেই বাস্তব সম্মত যেহেতু নেভেদায় সাইব্রিচ নিজ এলাকায় এটা বাস্তবায়ন করেছেন। তার বিশ্বাস হাইপার লুপ হবে ভবিষ্যত প্রজন্মের ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী পরিবহন ব্যবস্থার যুগান্তকারী আবিষ্কার।
শীর্ষ সংবাদ: